গৌরনদী
গৌরনদীতে যুবলীগ নেতা গুলিবিদ্ধ?
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ দলীয় আভ্যন্তরীন কোন্দল ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের বেজহার এলাকায় গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত আড়াইটায় একটি মৎস্য ঘেরের মালিক ও মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মো. নাজমুল হোসেন(৩৬)কে কুপিয়ে জখম ও গুলিবিদ্ধ করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। আহত নাজমুল মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহর উপর হামলার এজাহারভূক্ত আসামি। গুরুতর অবস্থায় নাজমুল ও তার মাছের ঘেরের কর্মচারী জবেদ খলিফা ওরফে রসুল খলিফা(৪৫) বরিশাল হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুই রাউ- গুলি উদ্ধার করেছে।
আহত ব্যবসায়ী ও যুবলী নেতা মো. নাজমুল হোসেন(৩৬) অভিযোগ করে বলেন, প্রতি দিনের ন্যায় কাজ কর্ম শেষ করে আমি মাহিলাড়া ইউনিয়নের বেজহার এলাকায় (মহিষার বিল) নিজের মৎস্য ঘেরে ঘুমিয়ে পড়ি। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে মাহিলাড়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈকত গুহের নেতৃত্বে তার সহোদর সরকারি গৌরনদী কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক ও যুবলীগের সদস্য সলিল গুহ, মাহিলাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন কবিরাজের ভাতিজা ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা পলাশ কবিরাজ(৩২) যুবলীগ কর্মি শিপন সরদার(৩০)সহ ৫/৬ জন সন্ত্রাসী ধারাল অস্ত্র পিস্তল ও লোহার রড নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। আমাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে এক পর্যায়ে আমার ডান পায়ের উরুতে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। গুলি এপাশ দিয়ে ঢুকে ওপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। নাজমুলের মাছের ঘেরের কর্মচারী জবেদ খলিফা ওরফে রসুল খলিফা বলেন, গুলির শব্দ শুনে এগিয়ে এসে মালিক নাজমুলকে রক্ষায় চেষ্টা করি। এসময় হামলাকারীরা আমাকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করেছে । আমি ডাক চিৎকার দিয়ে আশপাশের লোকজন জড়ো করতে চেষ্টা করলে চেয়ারম্যান সৈকত গুহসহ সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। মাহিলাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমা-ার(সাংগঠনিক) আনোয়ার হোসেন রারি জানান, নাজমুলের উপর হামলার খবর পেয়ে রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাকে উদ্ধার করে রাত পোনে ৫টার দিকে বরিশাল রাহাত আনোয়ার (প্রাইভেট) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বরিশাল রাহাত আনোয়ার (প্রাইভেট) হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, রোগী নাজমুলের কানে ও মাথায় রক্তাক্ত জখম রয়েছে এছাড়া ডান পায়ের উরুতে ক্ষত রয়েছে। তার অবস্থা গুরুতর। উরুর রক্তাক্ত ক্ষতটি গুলির কিনা তা নিশ্চি হওয়ার জন্য কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে বিষয়টি নিশ্চিত করা যাবে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিপ করেননি। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। মৌখিকভাবে শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে ওই এলাকা থেকে দুই রাউ- গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।
দলীয় সুত্র জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মাহিলাড়া ইউনিয়ন আ.লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমা-ার(সাংগঠনিক) আনোয়ার হোসেন রারির সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈকত গুহের বিরোধ চলে আসছিল। বিরোধকে কেন্দ্র সোমবার রাতে অ. লীগ নেতা আনোয়ার রারির সমর্থকরা মাহিলাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সৈকত গুহের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। ওই ঘটনার জের ধরে নাজমুলের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।