গৌরনদী
গৌরনদীতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের গুজব
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ চীন থেকে করোনা ভাইরাস অক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়ি বরিশালের গৌরনদীতে অবস্থান করেছেন এক মেডিকেল ছাত্র। রোববার রাতে এলাকায় এ গুজব ছড়িয়ে পরলে গ্রামবাসি আতঙ্কিত হয়ে পরে।
চীন ফেরত বাংলাদেশী ছাত্র, পরিবারের লোকজন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর পালরদী গ্রামের মোঃ জালাল সিকদারে ছেলে মোঃ হেলাল সিকদার ডাক্তারী পড়া শোনার জন্য ২০১৫ সালে চীনে যান। সেখানের শাংহাই শহরে একটি মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করে আসছিল। চীনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শুরু হলে সে গত ৩১ ডিসেম্বর রওয়ানা হয়ে শনিবার বাড়িতে পৌছেন। মোঃ হেলাল সিকদার জানান, করোনা ভাইরাসের শরীরে থাকলে ১০ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে আক্রান্ত হয়। বিষয়টি মাথায় রেখে চীনে তাকে ১৪ দিন পৃথক রেখে শরীরে ভাইরাস না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাকে বাংলাদেশে ফেরার অনুমতি দেন। তবে সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল বাড়িতে ফিরে ১৪ যেন সে পৃথক থাকেন। হেলাল বলেন, আমি বাড়িতে পৌছে নিজের ও পরিবারে সদস্যদের নিরাপত্তার কথা ভেবে পৃথক থাকা শুরু করি। রোববার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন ব্যক্তি মিথ্যাচার ছড়ায় যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী বাড়িতে আসায় পরিবারের লোকজন ঘরছেড়ে পালিয়েছে। এতে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক জড়িয়ে পরে। কিছু পত্রিকার অনলাইন ও বেসরকারি চ্যানেলে মিথ্যাচার ছড়ায়। এতে আমি ও আমার পরিবারে সদস্যরা বিব্রত অবস্থায় পরি এবং মানুষিকভাবে ভেঙ্গে পরি।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ছায়্যিদ মু আমরুল্লাহ বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর গুজব ছড়িয়ে পরলে আমিসহ চার সদস্যের একটি মেডিকেল টিম গতকাল সোমবার সকালে ওই বাড়িতে যাই। সেখানে তাৎক্ষনিকভাবে আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করি এবং তার সঙ্গে কথা বলি। হেলাল সিকাদার একজন মেডিকেল ছাত্র হিসেবে খুবই স্বাস্থ্য সচেতন। চীনে তার পরীক্ষার পরে করোনা ভাইরাসমুক্ত সনদ নিয়েই দেশে ফিরছেন। শ্রীলংকা ও বাংলাদেশে বীমান বন্দরে তাকে স্কানারসহ ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় এবং সে করোনা ভাইরাসমুক্ত। পরীক্ষার নিরীক্ষার পরেও আসার পথে পথিমথ্যে কোন সমস্যা হতে পারে সেই সচেতনতা থেকেই হেলাল বাড়িতে আইসোলেটেড থাকার সিদ্বান্ত নেন কিন্তু করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের গুজব ছড়িয়ে পরায় সে মানুষিকভাবে বিপর্যস্থ হয়ে পরে। হেলাল সিকদার করোনা ভাইরাসমুক্ত। তারপরেও সার্বক্ষনিকভাবে তাকে মনিটরিং করা হচ্ছে। গুজবে কান না দেওয়ার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহবান জানান। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান জানান, বরিশাল জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। বরিশাল জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ তার শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষারসহ গভীর পর্যবেক্ষনে রেখেছে।