গৌরনদী
করোনা ভয়ে মাকে ঘরের বাইরে রাখা ও নির্যাতনের ঘটনায় মামলা দায়ের, পুত্রবধূ গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশালের আগৈলঝাড়ার উপজেলার বারপাইকা গ্রামে করোনা ভয়ে মায়ের শরীরে ভাইরাসের জীবাণু থাকার আশঙ্কায় শ্বাশুড়ীকে ঘর থেকে বের করে দেয় ছেলে জগদীস ব্যাপারী ও পুত্রবধূ শিখা রানী । ক্ষুধার্ত মা গেনোদা ব্যাপারী ছেলের বৌর কাছে খাবার চাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে সোমবার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী মিলে বৃদ্ধা গেনোদা ব্যাপারীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে । মঙ্গলবার রাতে পুলিশ নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ওই রাতেই মামলার এজাহারভূক্ত আসামি পুত্রবধূ শিখা রানীকে গ্রেপ্তার করেছে। ছেলে পলাতক
স্থানীয় লোকজন, গ্রামবাসি ও বৃদ্ধার স্বজনরা জানান, আগৈলঝাড়ার উপজেলার বারপাইকা গ্রামের সুর্য্য কান্ত বেপারীর স্ত্রী গেনোদা ব্যাপারী (৯৫) স্বামীর মৃত্যুর পরে ছেলে জগদীশ ব্যাপারী (৪০) ও পুত্রবধূ শিখা রানীর (৩৫) কাছে থাকতেন। বৃদ্ধা গেনেদা ব্যাপারীর বয়সের কারনে হাছি কাশি থাকায় শরীরে করোনা ভাইরাসের জীবাণু থাকার আশঙ্কায় গত দুই মাস ধরে করোনা আতঙ্কে ছেলে ও ছেলের স্ত্রী তাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে বাড়ির সামনে বারপাইক্কা মন্দিরের বারান্দায় থাকতে দেন। এ সময় বৃদ্ধাকে ঠিকমত খাবার না দেয়া ও পরিচর্চার অভাবে বৃদ্ধা অনেকটাই অসুস্থ্য হয়ে পরেন। সোমবার বিকেলে ক্ষুধায় কারনে বৃদ্ধা গেনেদা ব্যাপারী ছেলের বৌর কাছে খাবার চান। খাবার না দিয়ে তাকে বেদমভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে চিকিৎসা না নিয়ে ফেলে রাখে।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খাবার ও ঔষাধ কিনে দিয়ে আমি তাকে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বর প্রফুল্লা কুমারের বাড়িতে রেখে আসি। মঙ্গলবার রাতে বৃদ্ধার অবস্থার অবনতি মহলে ওই রাতেই বৃদ্ধা গ্যানোদা ব্যোপারীকে পুনরায় আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছি। এ ঘটনায় গ্যানোদা ব্যোপারী নাতি চন্দন সরকার বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ রাতেই অভিযান চালিয়ে বৃদ্ধার পুত্রবধূ শিখা রানীকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে গতকাল বুধবার আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠিয়েছে। ছেলে পলাতক রয়েছে।