গৌরনদী
গৌরনদীতে স্বামীকে বেধড়ক কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে দ্বিতীয় স্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের দাম্পত্য কলহের জের ধরে স্বামী মোঃ জহের জাহান ফকিরকে (২৭) দ্বিতীয় স্ত্রী বিউটি খানম বেধড়কভাবে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বামী মোঃ জহেরকে শনিবার বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন, আহতের স্বজনরা জানান, গত ৫ বছর পূর্বে গৌরনদী উপজেলার বড়দুলালী গ্রামের সিদ্দিক ফকিরের ছেলে জহের জাহান ফকির একই গ্রামের নুরুল ইসলাম সরদারের কন্যা লাইজু খানমকে বিয়ে করে। তাদের সংসারে এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। গত বছর প্রথম স্ত্রী লাইজু খানমের বড় বোন বিবাহিতা বিউটি খাননের সঙ্গে জহের জাহান ফকিরের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে বিউটি খানম তার স্বামীকে তালাক দিয়ে ছোট ভগ্নিপতি জহের জাহানকে বিয়ে করেন। লাইজু খানম অভিযোগ করেন, স্বামী জহের জাহান তার বড় বোনের সংসার ভেঙ্গে বিউটিকে দ্বিতীয় বিয়ে করে স্ত্রী হিসেবে ঘরে তুলে। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। ঝগড়াঝাটির এক পর্যায়ে এক মাস পূর্বে স্বামী জহের জাহান দ্বিতীয় স্ত্রী বিউটিকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন।
আহত জহের জাহানের বাবা সিদ্দিক ফকির অভিযোগ করে বলেন, দাম্পত্য কলহের জের ধরে ছেলের দুই স্ত্রী দুই বাড়িতে অবস্থান করছিল। শুক্রবার রাতে দ্বিতীয় স্ত্রী বিউটি খবর দিয়ে ছেলে জাহাননকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িতে যাওয়ার পরে দ্বিতীয় স্ত্রী বিউটি তার বাবা নুরুল ইসলাম, ভাই ছত্তার সরদারসহ ৫/৬ জনে শ্বশুর বাড়িতে ঘুমানো অবস্থায় ছেলে জহের জাহানের ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে দ্বিতীয় স্ত্রী বিউটি ধারাল অস্ত্র নিয়ে জাহেনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে। ছেলের ডাক চিৎকারে বাড়ির লোকজন গুরুতর অবস্থায় জাহেনকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি ঘটলে গতকাল রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে দ্বিতীয় স্ত্রী বিউটি খানমকে ফোন দিলে তা ধরেননি। তবে বিউটির বড় ভাই আব্দুস ছত্তার সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জহের জাহানের ওপর হামলায় আমরা কেউই জড়িত নাই। ছোট বোন লাইজুকে বিয়ের পর থেকে ভগ্নিপতি জহের জাহান প্রায়ই নির্যাতন করত। বড় বোনকে দ্বিতীয় বিয়ে করে নির্যাতন শুরু করলে আমার মা-বাবা প্রতিবাদ করলে তাদের লাঞ্ছিত করে। এক পর্যায়ে আমার বাবার ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও মালামাল লুæটপাট করে জহের জাহান। বিষয়টি দেখার পরে বোন বিউটি প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গে স্বামী জহের জাহানের ঝগড়াঝাটির মধ্যে কোপাকুপির ঘটনা ঘটেছে। কুপিয়ে জখম করার ঘটনা শোনার পরে আমরা বরিশাল শেবাচিম হাসপতালে জহের জাহানকে দেখতে গিয়েছি। আহত জহের জাহানের বাবা সিদ্দিক ফকির বলেন, ছেলের অবস্থা খুবই খারাপ তার চিকিৎসা নিয়ে আমরা ব্যস্থ আছি। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মাহাবুবুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে এখনো আমাদের কাছে কেই লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।