গৌরনদী
প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩৩ নারীকে বিয়ে, অবশেষে পুলিশের খাচায়
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারনার মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে ৩৩ নারী ও কিশোরীকে বিয়ে করেছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়ননের দক্ষিন বাগধা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র সান্টু সরদার ওরফে কালাম(৪২)। সর্বশেষ অপহারন করে আগৈলঝাড়ার মাদ্রাসা ছাত্রী (১৫)কে। শুক্রবার দিবাগত রাতে অবশেষ আগৈলঝাড়া পুলিশ অপহৃতাকে উদ্ধার করে অপহরনকারী ৩৩ বিয়ের প্রতারক সান্টু সরদারকে গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল রবিবার অপহৃতার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল ও সান্টু সরদারকে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন, পুলিশ ভূক্তভোগীরা জানান, গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার এক কিশোরী ও মাদ্রাসার ছাত্রী (১৫) পয়সারহাট গ্রামে মামা বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করেন। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে বরিশালের আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট সেতু দেখতে এসে ঘোরাঘুড়ির এক পর্যায়ে সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার পথে পৌছলে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিন বাগধা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র সান্টু সরদার ওরফে কালাম(৪২) ৫/৬জন সহযোগী সন্ত্রাসীকে নিয়ে কাজলীকে অপহরন করে মটরসাইকেল যোগে নিয়ে যান। ওই দিন রাতে এ ঘটনায় অপহৃতার পিতা ফজলুল হক খান বাদী হয়ে সান্টু সরদারসহ পাঁচ জনকে আসামী করে আগৈলঝাড়া থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন।
আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অপহরনের এক মাস পর আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ ঢাকা কুড়িল থানা পুলিশের সহায়তায় শুক্রবার দিবাগত রাতে কুড়িল এলাকার একটি বাসায় অভিযান অপহৃতকে উদ্ধার ও অপহরনকারী সান্টু সরদারকে গ্রেপ্তা করে শনিবার আগৈলঝাড়া থানায় নিয়ে আসেন। অপহৃতা জানান, মাদ্রাসায় আসা যাওয়ার পথে সান্টু সরদার তাকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে অপহরনের হুমকি দিয়ে আসছিল। মাদ্রাসা ছাত্রী অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার দিন বাড়ি ফেরার পথে পয়সারহাট এলাকার কাছে পৌছলে সন্ধ্যায় সন্ত্রাসী সান্টু তার দলবল নিয়ে মুখ চেপে মটরসাইকেলে তুলে আমাকে অপহরনকরে নিয়ে যায়। অপহরনের পর ঢাকার কুড়িল এলাকার নির্জন বিলে আমাকে আটকে রাখে এবং আমাকে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এতে আমি রাজি হলে আমাকে আটকে বেদমভাবে মারধর করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক আমাকে ধর্ষন করেছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক(এসআই) জাহিদুর রহমান বলেন, অপহৃতাকে অপহরন করে নেওয়ার পরে আটকে শারীরিক নির্যাতননহ ধর্ষন করা হয়েছে। তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনে জখমের চিহ্ন রয়েছে। অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতারক সান্টু সরদার পুলিশী জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ৩৩ নারী ও কিশোরাীকে বিয়ের কথা স্বীকার করেছে।
দক্ষিন বাগধা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম সরদার, গ্রামের কাইয়ুম সরদার ও কবির খান বলেন, সান্টু সরদার প্রতারনা করে তার নিজের গ্রামে ৫/৬টি মেয়র জীবন নষ্ট করেছে। ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মিন্টু মিয়া জানান, বখাটে সান্টু সরদার উজিরপুর, কোটালীপাড়া, গাজীপুর, ঢাকাসহ বিভিণœ স্থানে মেয়েদের সঙ্গে প্রতারনা করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করে পরে মেয়রা যখন জানতে পারে সে প্রতারক তখন নিজেরাই চলে যায়। বাগধা গ্রামের না প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূক্তভোগী দুই নারী জানান, প্রতারক সান্টু সরদার যতগুলো মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে ওর কঠোর বিচার হওয়া উচিত। আগৈলঝাড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, গতকাল রবিবার অপহৃতার ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল ও গ্রেপ্তারকৃত অপহরনকারী সান্টু সরদারকে আদালতের মাধ্যমে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।