গৌরনদী
উজিরপুরে ইউপি চেয়ারম্যান খুন সহযোগী গুলিবিদ্ধ \ দোকান-বাড়ি ভাঙচুর, আহত-৫ আটক-৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম/ এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের আভ্যন্তরীন বিরোধের জের গত শুক্রবার রাতে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার(৪৫)কে হত্যা করে অজ্ঞাতনামা দূবৃত্তরা। এ সময় তার সহযোগী নিহার হালদার (৩৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। গতকাল শনিবার চেয়ারম্যান হত্যার প্রতিবাদে গতকাল কারফা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বিক্ষুব্ধরা কারফা বাজারের চারটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও একটি পাকা বহুতল ভবন ভাঙচুর করে অগ্নি সংযোগ করেছে। পুলিশ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে স্বেচ্ছসেবকলীগের নেতাসহ ৩জনকে আটক করেছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন আ.লীগ সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার ও জল্লা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও জল্লা ইউনিয়ন স্বেচ্ছসেবকলীগের সভাপতি তাইজুল ইসলামের বিরোধ চলে আসছিল। ব্যবসায়ী নিহার রঞ্জন সমাদ্দার (৩৭) জানান, অতী সম্প্রতি জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও স্বেচ্ছসেবকলীগের নেতা তাইজুল ইসলাম, জল্লা ইউনিয়ন আ.লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো. নান্নু সিকদার, জল্লা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মো. মামুন শাহ ও প্রভাবশালী ছাত্রলীগ নেতা মো. রাব্বি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দুস্থদের ভিজিএফ এর চাল চুরির আভিযোগ এনে এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ মানববন্ধ করে চেয়ারম্যনের বিচারের দাবি জানান। এমন কি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
কারফা বাজারের ব্যবসায়ী তপন কুমার বিশ্বাসসহ অনেকেই জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি বিশ্বজিৎ হালদার(৫৫) কারফা বাজারে নিজ গার্মেন্টেসের দোকানে বসা ছিল। ওই সময় বাজারের মধ্যে পরপর কয়েক রাউÐ গুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় বাজারের ব্যবসায়ী ও আগত সাধারন মানুষ প্রান ভয়ে দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। তারা কয়েকজন এগিয়ে গিয়ে চেয়ারম্যানের দোকানের মধ্যে আহত চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ হালদার ও তার সহযোগী নিহার হালদারকে দেখতে পান। এসময় ব্যবসায়ীদের ডাকচিৎকারে ব্যবসায়ী ও স্বজনরা আহতদের উদ্ধার করে পাশ্ববর্তি আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। অবস্থার অবনতি ঘটলে আহতদের বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার পোনে ১০টায় চেয়ারম্যান মারা যান।
গতকাল শনিবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান হত্যার প্রতিবাদে ও ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে কারফা বাজারে প্রায় ৪শত ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসি।এ সময় তারা সড়ক অবরোধ করে রাখেন। সকাল ১১টার দিকে বিক্ষুদ্ধ কতিপয় লোকজন বাজারের ব্যবসায়ী সোহাগ সরদার, হরষিত রায়সহ ৪টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা করে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধের একাংশ ও নিহতের স্বজনরা ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সোহাগ সরদারের ভাই খোকন সরদারের তিনতলা বাসভবনে হামলা করে ব্যাপক ভাঙচুর করে। এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেন । বরিশাল ডিবি পুলিশ হামলা ভাঙচুরের অভিযোগে কারফা পাবলিক একাডেমীর দশম শ্রেনির ছাত্র শংকর ভাংড়াকে আটক করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে । এ সময় বিক্ষুব্ধরা ডিবি পুৃলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিশির কুমার পাল বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্তিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে জল্লা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ও জল্লা ইউনিয়ন স্বেচ্ছসেবকলীগের সভাপতি তাইজুল ইসলাম পান্নু, হরষিত রায় ও আইয়ুব হোসেনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।