বরিশাল
উজিরপুরে ছাত্রীকে অপহরনে শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা, স্বামীর দাবিতে কলেজ ছাত্রীর অনশন
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেনির ছাত্রীকে (১৩) গত বৃহস্পতিবার অপহরন করেছে এক স্কুল শিক্ষক । এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে শুক্রবার উজিরপুর মডেল থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেছে। শনিবার পুলিশ অপহৃতাকে উদ্ধার ও অপহরনকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। এদিকে স্বামীর দাবিতে ওই স্কুল শিক্ষকের বাড়িত গতকাল রোববার অনশন শুরু করেছে এক কলেজ ছাত্রী (২১)।
এজাহার, অপহৃতার পরিবার ও পুলিশ জানান, উজিরপুর উপজেলার রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৩) বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করে আসছিল উজিরপুর উপজেলার কালবিলা গ্রামের, সাতলা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রজেন্দ্র নাথ মল্লিকের ছেলে একই উপজেলার শোলক ইউনিয়নের কচুয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তপন মল্লিক (৩১)। বৃহস্পতিবার স্কুল ছুটির পরে ছাত্রী স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কালবিলা নামক স্থানে পৌছলে ধারাল অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে তপন মল্লিক স্কুল ছাত্রীকে অপহরন করে নিয়ে যায়। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, স্কুল ছাত্রী অপহরনের ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদি হয়ে শুক্রবার সকালে থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ শনিবার গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া সদর থেকে অপহৃতাকে উদ্ধার ও অপহরনকারী তপন মল্লিককে গ্রেপ্তার করেছে। স্কুল ছাত্রীর ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল ওয়ান ষ্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে এবং গ্রেপ্তারকৃত আসামি তপন মল্লিককে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় করাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের পীরেরপাড় গ্রামের বিধান সমদ্দারের মেয়ে কলেজ ছাত্রী যুথিকা সমদ্দার (২১) গতকাল শুক্রবার থেকে ওই স্কুল শিক্ষকের (তপন স্কুল শিক্ষক মল্লিকের বাড়িতে) কালবিলা গ্রামস্থ বাড়িতে অবস্থান নিয়ে স্ত্রীর দাবীতে অনশন শুরু করেছে। হারতা ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য শান্তনা মল্লিক জানান, স্বামীর স্বীকৃতি দাবি ও স্বামীর ঘরে উঠার দাবিতে গত দুই দিন ধরে তপন মল্লিকের বাড়িতে অনশন করেছে এক কলেজ ছাত্রী। কলেজ ছাত্রী জানান, প্রায় ৩ বছর পূর্বে স্কুল শিক্ষক তপন মল্লিকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরবর্তিতে তাদের মধ্যে প্রেমর সম্পর্ক গড়ে উঠে। চলতি বছরের ২ মার্চ তপন মল্লিক তাকে বরিশাল চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হলফনামা দিয়ে বিয়ে করেন। বিয়েতে উভয় পরিবারের একাধিক আত্মীয়স্বজন উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের পর থেকে উভয়ের মধ্যে স্বামী স্ত্রী সম্পর্ক অব্যহত থাকে কিন্তু কিছুদিন ধরে তপন মল্লিক তার সঙ্গে সম্পূর্নভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষন ও কলেজ ছাত্রীর অভিযোগ সম্পর্কে স্কুল শিক্ষক তপন মল্লিকের বাবা সাতলা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ব্রজেন্দ্র নাথ মল্লিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষনের মামলা দায়ের ও গ্রেপ্তারের কথা আমি শুনেছি। কলেজ ছাত্রীর অনশন সম্পর্কে জানতে চাইলে এ বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি। এ প্রসঙ্গে ওসি বলেন, এ বিষয়ে কোন লিখিত াভিযোগ পাইনি।
এলাকাবাসি জানান, স্কুল শিক্ষক তপন মল্লিক ২০১৭ সালে উপজেলার ভরতসেন এলাকার এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে হাজত বাস করেন। এ ছাড়া হারতা গ্রামের শুকলাল হালদারের মেয়েকে বিবাহ করে কিছুদিন যেতে না যেতেই তাকে তাড়িয়ে দেয়।