গৌরনদী
যুবলীগ নেতার এসিড নিক্ষেপের হুমকির মুখে স্কুল ছাত্রীর পড়াশোনা বন্ধ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরুপর উপজেলার গুঠিয়া ইউনিয়নের বৈরকাঠী গ্রামের পঞ্চগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১০ম শ্রেণির ছাত্রীকে (১৬) প্রেমের প্রস্তাব দেন একই গ্রামের আব্দুল হক মোল্লার ছেলে ও গুঠিয়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সুজন মোল্লা (৩০)। ছাত্রী প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় যুবলীগ নেতা ছাত্রীকে এসিড নিক্ষেপের হুমকি দেন। হুমকির মুখে গত ৫ মাস যাবত স্কুল ছাত্রীর স্কুলে আসা বন্ধসহ পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ করার পরেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
স্কুল ছাত্রীর বাবা আনোয়ার বেপারি অভিযোগ করেন, তার মেয়ে স্কুলে আসা যাওয়ার পথে একই গ্রামের আব্দুল হক মোল্লার ছেলে ও গুঠিয়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সুজন মোল্লা উত্যক্ত করে অসছিল। মেয়ে বিষয়টি তাকে জানানোর পরে সে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জানান। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী নেতাকর্মীদের কাছে বিচার দেন। এতে যুবলীগ নেতা সুজন ক্ষিপ্ত হন। এবং তাদের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে হুমকি দেন। হুমকির মুখে গত জানুয়ারি মাসে মেয়েকে ঢাকায় আত্মীয়র বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। কিছুদিন ঢাকায় থাকার পরে গত ফেব্রæয়ারি মাসে মেয়েকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। পুনরায় স্কুলে যাওয়া শুরু করলে যুবলীগ নেতা সুজন মোল্লা পুনরায় পথে ঘাটে উত্যক্ত করে এবং তার প্রস্তাব না মানলে এসিড নিক্ষেপের হুমকি দেন। হুমকির মুখে গত ফেব্রæয়ারি মাস থেকে গত ৫ মাস যাবত স্কুল ছাত্রীর স্কুলে আসা যাওয়া ও পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, মেয়ে আগামিতে এসএসসি পরীক্ষার্থী। স্কুলে ক্লাস করতে না পারায় পড়াশোনা বন্ধ রয়েছে। তাই স্কুলে আসা ও পড়াশোনার চালুর জন্য স্কুল পরিচালনা কমিটি ও গুঠিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আ: ছত্তার মোল্লাসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর কাছে ধর্না দিয়েছি কিন্তু কোন প্রতিকার পাইনি। অবশেষে অতী সম্প্রতি বিষয়টি স্থানীয় গুঠিয়া পুলিশ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ করি কিন্তু তাতেও কোন ফল হয়নি। গুঠিয়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সুজন মোল্লা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্কুল ছাত্রী অঅমাকে ফাঁসাতে এ ধরনের অভিযোগ করেছে, অভিযোগের কোন সত্যতা নেই।
ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি আঃ সাত্তার মোল্লা বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। ক্যাম্পের ইনচার্জ সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মনিরুল ইসলাম এ প্রসেঙ্গ বলেন, আমি ঘটনাটি শুনে এলাকায় গিয়ে খোজ নিয়ে সত্যতা পেয়েছি কিন্তু কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। লিখিত পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো। এ প্রসঙ্গে উজিরপুর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র মো: গিয়াস উদ্দিন বেপারি বলেন, ‘ঘটনাটি আমার জানা নেই। তবে সুজন এ ধরনের কর্মকান্ড করে থাকলে তার নিজস্ব গতিতে চলবে। প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে আমরা সহায়তা দিবো। ঘটনার সত্যতা যাচাই সাপেক্ষে দলীয়ভাবেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মাসুমা আক্তার বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই সাথে ভ‚ক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার লিখিত অভিযোগ দিলে তাদের নিরাপত্তাসহ বখাটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’