গৌরনদী
উজিরপুরে জবাই করে কলেজ ছাত্র হত্যার ঘটনায় পরকীয়া প্রেমিকার স্বামী গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার ভবানীপুর হাজী তাহের উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ও উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের মুন্সির তাল্লুক গ্রামের সরোয়ার হাওলাদারের পূত্র ইমরান হাওলাদারকে (২৫) শুক্রবার রাতে নিজ বাড়ি পাশের একটি পরিত্যক্ত ভিটায় জবাই করে হত্যা করেছে অজ্ঞাতনামা দূবৃত্তরা। হত্যার ৬দিন পর হত্যাকাÐে জড়িত থাকার অভিযোগে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ বুধবার রাতে নিহতের চাচাতো ভাই আরিফুল ইসলাম ও স্ত্রী রাবেয়া আক্তারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরকীয়ার জের ধরে কলেজ ছাত্র ইমরানকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশ জানান। ইমরান হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের মুন্সির তাল্লুক গ্রামের নাসির উদ্দিন হাওলাদারের পুত্র মো. আরিফুল ইসলাম (২৭) হারতা ইউনিয়নের হারতা বাজারের রফিকুল ইসলামের মাছের আড়তে চাকুরী করেন। ওই সুবাদে আরিফুল বেশীরভাগ রাতে মাছের আড়তেই থাকতেন। সেই সুবাদে আরিফুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া আক্তারের (২২) সঙ্গে চাচাতো ভাই কলেজ ছাত্র ইমরান হাওলাদারের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। ইমরান নিহত হওয়ার পরে বিষয়টি এলাকার মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল জানান, ৫বছর পূর্বে চাচাতো ভাই আরিফুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়ার সঙ্গে ইমরানের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রথম দিকে রাবেয়া স্বেচ্ছায় মেলামেশা করলে এক পর্যায়ে রাবেয়া আক্তার পরকীয়া সম্পর্ক ছিন্ন করেন। পরবর্তিতে ইমরান পূর্বের মেলামেশার ভিডিও দেখিয়ে রাবেয়াকে জিম্মি করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অবৈধ মেলামেশায় বাধ্য করে। এক পর্যায়ে রাবেয়া বিষয়টি স্বামী আরিফুল ইসলামকে জানান। এতে আরিফুল ক্ষিপ্ত হয়ে ইমরানকে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে শুক্রবার রাতে জবাই করে হত্যা করেছে। বিভিন্ন সূত্রেপ্রাপ্ত তথ্য ও মুঠোফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে বুধবার রাতে উজিরপুর থানা পুলিশ মুনসীরতাল্লুক গ্রামে অভিযান চালিয়ে আরিফুল ইসলাম (২৭) ও স্ত্রী রাবেয়া আক্তারকে (২২) আটক করে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ইমরান হত্যার চাঞ্চল্যকর রহস্য বেরিয়ে আসে। এক পর্যায়ে ইমরানকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার কথামতে হত্যার ব্যবহৃত ধারাল অস্ত্র ও ইমরানের ব্যবহহৃত মুঠোফোন উদ্ধার করাহয়। ইমরান হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে গতকাল বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ উজিরপুর উপজেলার ভবানীপুর হাজী তাহের উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ছাত্র ও উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের মুন্সির তাল্লুক গ্রামের সরোয়ার হাওলাদারের পূত্র ইমরান হাওলাদার মামা বাড়ি একই উপজেলার হাবিবপুর গ্রামে থেকে পড়াশোনা করতেন। শুক্রবার সকালে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে মুন্সিরতাল্লুক গ্রামের বাড়িতে আসে। রাতে রাতের খাবার খাওয়ার পরে মোবাইলে একটি ফোন পেয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরের দিন শনিবার সকালে বাড়ির পাশের পরিত্যক্ত ভিটা থেকে ইমরানের জবাই করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।