বরিশাল
উজিরপুরে ভোটে নির্বাচিতদের বাদ দিয়ে ওয়ার্ড কমিটি ঘোষনার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালে উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটি গঠনে দলের ত্যাগী নির্যাতিত ও ভোটে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে বাদ দিয়ে অনিয়ম ও দূর্নীতির মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারীদের ওয়ার্ড কমিটিতে পদ-পদবী দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচিতদের বাদ দেয়ার প্রতিবাদে মঙ্গলবার হারতা ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের একাংশ হারতা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল প্রতিবাদ সমাবেশ করে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ ওয়ার্ড কমিটি গঠনে কাউন্সিলে ভোটারদের দ্বারা নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারন সম্পাদককে নাম ঘোষনা করা হয়। পরবর্তিতে তা বদল করে অনির্বাচিত অনুপ্রবেশকারীদের নাম অর্ন্তভূক্ত করে কমিটি পুনঃ ঘোষনা করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে কমিটি বাতিলে জন্য দাবি জানান।
হারতা বাজারে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে পদবঞ্চিতরা অভিযোগ করে বলেন, হারতা ইউনিয়নের ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত হারতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক অমল মল্লিক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হরেন রায়। তারা ওয়ার্ড কমিটি গঠনে চরম অনিয়ম ও দূর্নীতি করেছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলে সরাসরি কণ্ঠ ভোট গ্রহন করা হয়। কণ্ঠ ভোটে যারা সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন তাদের প্রকাশ্যে নাম ঘোষনা হয়। পরবর্তিতে কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা অনিয়ম ও দূর্নীতি করে নির্বাচিতদের বাদ দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ওয়ার্ড কমিটিতে পদ-পদবী দিয়ে কমিটি পুনঃ ঘোষনা করেন। তারা কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অমান্য করে ষরযন্ত্রের মাধ্যমে দলের ত্যাগী নির্যাতিতদের বাদ দিয়েছেন।
হারতা ৩নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা খগেন্দ্র নাথ বিশ্বাস অভিযোগ করে বলেন, ওয়ার্ড কমিটি গঠনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাউন্সিলে ভোটারদের কন্ঠ ভোট গ্রহন করেন। কন্ঠ ভোটের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ৩নং ওয়ার্ডে ভোটে আমি সভাপতি নির্বাচিত হই। সেখানে আমাকে সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষনা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে লিখিত কমিটি ঘোষনা করা হলে সেখানে সভাপতি পদে আমার নাম বাদ দিয়ে বাসু বিশ্বাসকে সভাপতি হিসেবে নাম ঘোষনা করা হয়। একই অভিযোগ করে ২নং ওয়ার্ডের উত্তম বাড়ৈ বলেন, কাউন্সিলে কন্ঠ ভোটে আমি সভাপতি নির্বাচিত হই সেখানে নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে আমার নাম ঘোষনা করা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে প্রফুল্ল রায়কে সভাপতি ঘোষনা করা হয়। ৪নং ওয়ার্ডে সুশীল বড়াল অভিযোগ করে বলেন, ভোটে আমি সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হই কিন্তু পরবর্তিতে অমার নাম বাদ দিয়ে কাউন্সিলের যার কোন প্রস্তাবক সমর্থক ছিলে না সেই বিশ্বনাথ বিশ্বাসকে সাধারন সম্পাদক ঘোষনা করা হয়েছে। একই অভিযোগ করেন, দেবদুলাল মন্ডল, সেবক চন্দ্র বিশ্বাস, নিখিল বড়াল, মিন্টু বিশ্বাস, ভবতোষ হালদার, জয়ন্ত বিশ্বাস, ক্ষিতিশ বিশ্বাস, অমল বিশ্বাস।
তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, কমিটি করার দায়িত্বপ্রাপ্ত হারতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস, সাধারন সম্পাদক অমল মল্লিক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হরেন রায় ওয়ার্ডের প্রতিটি কাউন্সিলে কন্ঠ ভোট গ্রহন করে নির্বাচিত সভাপতি সম্পাদকের নাম ঘোষনার পরে নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের সমর্থকরা আনন্দ মিছিলের আয়োজন করেন কিন্তু গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) হঠাৎ করে নির্বাচিতদের বাদ দিয়ে ৯টি ওয়ার্ডে নিজেদের পছন্দের লোক দিয়ে পাতানো কমিটি ঘোষনা করেন। আমরা ঘোষিত কমিটি বাতিলের দাবি জানাই।
হারতা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সুনীল কুমার বিশ্বাস ও সাধারন সম্পাদক অমল মল্লিক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, দলকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে যাদেরকে প্রয়োজন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তাদের দিয়ে কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। কন্ঠভোটে র্নিাচিতদের বাদ দেয়ার বিষয়টি তারা এরিয়ে যান। কন্ঠভোটে নির্বাচিতদের বাদ দেয়ার কথা স্বীকার করে হারতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হরেন রায় বলেন, অনেকের সমর্থন বেশী ছিল কিন্তু সভাপতি সাধারন সম্পাদক হওয়ার যোগ্যতা ছিল না। দলের বৃহত্তর স্বার্থে সন্ত্রাসী, দূর্নীতিবাজ মুক্ত যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় উপজেলা নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি ঘোষনা করা হয়েছে। উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আঃ মজিদ সিকদার এ প্রসঙ্গে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনের সমন্বয়কারীরা আলাপ আলোচনার ভিত্তিতে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক হিসেবে ঘোষনা করেছে।