গৌরনদী
ভূয়া ওয়ারেন্টে ১০ দিন ধরে জেল হাজতে রয়েছেন আগৈলঝাড়ার এক দিনমজুর
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ ঢাকার শাহ আলী থানার ভূয়া মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেডে আদালতের ভূয়া ওয়ারেন্টে বরিশালের আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ গ্রেফতার করেছে এক দিনমজুরকে। গত ১০ দিন ধরে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে জেল হাজতে রয়েছেন ওই দিনমজুর।
আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ জানান, গত ২৮ আগষ্ট থানায় আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের বাকাল গ্রামের মৃত হরিপদ দাসের পুত্র দিনমজুর উৎপল দাস(৪৫)র ও তার ছোট ভাই গৌতম চন্দ্র দাস(৪০)র নামে ঢাকা শাহ আলী থানার মামলা নং-৩৭(২)১৭ নং মামলার ওয়ারেন্টে থাকার আদেশ থানায় আসে। এ সময় থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক তা তামিল করার জন্য উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. জাহিদ হোসেনকে দায়িত্ব প্রদান করেন। এসআই জাহিদ গত ১ সেপ্টেম্বর উৎপল দাসকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতে সোপর্দ করেন। আদালতের বিচারক তাকে বরিশালে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সেই থেকে হতদরিদ্র দিনমজুর উৎপল অদ্যবধি জেল হাজতে রয়েছেন। ছোট ভাই গৌতম দাস পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
ঢাকা শাহ আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে আমার থানায় ১৮টি মামলা রেকর্ড হয়। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল গ্রামের উৎপল দাসকে যে মামলায় আসামি দেখানো সেই মামলা ৩৭। হয়তো এটা কোন প্রতারক চক্রের কাজ হয়ে থাকতে পারে।
দিন মজুরের বোন সবিতা রানী দাস(৩৫) জানান, তার অসহায় হতদরিদ্র দাদা দিন মজুরের কাজ করে পরিবার পরিচন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ১০দিন জেল হাজতে থাকায় পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভূয়া মামলার ভূয়া ওয়ারেণ্ট দিয়ে তাদেরকে হয়রানী করা হচ্ছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, একই গ্রামের মৃত সতীস দাসের পুত্র গবিন্দ দাস(৪৫) তার সহদর দীপক দাস(৩৫) ও তাদের সহযোগীরা জাল জালিয়াতি করে মোগো সম্পত্তি আত্মসাতের চেষ্টা চালায়। এ ঘটনায় দাদা উৎপল দাস বাদি হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় জালিয়াতির মামলা করলে পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। ওই মামলাটি তদন্ত শেষে গত ২ জুন পুলিশ আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দাদা উৎপল দাসকে হয়রানীর করার উদ্দেশ্যে প্রতিপক্ষ জালিয়াতি করে ভূয়া মামলার ভূয়া ওয়ারেন্ট বের করে পুলিশ দিয়ে গ্রেফতার করিয়ে হয়রানী করেছে। অভিযোগ সম্পর্কে গবিন্দ দাস ও তার সহদর দীপক দাসের কাছে জানতে চাইলে তারা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওয়ারেনেটর সঙ্গে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এ প্রসঙ্গে বলেন, থানায় ওয়ারেন্টে এসেছে দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তা তা তামিল করেছে। বিষয়টি সম্পর্কে অভিযোগ পেয়েছি ওয়ারেন্টে ভূয়া কিনা সেটি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।