গৌরনদী
যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে জখমের ঘটনায় মামলা \ স্বামী গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার গরঙ্গল গ্রামে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখমের ঘটনায় নির্যাতিতা গৃহবধু রুনা বেগম (২৩) বাদি হয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িসহ ৪ জনকে আসামি করে গৌরনদী মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ সোমবার অভিযান চালিয়ে মামলার এজাহারভূক্ত প্রধান আসামি স্বামী গোলাম মাওলাকে (৩০) গ্রেপ্তার করে বরিশাল অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালতের বিচারক তাকে বরিশাল কেন্দ্রীয় করাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ কামরুজ্জামান জানান, গত ৪ বছর পূর্বে উপজেলার গরঙ্গল গ্রামের আলাউদ্দিন আকনের ছেলে গোলাম মাওলা (৩০) একই উপজেলার আশোকাঠি গ্রামের আব্দুল আলী সরদারের মেয়ে রুনা বেগমকে সামাজিকভাবে বিয়ে করেন। বিয়ের পরে এক বছর না যেতেই ব্যবসা করার জন্য রুনার বাবার কাছ থেকে ১ লাখ টাকা ও মোটর সাইকেল কেনার সময় নগদ ২০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন। স্ত্রী রুনা বাবার বাড়ি থেকে দাবিকৃত ওই এক লাখ ২০ হাজার টাকা এনে দেন। পরবর্তীতে সম্প্রতি সময়ে পুনরায় এক লাখ টাকা করলে স্ত্রী রুনা বেগম টাকা আনতে অস্বীকার করে।
নির্যাতিতা গৃহবধু রুনা বেগম অভিযোগ করে বলেন, দাবিকৃত টাকা এনে দিতে অস্বীকার করায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী, শ্বশুর ও ঘরের লোকজনে প্রায়ই আমাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। গত ২ ডিসেম্বর সকালে টাকার জন্য আমাকে চাপ দিলে আমি টাকা আনতে অস্বীকার করলে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনে আমাকে বেদমভাবে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। এলাকার লোকজন আমার বাবার বাড়িতে খবর দিলে স্বজনরা এসে আমাকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।
অভিযোগের ব্যপারে জানতে চাইলে গোলাম মাওলা যৌতুক দাবি ও নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পারিবারিক সমস্যা নিয়ে ঝগড়াঝাটি হয়েছে কিন্তু মারধরের কথা ঠিক না। গৌরনদী মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ মাহাবুবুর রহমান জানান, নির্যাতিতা রুনা বেগম বাদি হয়ে স্বামী গোলাম মাওলা, শ্বশুর আলাউদ্দিন আকন, শাশুড়ি জাহানারা বেগম, ননদ নুপুর বেগমের নাম উল্লেখ করে সেমাবার গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি গোলাম মাওলাকে (৩০) গ্রেপ্তার করে সোমবার দুপুরে বরিশাল অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করে। আদালতের বিচারক গ্রেপ্তারকৃত স্বামীকে বরিশাল কেন্দ্রীয় করাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।