গৌরনদী
একশ’ টাকা চুরির অপবাধে ॥ গৌরনদীতে মাদ্রাসা ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় চার শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, দুই শিক্ষক গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদীতে একশ’ টাকা চুরির অপবাধ দিয়ে মাদ্রাসার তৃতীয় শ্রেনীর (তৃতীয় জামাতের) শিশু ছাত্রী (৮)কে মুখে গামছা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় গতকাল শনিবার নির্যাতিতার মা রেনু বেগম বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মাদ্রাসার প্রধান সুপার (বড় খালামনি) খাদিজা আক্তারসহ চার শিক্ষককে আসামি করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিকেলে লিজা আক্তার ও হাফিজা খাতুন নামে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত বৃহস্পতিবার রাতে খাদিজাতুল কোবরা (রাঃ) মহিলা কওমী মাদ্রাসার আবাসিক হলের তৃতীয় শ্রেনীর (তৃতীয় জামাতের) ছাত্রী কামরুন নাহার সুমাইয়াকে একশ’ টাকা চুরির অপবাধ দিয়ে মাদ্রাসার সুপার (বড় খালামনি হিসেবে পরিচিত) খাদিজা আক্তার ও মেঝ খালামনি এবং বাংলা খালামনি সুমাইয়ার মুখে গামছা বেঁধে অমানুষিকভাবে নির্যাতন চালায়। শুক্রবার সকালে মাদ্রাসার এক ছাত্রী গোপনে বিষয়টি ফোন করে মা রেনু বেগমকে জানান। ওই দিন মা রেনু বেগম খবর পেয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। রেনু বেগম বলেন, বড় খালামনি খাদিজা আক্তারের নির্দেশে মুখে গামছা বেধে আবাসিক হলের মেঝ খালামনি গুনে গুনে তার মেয়েকে ৬০টি ও বাংলা খালামনি ১০০টি বেত্রাঘাত করে জখম করেছে। শিক্ষক হয়ে এভাবে কি করে একটি শিশুকে অমানবিকভাবে নির্যাতন চালঅয়। এরা কি সন্তান নাইা, এরা শিক্ষক নামের কলঙ্ক। আমি এদর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই
গতকাল শনিবার দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় “একশ টাকা চুুরর অপবাধে ছাত্রীর মুখ বেধে নির্যাতন” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ হাসপাতালে শিশুটিকে দেখতে যান। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে পদক্ষেপ গ্রহন করেন। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) শরিফ আহম্মেদ বলেন, শিশুটিকে বেদমভাবে মারধর করার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত ছাপ ছাপ দাগ রয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার (বড় খালামনি হিসেবে পরিচিত) খাদিজা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, চুরির ঘটনায় ছাত্রী সুমাইয়াকে মাদ্রাসার খালামনিরা শাসন করেছে যা গুরুতর নয়। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, নির্যাতিত শিশুর মা রেনু বেগম বাদি হয়ে মাদ্রাসার প্রধান সুপার (বড় খালামনি) খাদিজা আক্তারসহ চার শিক্ষককে আসামি করে গতকাল শনিবার গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। লিজা আক্তার ও হাফিজা খাতুন নামে এক শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যান্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।