গৌরনদী
উজিরপুরে শিশু সন্তানকে অপহরনের হুমকি, আগৈলঝাড়ায় পরীক্ষার্থীর শ্লীলতাহানী \ দুই ঘটনায় মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/
বরিশালের উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও হারতা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডে সদস্য নিখিল চক্রবর্তী (৪০) এক গৃহবধূকে কু-প্রস্তাব দেন। এতে সে রাজি না হওয়ায় তাকে ধর্ষন ও শিশু সন্তানকে অপহরনের হুমকি দেন যুবলীগ নেতা। সন্তান অপহরনের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে ওই গৃহবধূ। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার উজিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে বখাটের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আমবৌলা গ্রামের জেডিসি পরীক্ষার্থীকে টানা হেচরা ও শ্লীলতাহানী করা হয়। এ ঘটনায় ছাত্রীর মা বাদি হয়ে বুধবার আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই পুলিশ বখাটেকে গ্রেপ্তার করে।
স্থানীয় লোকজন, এজাহার ও পুলিশ জানান, উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের কুচিয়ারপাড় গ্রামের হীরালাল মল্লিক ঢাকায় থেকে ব্যবসা করেন। মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসেন। তার স্ত্রী মিতু বিশ্বাস (২৮) গত ৪ বছর ধরে একমাত্র শিশু সন্তানকে নিয়ে একাকি হারতা বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। ওই গৃহবধূ অভিযোগ করেন, উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও হারতা ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডে সদস্য নিখিল চক্রবর্তী (৪০) গত কয়েক মাস যাবত তাকে উত্যক্ত করে এবং অবৈধ সম্পর্কের কু-প্রস্তাব দেন। এতে সে রাজি না হওয়ায় সম্প্রতি বাড়িতে ঢুকে তাকে জোর করে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। গত ৩০ নভেম্বর তার (গৃহবধূর ) বোনের ছেলে কলেজ ছাত্র পাপন রায় (১৮) ঘটনা সম্পর্কে নিখিল চক্রবর্তির কাছে জানতে চান ও প্রতিবাদ করলে নিখিল তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। পাপন বর্তমানে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনার পর থেকে সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে গৃহবধূ।
গৃহবধূর ছোট বোন সুমী বিশ্বাস জানান, তিনি বিষয়টি অবহিত করে ও যুবলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য নিখিল চক্রবর্তির বিরুদ্ধে উজিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মজিদ সিকাদারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য, যুবলীগ নেতা নিখিল চক্রবর্তী বলেন, অভিযোগ সত্য নয়, উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। । উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূ মিতু বিশ্বাস বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অপরদিকে জেডিসি পরীক্ষা দিতে আসার যাওয়ার পথে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আমবৌলা কেরামতিয়া আলিম মাদ্রাসার জেডিসি পরীক্ষার্থীকে (১৩) উত্যক্ত করে প্রেমের প্রস্তাব দেয় গৈলা ইউনিয়নের সুজনকাঠী গ্রামের সহিদ হাওলাদারের বখাটে ছেলে আরমান হাওলাদার (২০)। বখাটের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত মঙ্গলবার সকালে পরীক্ষায় অংশ নিতে কেন্দ্রের সন্নিকটে পৌছলে বখাটে আরমান তার পথরোধ করে অশ্লীল কথা বললে ছাত্রী প্রতিবাদ করে। এতে বখাটে আরমান ক্ষিপ্ত হয়ে সহযোগীদের নিয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীর পরিহিত হিজাব টেনে খুলে ফেলে এবং হাত ধরে টানা হেচড়া করে শ্লীলতাহানী ঘটায়। পরীক্ষার্থী ডাক-চিৎকার দিলে বখাটেরা পালিয়ে যায়।
আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ অফজাল হোসেন বলেন, মাদ্রাসা ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় ওই পরীক্ষার্থীর মা বাদি হয়ে বুধবার আগৈলঝাড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। ওই দিন গৈলা বাজার থেকে বখাটে আরমানকে গ্রেপ্তার আদালতের মাধ্যমে বরিশাল বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।