গৌরনদী
গৌরনদীতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে বসতঘর গুড়িয়ে দিয়েছে, আহত-৬
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের সরিকল গ্রামে গত শুক্রবার রাতে জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়ে একটি দোকান ভাঙচুর ও একটি বসতঘর সম্পূর্ন গুড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় সন্ত্রাসী হামলায় চালিয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে ৬জন আহত করে এবং লুটপট চালায়। এ ঘটনায় গতকাল শনিবার সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ১০ জনকে আসামি করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন, আহত ও পুলিশ জানান, গৌরনদী উপজেলার সরিকল গ্রামের মৃত রফিজ উদ্দিন মাতুব্বরের ছেলে বিএনপি সমর্থক মো. সোহরাব মাতুব্বর(৬৫)র সঙ্গে একই গ্রামের মৃত আজিজ হাওলাদারের ছেলে ও সরিকল ইউনিয়ন আ.লীগের সদস্য মো. শাহজাহান হাওলাদার(৩২)র সঙ্গে দীর্গদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় উভয়ের মধ্যে হামলা ও মামলা দায়েরের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়রা জানান, গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে সোহবার মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা সোহবার মাতুব্বরের ছোট ভাইর স্ত্রী শহরবানুর বসত ঘর সম্পূর্ন ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে পাশ্ববর্তি ডোবায় ফেলে দেয়। একই সময় একটি দোকান ভাঙচুর করে হামলাকারীরা। হামলায় ৫ জন আহত হয়েছে।
সোহরাব মাতুব্বর জানান, উপজেলার জেএল সরিকল মৌজার এসএ ১৫৮২ খতিয়ানের ৬৭নং দাগের ১৫ শতাংশ জমিতে ৩০/৩৫ বছর ধরে সে ও তার ছোট ভাইর বিধুবা স্ত্রী ঘর দুয়ার নির্মান করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছেন। গত ২ বছর ধরে ওই জমির ৭ শতাংশ জায়গা জবর দখল নিতে চেষ্টা চালায় আ.লীগ নেতা শাহজাহান হাওলাদার ও তার সহযোগীরা। এতে ব্যর্থ হয়ে গত ২৮ নভেম্বর শাহজাহার হাওলাদার বাদি হয়ে তাদের বিরুদ্ধে গৌরনদী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় পুলিশ ছোট ভাইর বিধূবা স্ত্রী শহরবানু বেগম তার কন্যা নিলুফাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল জেল হাজতে পাঠান। শহর বানু ছেলে ভাতিজা কলম মাতুব্বর (৩০) পুলিশের ভয়ে পলাতক থাকায় বসত ঘরটি খালি থাকে।
সোহরাব অভিযোগ করে বলেন, বাড়ি খালি থাকায় শুক্রবার রাত ১২টার দিকে আ.লীগ নেতা শাহজাহানের ভাগিনা মো. নয়ন শরীফ (২২)র নেতেৃত্বে ১০/১২জন সন্ত্রাসী লাঠিসোটা ও ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে আমার স্ত্রী রিজিয়া বেগম(৫০), মেয়ে সুমনা আক্তার(২৪), আরিফ আক্তার(১৬) নাতি তাহমিনা আক্তর(১৭)সহ ৫ জনকে পিটিয়ে জখম করেছে। আহতরা পুলিশি ভয়ে পালিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। হামলাকারীরা ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে নগদ টাকা ও মূল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা ছোট ভাইর বিধুবা স্ত্রী শহর বানুর (বর্তমানে হাজতে) বসতঘরটি ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে পাটে পাটে খুলে পাশ্ববর্তি ডোবায় ফেলে দেয় এবং আমার দোকান ভাঙচুর করে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. নয়ন শরীফ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামলা সম্পর্কে আমি কিছুই জানিনা। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে মো. শাহজাহান হাওলাদার বলেন, বিরোধীয় ৭ শতাংশ সরকারি জমির লিজ গৃহীতা হিসেবে আমিই বৈধ মালিক ও ভোগ দখলকারী। বসতঘর ভাঙচুর করে ডোবায় ফেলে দেয়া সম্পর্কে বলেন, আমি হাসতালে অসুস্থ্য কে বা করা ঘটনা ঘটিয়েছে তা আমার জানা নাই। আমাকে ফাঁসাতে এ ঘটনা নিজেরাই ঘটিয়েছে। সরিকল পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. নজরুল ইসলাম ভাঙচুরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, রাতে কে বা কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা নিশ্চিত নয়। এ ঘটনায় সোহরাব মাতুব্বর বাদি হয়ে প্রতিপক্ষ মো. শাহজাহান হাওলাদার, ভাগ্নে নয়ন শরীফসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।