গৌরনদী
অবরুদ্ধ গৌরনদী বিএনপি নেতা মুক্ত, খুলে দেয়া হয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ মঙ্গলবার সকালে বরিশালের গৌরনদী পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক ও গৌরনদী বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম ফকিরের গৌরনদী বন্দরস্থ বাসভবনের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে অবরুদ্ধ ও গৌরনদী বন্দরের তার তিন ভাই, ভাতিজার তিনটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ কর্মিরা। ঘটনার ২৬ ঘন্টা পর গতকাল বুধবার স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও সিনিয়র আ.লীগ নেতারা তালা খুলে দিলে অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্তি পান শাহ আলম ফকির। খুলে দেয়া হয় তার তিন স্বজনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
গৌরনদী পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক, মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম ফকির (৬৫) অভিযোগ করে বলেন, সম্প্রতি ছাত্রলীগ, যুবলীগ নেতাকর্মিরা আমার ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে হাত ও কোমরের হাড্ডি ভেঙ্গে দেয় এবং পিটিয়ে জখম করে। দেশে ও সিংগাপুরে চিকিৎসা নিয়ে কিছুটা সুস্থ্য হলেও সেই থেকে এখন পর্যন্ত আমি অসুস্থ্য। বিদেশ থেকে চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফিরে গত ৭/৮ মাস যাবত ঘরের মধ্যেই সময় কাটাই। মঙ্গলবার সকাল থেকে খুব বেশী অসুস্থ্যতা বোধ করায় গৌরনদী মডেল থানা সংলগ্ন গৌরনদী বন্দরের রিকসা ষ্টাÐের বাসভবনে ঘুমাতে ছিলাম। দুপুরে হঠাৎ বাসভবনের মূল ফটকে ১০/১২ জন যুবক গেট ধাক্কাধাক্কি করে আমার নাম নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে। এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীরা বলেন, আজকে থেকে ২মাসের জন্য তোর (শাহ আলম ফকির) গৌরনদী ছাড়তে হবে। যদি না ছাড়স তাহলে তোকে মেরে ফেলে হবে। চলে যাওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা বাহির থেকে মূল ফটকে তালাবদ্ধ করে তাকে অবরুদ্ধ করে রেখে যান।
শাহ আলম ফকিরের ভাই গৌরনদী বন্দরের ব্যবসায়ী মো. মিন্টু ফকির (৫১) অভিযোগ করে বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমি বাড়ি থেকে এসে দোকান খুলে কেবল বসি। এ সময় জহির নামে এক ছাত্রলীগকর্মিসহ ৭/৮ জন যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মিরা এসে আমাকে দোকান থেকে বের হয়ে আসতে বলে। আমি আসতে না চাইলে টেনে হেচরে বের করে দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেয়। যাওয়ার সময় বলে আগামি ২/৩মাস দোকান বন্ধ থাকবে এবং তুই গৌরনদী ত্যাগ করবি, নইলে পরিনতি খুব খারাপ হবে। একই অভিযোগ করে শাহ আলম ফকিরে ছোট ভাই মো. আনিচ ফকির (৪২) বলেন, মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ছেলে তানভীন ফকির (১৭)কে দোকানে বসিয়ে আমি বাড়িতে আসি। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ছেলে তানভির বাড়িতে ফিরে এসে আমাকে জানান, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মিরা তাকে দোকান থেকে বের করে দিয়ে দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। একই অভিযোগ করেন শাহ আলম ফকিরের বড় ভাইর ছেলে মো. টিটু ফকির(৪৫)। তারা বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পরে বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানানো হয়।
বিএনপি নেতা শাহ আলম ফকির বলেন, বাসার মধ্যে আমার ছেলে অয়নের এক বছরের শিশুপুত্র আবদুল্লাহ ফকির খাদ্য সংকটে পরার বিষয়টি মঙ্গলবার রাতে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুর রব হাওলাদার ও বরিশাল পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলামকে মুঠোফোনে জানানো হয়। তাদের কাছে মানবিক সাহায্য চাইলে তারা আমাকে আশ্বাস দেন। পরে বুধবার দুপুরে পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উদ্যোগ নিয়ে বাসভবনের মূল ফটকের তালা ও তিন ভাইর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে দেন। গৌরনদী বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক ও গৌরনদী উপজেলা আ.লীগের কোষাধ্যক্ষ ভোলা সাহা বলেন, সিনিয়র আ.লীগ নেতাদের নিয়ে তালা খুলে দেয়া হয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আ.লীগ সভাপতি এইচ, এম, জয়নাল অবেদীনমহ নেতৃবৃন্দ। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে গতকাল মঙ্গলবার বিএনপি নেতার বাসভবনের মূল ফটকের ও তার সহদরদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়েছে।