বরিশাল
ভূমি কার্যালয়ের কর্মচারীর বিরুদ্ধে ৬৬ লাখ টাকার চেক জালিয়াতির মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের ডহরপাড়া গ্রামের মৃত সৈয়দ শামসুউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে সৈয়দ নাজমুল ইসলামের সঙ্গে প্রতারনা করে ৬৬ লাখ টাকার সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে উঠেছে বরিশালের সাগরদি ভূমি কার্যালয়ের (এমএলএস) কর্মচারী সেলিনা আক্তার কাজল রেখার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভূক্তভোগী নাজমুল ইসলাম বাদি হয়ে বরিশাল মট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতে চেক জালিয়াতির মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামি সেলিনার বিরুদ্ধে সমন জারি করেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দ নাজমুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবের উজিরপুর উপজেলা প্রতিনিধি। তার দুই ভাই সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হন। এতে তার বাবা শোকাহত হয়ে মৃত্যুবর করেন। বাবার মৃত্যুতে পরিবারের দায়ভার তার উপর এসে পরে। বাবা মারা যাওয়ার কিছু দিনের মধ্যে মা মালেকা বেগমের দুটি কিডনী নস্ট হয়ে যাওয়ায় সংসারের খরচ ও মায়ের চিকিৎসা চালানো তার জন্য কঠিন হয়ে পরে। সেই কারনে নাজমুল ইসলাম উজিরপুর উপজেলার জে.এল নং ১০৩, মৌজা চাংগুরীয়া, এস,এ দাগ নং ৭৪৬, খতিয়ান নতুন ৫৬৭, ডিপি খতিয়ান ৫০/১, বিএস ১২৭৫ নং দাগের ১৯ শতাংশ জমি বিক্রি করার সিদ্বান্ত নেন। বরিশাল শহরের ২৮নং ওয়ার্ডের নথুল্লাবাদ মহল্লার মোঃ ইকবাল হোসেনের স্ত্রী সেলিনা আক্তার কাজল রেখা প্রতি শতাংশ জমি ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দরে মোট ১৯ শতাংশ জমি ৬৬ লাখ ৫০ হাজার টাকায় কিনতে সম্মত হন। ২০১৮ সালের ১৬ মে উজিরপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রিার কার্যালয়ের মাধ্যমে সেলিনা আক্তারকে সাব-কবলা দলিল প্রদান করেন নাজমুল । (দলিল নং-১৯০৩)। সেলিনা আক্তার জমির মূল্য বাবত নাজমুল ইসলামকে ৬৬ লাখ টাকার চেক দেন।
নাজমুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, জমি গৃহীতা সেলিনা আক্তার বরিশাল নথুল্লাবাদ শাখার রুপালী ব্যাংক শাখার সঞ্চয়ী হিসাব নং- ৩৩০৭ এর চেক নং-এসবিএলআর-৭৫৭৭৩৭৩ মাধ্যমে আমাকে জমির মূল্য পরিশোধ করে। আমি সরল মনে চেক নিয়ে তাকে জমি সাব-কবলা দলিল করে দেই। পরবর্তিতে ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, ওই একাউন্টে কোন টাকা নেই। সেলিনা জমির মূল্য পরিশোধ নিয়ে আমার সঙ্গে প্রতারনা করেছে। আমি ফিরে এসে সেলিনাকে প্রতারনার কথা বলতেই সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং বিভিন্ন হুমকি দেয়। এ নিয়ে আমি বাড়াবাড়ি করলে বা প্রশাসনের আশ্রয় নিলে আমাকে হত্যার হুমকি দেন সেলিনরা। গত ১৯ জুন উজিরপুর মডেল থানায় হুমকির বিষয়ে একটি সাধারন ডায়রী করা হয় (ডায়রী নং ৮২০)। পরবর্তিতে আমি বিষয়টি বরিশাল সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে লিখিতভাবে অবহিত করি কিন্তু কোন সমাধান না পেয়ে গত ১৬ ও ১৮ জুলাই দুই দফায় লিগ্যাল নোটিশ প্রদান করি। আসামি সেলিনা লিগ্যাল নোটিশ অমলে না নেওয়ায গতকাল মামলা দায়ের করি। নাজমুল আরো বলেন, সেলিনা আক্তার জমির ৬৬ লাখ টাকা না দিয়ে আমার কাছ থেকে ক্রয়কৃত জমি নিজের নামে নামজারি করার চেষ্টা করে এবং গোপনে অন্যের কাছে জমি বিক্রির পায়তারা করে। আমি খবর পেয়ে উজিরপুর সহকারী কমিশনারকে (ভূমি ) নামজারি না করা ও উপজেলা স্ব-রেজিস্ট্রিার কর্মকর্তার কাছে বিক্রির দলিল সম্পন্ন না করতে অনুরোধ জানাই। সাংবাদিক নাজমুল জমি বিক্রির টাকা ফিরে পেতে প্রশাসনসহ সকলের কাছে সহযোগীতা কামনা করেন।