প্রধান সংবাদ
উজিরপুরে স্কুল ছাত্রকে ডেকে নিয়ে হত্যা \ আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র নয়ন হাওলাদারকে (১৫) ডেকে নিয়ে হত্যা করে দূবৃত্তরা। হত্যার পরে প্রায় দুই মাসে অতিবাহিত হলেও হত্যাকাÐে জড়িত প্রধান আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ । স্কুল ছাত্র নয়ন হত্যার প্রতিবাদে ও ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে সোমবার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের জয়শ্রী বাসষ্টান্ডে বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসি। মহাসড়ক অবরোধ করে দেড় ঘন্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন বিক্ষুব্ধরা।
গতকাল সোমবার সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ঢাকাÑবরিশাল মহাসড়কের জয়শ্রী বাসষ্টান্ডে অবরোধ সৃষ্টি করে প্রতিবাদ সমাবেশে করেছে বিদ্যালয়ে শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষর্থীরা। এ সময় মহাসড়কে সকল ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুরপাল্লার বাসসহ যাত্রীদের দূর্ভোগ পোহাতে হয়। খবর পেয়ে গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আতিয়ার রহমান ও উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল ও বামরাইল ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা মো. ইউসুফ হোসেন একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তা প্রত্যাহার করাতে ব্যার্থ হন। পরে এক সমপ্তাহের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার আশ্বাস দেয়ার পরে দুপুর ১২ টায় অবরোধ প্রত্যাহার করলে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
নিহত স্কুল ছাত্রের চাচা ও স্থানীয় সমাজ সেবক মো. মাসুম হাওলাদারের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আয়নাল হক, ইউপি সদস্য ইউসুফ হোসেন, শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির, নিহত স্কুল ছাত্রের বাবা আব্দুস সোবাহান হাওলাদার, জয়শ্রী বাসষ্টান্ডের ব্যবসায়ী আব্দুল কুদ্দুস বেপারী, মালেক হাওলাদার প্রমূখ। বক্তারা নয়ন হত্যা জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবি জানান। নিহত ছাত্রের বাবা আব্দুস সোবাহান ক্ষোভ প্রকাশ করে পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ছেলে নয়ন হত্যাকাÐে জড়িত স্থানীয় ইদ্রিস হাওলাদারের ছেলে মোমিন হাওলাদারকে পুলিশ আটক করে ছেড়ে দিয়েছে। তাকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। হত্যাকাÐে জড়িত আসামিকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বাবুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিবাকর চন্দ্র দাস বলেন, হত্যাকাÐে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোমিনকে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু সুনিদৃষ্ট প্রমান না পাওয়ায় ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল সন্ধ্যা নদী থেকে স্কুল ছাত্র নয়ন হাওলাদারের বস্তবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নয়নের পিতা সোবাহান হাওলাদার বাদি হয়ে বাবুগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে দুই জনকে আটক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আসামির সমর্থিত সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি নিহতের পিতা ও মামলার বাদী সোবাহান হাওলাদারকে অমানুষিক নির্যাতন করে একটি পা ভেঙ্গে দিয়েছে। এতে এলাকাবাসী আরও বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে কঠোর কর্মসূচী ঘোষনার হুমকি দিয়েছে।