গৌরনদী
ফলোআপ ॥ জীবননাশের হুমকিতে মামলা করেননি ব্যবসায়ী, ছিনিয়ে নেওয়া টাকা ও ষ্টাম্প ফেরত
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ দাবিকৃত দশ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মেসার্স মদিনা মেডিকেল হলের মালিক মো. তুহিনকে অপহরন করে সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্র সংসদের নাট্য সম্পাদক ও কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য বেলাল রেজভী ও তার সহযোগীরা। জীবন নাশের হুমকির ভয়ে মামলা করতে পারেনি ব্যবসায়ী। গত মঙ্গলবার রাতে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ছিনিয়ে বিশ হাজার ও স্বাক্ষর নেওয়া ষ্টাম্প ফেরত দিয়েছে ছাত্রলীগ নেতা বেলাল রেজভী।
ব্যবসায়ী মো. তুহিন বলেন, আমাকে গৌরনদী পৌর মেয়র মো. হারিছুর রহমান ডেকে পাঠান এবং তার কাছে নেওয়ার কথা বলে মটরসাইকেল তুলে আশোকাঠী এলাকায় একটি পাকা ভবনে চার ঘন্টা আটকে রাখেন অপহরনকারী ছাত্রলীগ নেতা বেলাল রেজভী ও তার সহযোগীরা। পরবর্তিতে পকেটে থাকা বিশ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে সাদা ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন। এ সময় বিষয়টি থানা পুলিশসহ কাউকে না বলতে হত্যার হুমকি দেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে ছাড়া পেয়ে ফিরে আসার পরেও একাধিকার জীবন নাশের হুমকির কথা স্মরন করিয়ে বিষয়টি নিয়ে মুখ না খুলতে হুমকি দেয়। যে কারনে প্রান ভয়ে আমি মামলা করতে সাহস পাই নাই।
তুহিন আরো বলেন, গৌরনদী পৌর সভার ৬নং কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. আতিকুল ইসলামের মধ্যস্থতায় গত মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগ নেতা বেলাল রেজভী নিজেই আমার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে এসে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া বিশ হাজার টাকা ফেরত দেন। এ ছাড়া সাদা ষ্টাম্প কাগজে স্বাক্ষর নেওয়া ষ্টাম্পটি ফেরত দিয়ে দেন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া, দাড়ি টুপি রাখা অপরাধ। ওরা আমাকে জঙ্গির ভয় দেখিয়ে দশ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা বেলাল রেজভী মুঠোফোন ধরেননি। তবে ৬নং কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম তার মধ্যস্থতায় টাকা ও ষ্টাম্প ফেরত দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
এ প্রসঙ্গে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি ব্যবসায়ী তুহিন মৌখিকভাবে আমাকে অবহিত করেছে কিন্তু এখনো কোন লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উল্লেখ্য ছাত্রলীগ নেতা বেলাল রেজভী ও তার সহযোগীরা দশ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। না দেওয়ায় জেহাদী বইপত্র রয়েছে। টাকা না দিলে তোকে ধরিয়ে দেওয়া হবে। এক পর্যায়ে গৌরনদী পৌর সভার মেয়র মো. হারিছুর রহমান তোকে পার্টি অফিসে নিয়ে যেতে বলেছে। একটি মটরসাইকেলে তুলে নিয়ে পৌর মেয়রের কাছে না গিয়ে আমাকে আশোকাঠী এলাকায় একটি বিল্ডিং রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত আটকে রাখে। দশ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার জন্য বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ভয়ভীতি দেখায়। এক পর্যায়ে পকেটে থাকা নগত ২০ হাজার টাকা রেখে বিষয়টি কাউকে না জানানোর হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় ব্যবসায়ীকে।