গৌরনদী
করোনা প্রতিরোধের প্রথম সুযোগ হাতছাড়া, দ্বিতীয় সুযোগ যেন হাত ছাড়া না হয়
সিনিয়র সাংবাদিক জহুরুল ইসলাম জহিরের আইডি থেকে নেওয়া ঃ করোনা ভাইরাসের সংক্রমন কিঝুতেই রাস টানা যাচ্ছে না। বড় হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই সংক্রমন ঠেকাতে প্রথম সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশ যে ‘তথাকথিত” লক ডাউন বা অবরুদ্ধ অবস্থার পথে হাটছে, তাতে কিছু সময় হাতে পাওয়া যাবে। কিন্তু সংক্রমন পুরোপুরি ঠেকানো যাবে না। এই পরিস্থিতিতে নতুন আরেকটি সুযোগ কাজে লাগাতে সংস্থাটি রোগ সনাক্তকরন জোরদার করাসহ ছয়টি পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা লক ডাউনের পদক্ষেপ গ্রহন দেশগুলোকে আহবান জানিয়ে বলেছেন, লক ডাউনের যে সময় পাওয়া যাচ্ছে, তা ভাইরাস রুখতে কাজে লাগান। প্রথম সুযোগ হাত ছাড়া হওয়ার পরে দ্বিতীয় সুযোগ হিসেবে তারা (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) ৬টি পরামর্শ দিয়েছেন।
পরামর্শগুলো হল, ১/ স্বাস্থ্য সেবা ও জনস্বাস্থ্যে জনবল বাড়ানো ও প্রশিক্ষন ২/ প্রতিটি সন্দেহভাজন রোগী শনাক্তে কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়ন ৩/ পরীক্ষার সরঞ্জাম উৎপাদন, সক্ষমতা ও সহজলভ্যতা বাড়ানো ৪/ আইসোলেশন ও চিকিৎসার জায়গা চিহ্নিত করা ও পর্যপ্ত প্রয়োজনীয় উপকরন নিশ্চিত করন ৫/ রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টিনে রাখা ৬/ সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে ও দমনে সরকারের পুরো ব্যবস্থার পুনঃ মনোযোগী হওয়া। (তথ্য সূত্র আজকের দৈনিক প্রথম আলো)
প্রিয় বন্ধুরা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা লক ডাউনের সময়টা ভাইরাস রুখতে কাজে লাগাতে বলেছে। ইতিপূর্বে আমার লেখাগুলোতে আমি সরকারি নির্দেশনা ও হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার উপর জোর দিয়ে তা মানতে বার বার অনুরোধ করেছি। শুধু আমি নই, সরকার, দেশের সকল মিডিয়া, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, কর্মী, প্রশাসন ও সচেতন প্রতিটি নাগরিক দেশবাসির কাছে এইটুকুই চেয়েছিল। আমরা কিন্তু পুরোপুরি তা দিতে ব্যার্থ হয়েছি। অথচ দেশের একজন দেশ প্রেমিক নাগরিকি হিসেবে ওই চাওয়াটুকু দেওয়া আমার সহজ সুযোগ ছিল। কিন্তু আমরা দিতে পারিনি। দ্বিতীয় সুযোগ হিসেবে স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া ৬ পরামর্শের প্রায় সব কটি পরামর্শ বাস্তবায়নে সরকারের ভুমিকা বেশী। তা বাস্তবায়ন করতে সরকারকেই পদক্ষেপ নিতে হবে। ২নং পরামর্শে বলা হয়েছে প্রতিটি সন্দেহভাজন রোগী শনাক্তে কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়ন। এই জায়গাটাই মনে হয় আমরা অনেকটা পিছিয়ে আছি। কারন এখনো আমরা প্রয়োজনীয় জায়গা গুলোতে এখনোও পরীক্ষাগার বা ল্যাব স্থাপন করতে পারিনি। তাই সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ অতিদ্রæত সময়ে সর্বত্র ল্যাব স্থাপন করা হোক। এখনো মানুষ নিজের সন্দেহ থেকে ইচ্ছা করলেই পরীক্ষা করানোর সুযোগ নেই। এই সুযোগটি অবাধ করতে হবে। করোনা সনাক্তকরনে ব্যর্থ হলে এর ভয়াবহতা বাড়তে পারে। একজন মিডিয়া কর্মী হিসেবে অনেকেই নিজের সন্দেহ থেকে পরীক্ষা করার সুযোগ সম্পর্কে আমার কাছে জানতে চান। তাদেরকে আমরা হট লাইনে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেই বা অনুরোধ করি। কিন্তু ওই পরামর্ম নিয়ে ফোন দিয়ে অনেকেই সারা পান না। এ দিকটায় সরকার বাহাদুর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় একটু নজর দিবেন। একজন সাধারন নাগরিক হিসেবে ৫নং পরামর্শটা বাস্তবায়নে আমরা কিন্তু পুরোপুরি ভুমিকা এখনো রাখতে পারি। তা হল, রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে কোয়ারেন্টিনে রাখা। এই কাজ যথাযথভাবে বাস্তবায়নে সকলের প্রতি আমার অনুরোধ রইল। ৬নং পরামর্শের প্রতি আমরা আনুগত্য প্রকাশ করে, সংক্রমন নিয়ন্ত্রনে ও দমনে সরকারের পুরো ব্যবস্থার পুনঃ মনোযোগী হয়ে সরকারের নির্দেশনা আমরা অনুসরন করবো এটাই প্রত্যশা। মনে রাখবেন আপনার আমার সচেতনতা ও সকলের যৌথ প্রচেষ্টাই মহামারি করোনা ভাইরাসের ব্যাপক ক্ষতি থেকে আমদের ও দেশকে রক্ষা করতে পারে। সর্বোপরি আমরা সকলেই স্ব স্ব ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলবো এবং নিজের ধর্মীয় রীতি অনুসারে করোনা থেকে মুক্তির প্রার্থনা করবো। মহান আল্লাহ মহামারি করোনা ভাইরাস থেকে আমাদের দেশের প্রতিটি মানুষকে হেফাজাতি দান করুন। আমিন।