গৌরনদী
গৌরনদীতে খালের মধ্যে আওয়ামীলীগ নেতার পাকা ভবন নির্মান শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদীর উপজেলার বার্থী হইতে আগৈলঝাড়া উজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভাল্লুকসী পর্যন্ত খালের ছোট ডুমুরিয়া এলাকায় সরকারি খাল দখল করে খালের মধ্যে আগৈলঝাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি ও প্রভাবশালী কাজী শাহাদাত হোসেন পাকা ভবন নির্মান কাজ শুরু করেছেন। অবৈধভাবে খালের মধ্যে পাকা ভবন নির্মান করায় নৌ-যানচলাচলে বিগ্নসহ চলতি বোরো মৌসুমে সেচ সংকটের আশংকা করেছেন স্থানীয় কৃষক ও সুবিধাভোগীরা। সরকারি খাল দখল করে পাকা ভবন নির্মান বন্ধ করতে অভিযোগ দেয়া সত্বেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না স্থানীয় প্রশাসন।
ভূক্তভোগী কৃষক, এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, গৌরনদী উপজেলার বার্থী হইতে আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের ভাল্লুকসী খালের ভাল্লুকসী বাজারের পূর্ব পাশে ছোট ডুমুরিয়া এলাকায় আগৈলঝাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগের সহ-সভাপতি কাজী শাহাদাত হোসেন (৬০) গত ২/৩ দিন ধরে সরকারি খাল দখল করে খালের মধ্যে পাকা ভবন নির্মান শুরু করেছেন। স্থানীয়রা জানান, কৃষকদের সেচ-সুবিধা, ফসল পরিবহন ও ভাল্লুকসী বাজারের ব্যবসায়ীদের নৌ-পথে মালামাল পরিবহনের মাধ্যম হচ্ছে এ খালটি। খালের মধ্যে পাকা ভবন নির্মানে এ খালটির প্রশস্থতা ও পানি প্রবাহ কমে কৃষক, ব্যবসায়ীসহ সাধারন মানুষের ভোগান্তি পোহাতে হবে। দলীয় ক্ষমতার প্রভঅব খাটিয়ে খালের মধ্যে পাকা ভবন নির্মাণ করায় খাল দিয়ে নৌকা চলাচলে মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। তাছাড়া খালের মধ্যে ভবনটি নির্মান হলে চলতি বোরো মৌসুমে খালে পানি প্রবাহ সঙ্কুচিত হয়ে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তাছাড়া নির্মানাধীন পাকা ভবনের উপরের অংশ সড়কের কাছাকাছি যাওযায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ন হবে।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগৈলঝাড়া উজেলার রাজিহার ইউনিয়নের গৌরনদীর বার্থী হইতে ভাল্লুকসী খালের ভাল্লুকসী বাজারে পূর্ব পাশে ছোট ডুমুরিয়া এলাকায় পাকা ভবন নির্মানে কাজ করছেন কয়েকজন শ্রমিক । নির্মানাধীন ভবনের ফাউÐেশনের জন্য খালের মধ্যে মাঝ বরাবর ৫টি বেইজ ঢালাই শেষ করে কলমের আংশিক ঢালাই দিয়েছেন। এবং উপরের সারির বেইজ ঢালাইয়ের কাজ করেছেন শ্রমিকরা। পাশেই দাড়িয়ে নির্মান কাজ তদারকি করছেন শ্রমিকলীগ নেতা কাজী শাহাদাত। এ সময় ছবি তুলতে গেলে শ্রমিকলীগ নেতা কাজী শাহাদাত ছবি না তুলতে নিষেধ করেন। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, শ্রমিকলীগ নেতা কাজী শাহাদাত হোসেন খালের মধ্যে একটি বিশাল পাকা ভবন নির্মান কাজ শুরু করলে তারা নিষেধ করেন কিন্তু তিনি কোন মানছেন না। তারা আগৈলঝাড়া ভূমি কার্যালয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলার ছোট ডুমুরিয়া গ্রামের মো. মজিবুর রহমান, মো. হান্নান তালুকদারসহ কয়েকজন জানান, এই খালের পানি সেচ দিয়ে আগৈলঝাড়ার সুতারবাড়ি, দক্ষিন ভাল্লুকসি, উত্তর ভাল্লাকুসি, পশ্চিম ভাল্লুকসি, গোয়াইল, পূর্ব গোয়াইল গৌরনদী উপজেলার পশ্চিম বার্থী, ৭৫ফুট সেতুর দক্ষিনে শাখা খাল সাউদেরপাড় গ্রামের প্রায় ২০/২২টি বোরো প্রকল্পে সেচ দেয়া হয়। খালের মাঝখানে অবৈধ পাকা ভবন নির্মান করা হলে স্বাভাবিক পানি চলাচলে বিগ্ন ঘটবে এবং কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে। খালটি ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ কমে গেছে বড় নৌকা ও ট্রলার চলাচলে বাধাপ্রাপ্ত হবে। চলতি বোরো মৌসুমে চাষে সেচ সরবারহে সংকট দেখা দিবে।
সরকারি খাল দখল করে অবৈধ ভবন নির্মানের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কাজী শাহাদাত হোসেন বলেন, আমি আমার রেকর্ডিয় জমিতে ভবন নির্মান করছি। আমি কোন সরকারি খাল দখল করি নাই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আগৈলঝাড়া উপজেলা ভূমি কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, গৌরনদীর বার্থী হইতে ভাল্লুকসি খাল সরকারি রেকর্ডভূক্ত। ওই খালের মধ্যে কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তিন নেই। এ সম্পর্কে জানতে আগৈলঝাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি)র দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার দাসের কাছে একাধিকার ফোন দিলে তিনি ধরেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে ফোন দিয়েও কোন সারা পাওযা যায়নি।