গৌরনদী
গৌরনদীতে ২০ লক্ষ টাকার গাছ সোয়া দুই লক্ষ টাকায় বিক্রি
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশালের গৌরনদী বাসষ্টাÐ সংলগ্ন গয়নাঘাট ব্রিজের গোড়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমিতে থাকা শত বছর বয়সী বিশাল বিশাল মেহগনি, রেন্ট্রি ও চাম্বল ২০ লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি করেছে মাত্র দুই লক্ষ দুই হাজার সাতান্ন টাকায়। সংযুক্ত ভ্যাাট আইটি। এতে প্রায় সোয়া দুই লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের এক শ্রেনির কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগ সাজসে পানির দামে এ গাছ কিনে নিয়েছেন প্রভাবশালী এক ঠিকাদার মো. মহসীন হাওলাদার। স্থানীয় লোকজন ও গাছ ব্যবসায়ীরা জানান, বিক্রিত গাছের বাজার মূল্য কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা।
সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় লোকজন, গাছ ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা-বরিশাল-মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার গৌরনদী বাসষ্টাÐের সন্নিকটে গয়নাঘাট এলাকায় পুরাতন সেতুর স্থলে নতুন সেতু নির্মানের জন্য সড়ক ও জনপথ বিভাগ প্রকল্প গ্রহন করেন। সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবু হানিফ জানান, সড়ক ও জনপথ বিভাগেরওয়েষ্টার্ন ইনফ্রা ষ্টাকচার ব্রিজ ডেভলপমেন্টে প্রজেক্ট(ডবিøউ,আই,বি,পি) প্রকল্পে জাইকার অর্থায়নে সেতু নির্মানের জন্য ২০১৭-২০১৮ইং অর্থ বছরে সেতু নির্মান প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজের এলাকায় থাকা অতীব পুরানো গাছ অপসারনের জন্য ছয়শত মিটার জায়গার মধ্যে থাকা গাছ অপসারনে ১ থেকে ২০ পর্যন্ত মার্কিং করে দরপত্র গত ডিসেম্বরে দরপত্র আহবান করা হয়।
সওজ বিভাগ থেকে গত ২০ ফেব্রয়ারি দেয়া কার্যাদেশ অনুযায়ী দেখা যায়, গয়নাঘাট গৌরনদী ব্রিজ সংলগ্ন ছয়শত মিটারের প্যাকেচ নং -০১, লট নং-২, এল,আর,পি-১২৩র এক থেকে ২০টি গাছ দুই লক্ষ দুই হাজার সাতান্ন টাকায় গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর খাঞ্জাপুর গ্রামের প্রভাবশালী ঠিকাদার মো. মহসীন হাওলাদারের অনূকূলে কার্যাদেশ প্রদান করা হইল। গত শুক্রবার থেকে ঠিকাদার গাছ কর্তৃন করে সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করেন।
প্রকল্প স্থানে গিয়ে দেখা যায়, লেবার সর্দার আব্দুর রাজ্জাক বেপারীর ১০/১২ জন লেবার নিয়ে গাছগুলো অপসারনের কাজ করছেন। এ সময় স্থানীয়রা জানান, ঢাকা বরিশাল মহাসড়কের পাশে এই গাছগুলো শত বছরের বেশী সময় পূর্বে লাগানো হয়। বর্তমান বাজারে এই গাছের মূল্য কমপক্ষে ২০ লক্ষ টাকা। অথচ পানির দামে ওই গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। ঠিকাদার মহসীনের এক ঘনিষ্ঠজন জানান, মহসীন সরকারের কাছ থেকে দুই লক্ষ দুই হাজার সাতান্ন টাকায় গাছ ক্রয় করে স্থানীয় দুই গাছ ব্যবসায়ীর কাছে ১২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেন।
কয়েকজন গাছ ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তারা অবৈধ আর্থিক সুবিধা নিয়ে অনিয়ন ও দূর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের ঠিকাদার নির্বাচন করে ২০ লক্ষ টাকার সরকারি গাছ নামেমাত্র মূল্যে মহসীনকে কার্যাদেশ দিয়েছেন। পরবর্তিতে ঠিকাদার মহসীন দুই লক্ষ দুই হাজার সাতান্ন টাকার গাছ ১২ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেছেন। স্থানীয় গাছ ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমান, মো. নাসির উদ্দিন অভিযোগ করেন, প্রভাবশালী ব্যক্তি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোটা অংকের অনৈতিক চুক্তিতে নিজেদের মধ্যে নিকোজিশন করে নামেমাত্র মূল্যে কার্যাদেশ পান। ফলে ২০ লক্ষ টাকার গাছ ২ লক্ষ দুই হাজার সাতান্ন টাকায় বিক্রি হয়েছে। এতে সরকার বিরাট রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে। তারা বলেন, প্রকাশ্যে ওই গাছ বিক্রির নিলাম ডাকা হলে আমরা সর্বোচ্চ দামে ক্রয় করে নিতাম। কোন গাছ ব্যবসায়ীই দরপত্রে অংশ নিতে পারেনি। গাছগুলো অনেক পুরানো বিধায় অত্যাধিক মূল্যবান সম্পদে পরিনত হয়েছে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঠিকাদার মো. মহসীন হাওলাদার বলেন, আমি দরপত্রে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ দামে কার্যাদেশ পেয়েছি। অভিযোগ সম্পর্কে সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবু হানিফ বলেন, আমরা গাছ মার্কিং করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। সওজের নির্বাহী বৃক্ষপালনবিদ দরপত্র আহবান করে কার্যাদেশ দিয়েছে।