বরিশাল
উজিরপুরে আওয়ামীলীগ বিএনপি সংঘর্ষ, দুটি নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর-আহত-১০
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ধামুরা বাজারের পূর্বপাড়ে গত শনিবার রাতে আওয়ামীলীগের নৌকা প্রকীকের প্রার্থী ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি মো. শাহ আলম তালুকদারের সমর্থক ও বিএনপির মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য সরদার সরফউদ্দিন সান্টুর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় উভয় দলের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে উভয় দলের ১০ জন আহত হয়। বিএনপি সমর্থকরা গোপনে ও আওয়ামীলীগ সমর্থরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার রাতে ৫১ জন বিএনপি নেতাকর্মিকে আসামি করে উজিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন বাজারের ব্যবসায়ী ও পুলিশ জানান, বরিশাল-২ আসনের উজিরপুর আ.লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. শাহ আলম তালুকদার কতিপয় সমর্থকরা শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ধামুরা বাজারের পূর্ব পাড়ে টেম্পু ষ্টান্ডের দলীয় কার্যালয়ে বসে নেতাকর্মিদের নিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল। রাত পোনে আটটার দিকে মুখোসধারী ও হেলমেট পড়া ১০/১২জন সন্ত্রাসী ধারাল অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় কার্যালয়ে থাকা নেতাকর্মিরা দৌড়ে সরে গেলে হামলাকারীরা অফিসের আসবাবপত্র ব্যাপক ভাঙচুর ও তছনছ করে। হামলাকারীলা চলে যাওয়ার পরে আওয়ামীলীগ নেতা কর্মিরা মিছিল বের করে ধামুরা হাইস্কুল সংলগ্ন বিএনপির নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালায় এবং ভাঙচুর করে। এ নিয়ে উভয় দলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জন আহত হয়।
উপজেলার শোলক ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও শোলক ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম (৩৫) অভিযোগ করে বলেন, শোলক ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. জুয়েল সরদার (২৮)র নেতৃত্বে ১৫/২০ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী শনিবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে ধামুরা বাজারের পূর্ব পাড়ে টেম্পু ষ্টান্ডের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে অফিসের চেয়ার, টেবিল, টিভিসহ আসবাবপত্র ব্যাপক ভাঙচুর করে। এ সময় বাধা দিতে গেলে উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাকিল মোল্লা, ছাত্রলীগ সদস্য রাজীব হোসেন, মোহাম্মদ আলম ও আমিসহ ৬ জনকে পিটিয়ে জখম করে। গুরুতরভাবে আহত সাকিল মোল্লা, রাজীব হোসেনকে উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা মো. জুয়েল সরদার পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমরা নেতাকর্মিদের নিয়ে ধামুরা হাইস্কুল সংলগ্ন দলীয় নির্বাচনী কার্যালয়ে সভা করছিলাম। এ সময় উপজেলার শোলক ইউনিয়ন ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও শোলক ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি মিছিল এসে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা আসবাবপত্র ভাঙচুর করে অফিসটি তালাবদ্ধ করে দেয় । এ সময় আমাকে, বিএনপি কর্মি আনোয়ার হোসেন, জাহিদ হোসেনসহ চার জনকে পিটিয়ে আহত করে। আহত বিএনপি নেতাকর্মিরা পুলিশী ভয়ে গোপনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। শোলক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক মো. মনির জমাদ্দার অভিযোগ করেন, মুখোস ও হেলমেট পরে আওয়ামীলীগ যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মিরা নিজেরাই নিজেদের অফিস হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বিএনপিকে দোষারুপ করে আমাদের নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালায়। আবার নির্বাচনের আগে মাঠ ছাড়া করতে বিএনপির ৫১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেন। মামলার বাদি ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও শোলক ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম ্ এ অভিযোগ অস্বীকার করেন।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল বলেন, এ ঘটনায় আওয়ামীলীগ নেতা মো. সিরাজুল ইসলাম বাদি হয়ে শোলক ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. জুয়েল সরদার, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি কাওছার হোসেন, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জেল হাওলাদার, ৫নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি আল আমিন খান, শোলক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারন সম্পাদক মনির জমাদ্দারসহ ২৬ বিএনপির নেতাকর্মির নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২৫জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছে।