গৌরনদী
আগৈলঝাড়া সন্ধ্যা নদীর পয়সারহাটে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযান
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার এক সময়ে খর¯্রােত সন্ধ্যা নদীর পয়সাট এলাকা প্রভাবশালী অবৈধ দখলদারা দখল করে নির্মান করেছে বহুতল পাকা স্থাপনাসহ অবৈধ স্থাপনা। নদীর অবৈধ দখলদার মুক্ত করে পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে স্থানীয়রা দীর্ঘ দিন দাবি জানিয়ে আসছিল। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রশাসন অভিযান শুরু করেছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, বরিশালের সন্ধ্যা নদীর আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট এলাকায় শত বছর পূর্বে গড়ে উঠে বরিশালের বৃহত ব্যবসায়ী বন্দর। নদীর তীর ঘেষে দুই পাড়ে এখানে প্রায় সহ¯্রাধিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে পয়সারহাটÑঢাকা চারটি বড় লঞ্চ চলাচল করে আসছিল। নদীর নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় গত তিন বছর ধরে ঢাকাÑ পয়সারহাট লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছে পয়সারহাট বন্দরের সহ¯্রাধিক ব্যবসায়ী। এক সময় সন্ধ্য নদী খুবই খরস্্েরাত ছিল। নদীটি প্রায় ১২ থেকে ১৪শ ফুট প্রশস্থ ছিল। আশপাশে যতগুলো নদী রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী গভীর ছিল সন্ধ্যার পয়সারহাট এলাকা। এ নদীকে ঘিরেই পয়সারহাট ব্যবসায়ী বন্দর জমে উঠেছিল। বর্তমানে সন্ধ্যা নদীর পয়সারহাট এলাকার প্রশস্ততা সংকুচিত হয়ে গেছে। নদীর প্রশস্ততা ২ থেকে আড়াইশ ফুট। প্রভাবশালীদের দখলের কারনে নদীটি আজ সৌন্দার্য্য হারিয়েছে। হারিয়েছে নদীর স্বাভাবিক গতি পথ। প্রভাবশালী নদী ভরাট করে গড়ে তুলেছেন পাকা স্থাপনা, স্ব-মিল, ইট বালুর ব্যবসার মাঠ।
উপজেলা প্রশাসনের ও উচ্ছেদ কমিটির একাধিক সদস্য জানান, গত বুধবার দুপুরে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস সন্ধ্যা নদীর পয়সার হাট দখল মুক্ত করতে এক দল পুলিশ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের প্রথম দিনে পয়সারহাট সেতুর পূর্ব পাড়ে কযেকটি অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে দখলমুক্ত করেন। অভিযান পরিচালনার আগে স্থাপনার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।
দখলদার উপজেলা যুবলীগের সদস্য জেবারুল খান, মোঃ জুয়েল তালুকদারের স্থাপনা ভেঙ্গে দেন এবং তাদের আটক করেন। পরে দুইজনার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা জড়িমানা আদায় করে মুক্তি দেন। এ ছাড়া বক্তিয়ার এন্টারপ্রাইজের মালিক বাদশা বক্তিয়ার এর গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দেন। দখলদারদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করেন। আগামি ৩০ আগস্টের মধ্যে নিজ খরচে সকল অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়াসহ মাটি কেটে নদীর স্বাভাবিক ¯্রােতধারা ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন। নতুবা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্য্যস্থা নেওয়া হবে। বাকাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিপুল দাস নদী উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগাত জানিয়ে নদী দখলমুক্ত করতে প্রশাসনকে সকল ধরনের আশ্বস দেন।
অভিযান পরিচালনায় সময় উপস্থিত ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত, বাকাল ইউপি চেয়ারম্যান বিপুল দাস, আগৈলঝাড়া থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ জসিম উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ফিরোজ শিকদার। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বিপুল চন্দ্র দাস অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, সন্ধ্যা নদীর পয়সার অবৈধ দলদার উ”েচ্ছদে অভিযান শুরু হয়েছে মাত্র। নদী অবৈধ দখল মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে। শুধু পয়সারহাট এলাকাই নয়, উপজেলার সকল জায়গার নদী উদ্ধারে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।