গৌরনদী
গৌরনদী মডেল থানার ওসি ক্লোজ ॥ মাদক নির্মূলের অন্তরালে চলছিল পুলিশের রমরমা বানিজ্যে
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় পুলিশের মাদক বিরুধী অভিযান ও মাদক নির্মূলের অন্তরালে শুরু হয় পুলিশের রমরমা বানিজ্য। মাদকের ভয় দেখিয়ে পুলিশ বেপরোয়া চাাঁদাবাজি করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পুলিশের চাঁদাবাজির শিকার অধিকাংশই প্রবাসী ও ব্যবসায়ীর। পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন প্রতিকার পাচ্ছিল না সাধারন মানুষ। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ কবির প্রধানমন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে ও বরিশাল ডিআইজি তার ভাই পরিচয় দিয়ে নির্বিগ্নে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। অবশেষে গতকাল সোমবার ওসি ফিরোজ কবিরকে বরিশাল পুলিশ অফিসে ক্লোজ করে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। ফিরোজ কবিরকে পুলিশ অফিসে ক্লোজ করার সত্যতা স্বীকার করেছেন বরিশাল পুলিশ সুপার এস,এম, আকতারুজ্জামান।
পুলিশ, হয়রানীর শিকার, মাদক ব্যবসায়ী, প্রবাসী ও ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সম্প্রতি সময়ে বরিশালের গৌরনদীতে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২ এপ্রিল গৌরনদী মডেল থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন মো. ফিরোজ কবির। তিনি গৌরনদী থানায় যোগদান করেই সংবাদ কর্মি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মি ও স্থানীয় সাংসদের সঙ্গে মতবিনিময় করে । এসব সভা সমাবেশে ওসি ঘোষনা করেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে মাদক নির্মূলে বিশেষ এ্যাসাইমেন্ট দিয়ে গৌরনদীতে পাঠিয়েছে এবং বরিশালের ডিআইজি মারুফ হাসান তার বড় ভাই। তিনি (ওসি) মাদকের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে বলেন, হয় গৌরনদীতে মাদক থাকবে নয়তো ওসি ফিরোজ থাকবে। নবাগত ওসির মাদক বিরোধী কার্যক্রমে সমর্থন ও উৎসাহ দেন স্থানীয় সাংসদ আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ । তিনি আওয়ামীলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মিদের সভা ডেকে ওসির মাদক বিরোধী কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগীতার নির্দেশ দেন। তিনি (সাংসদ) নেতা কর্মিদের প্রতি কঠোর হুসিয়ারি উচ্চারন করে বলেন, যদি কোন নেতা কর্মি মাদকসক্ত ও ব্যবসায়ীর পক্ষে তদবির তাকেও গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। যোগদানের পরে দেড় মাস যেতে না যেতে সর্ব মহলের সমর্থন নিয়ে সমর্থনের অপব্যবহার করে ওসি ফিরোজ কবির মাদক নির্মূলের অন্তরালে বানিজ্য শুরু করেন।
শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদসহ স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেনি পেশার মানুষ জানান, শুরুতে ওসি ফিরোজ কবির তার ঘোষনা অনুযায়ী কাজ করে মাদক নির্মূলে অনেকটাই সফলতা লাভ করেন। এক মাসে গৌরনদীর প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী হিরা মাঝি, মানিক মাঝি, নুরজাহানসহ একশত আঠাস জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৯৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ- প্রদান করেন এবং ৩০ জনকে নিয়মিত মামলায় জেল হাজতে প্রেরন করেন। ফলে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি বন্ধসহ মাদক ব্যবসায়ীরা গা ঢাকা দেন। মাদক অনেকটা নির্মূল হওয়ায় সাধারন মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়তে না ছাড়তেই ব্যবসায়ী ও প্রবাসীসহ নিরহ মানুষের মধ্যে পুলিশের চাঁদাবাজি ও নির্যাতন নিয়ে নতুন আতংকে দেখা দিয়েছিল। অনেকেই পুলিশের চাঁদাবাজির শিকার হলেও গ্রেপ্তার, মামলা ও নির্যাতনের ভয়ে কেউই মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছিল না।
জন প্রতিনিধি, ব্যবসায়ীরা জানান, গত ২৫ মে গৌরনদী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে মাদক বিরোধী কনসার্টের আয়োজন করে পুলিশ। ওসি ফিরোজ কবির কনসার্টের নামে গৌরনদীর উপজেলায় ব্যাপক চাঁদাবাজি করেছে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান ও দশ জন ইউপি সদস্যরা জানান, মাদক বিরোধী কনসার্ডের নামে ওসি ফিরোজ কবির প্রত্যেক ইউপি চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ১০ হাজার ও সদস্যদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা করে চাঁদা দিতে বাধ্য করেন। একাধিক ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, কনসার্ট করার নামে পুলিশ চাঁদা দিতে তাদেরকে বাধ্য করেছে। খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. নুর আলম সেরনিয়াবাদ, বাটাজোর চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদার, চাঁদশী চেয়ারম্যান কৃঞ্চ কান্ত দে ও ৫ জন ইউপি সদস্য চাঁদা দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।
খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক আরজ আলী অভিযোগ করেন, গত ২০ জুলাই ওসি ফিরোজ কবির তাকে ডেকে জানান, তার পুত্র বরিশাল বি,এম কলেজের ছাত্র রায়হান সরদারের বিরুদ্ধে মাদকের অভিযোগ আছে তিন লক্ষ টাকা না দিলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। আরজ আলী টাকা না দেওয়ায় পরবর্তিতে ডিআইজির বরাত দিয়ে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে বলেন। আরজ আলী তা না দেওয়ায় গত ২৭ জুলাই রাতে সাড়ে ১০টায় রায়হাননকে ইয়ারার রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার করে। গৌরনদী বাসষ্টা-ের ষ্টিল ফার্নিসার্সের ব্যবসায়ী মোঃ মোকলেচুর রহমান অভিযোগ করেন, ২৮ জুলাই দুপুর ১২টায় গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস ষ্টেশনের সামনে তার দোকানের কর্মচারী সাগর মিয়াকে মটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চান। কাগজপত্র দেখানোর পরে এক পর্যায়ে তাকে ইয়াবা দিয়ে গ্রেপ্তারের ভয় দেখায়। খবর পেয়ে তিনি গিয়ে এর প্রতিবাদ করলে ওসি ফিরোজ কবির ওই দিন রাতে তাকে থানায় ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করে আটকে রাখেন। পরে গৌরনদী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জোবায়ের ইসলাম সান্টুর মধ্যস্থতায় ছেড়ে দেন।
নির্যাতিত পরিবারের সদস্য জানান, গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের মো. মোসলেম সরদারের পুত্র মনির সরদার(৩২) ২০১৪ সালের মে মাসে জীবিকার তাগিতে কাতার যান। ১৫/২০দিন আগে ছুটিতে বাড়িতে আসেন। মনিরের বাবা মোসলেম সরদার (৬৮) জানান, মনির বাড়িতে আসার কয়েক দিন পরে পুলিশ বাড়িতে এসে তার নামে গৌরনদী থানায় ওয়ারেণ্ট আছে বলে তাকে খুঁজতে থাকে। পুলিশের ভয়ে মনির আত্মগোপন করেন। পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বিদেশ যাওয়ার এক মাস ১১দিন পরে গৌরনদী মডেল থানায় দায়ের করা দুটি মাদক মামলার ওয়ারেণ্টভূক্ত আসামি মনির। ৯ মে গৌরনদী মডেল থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক(এএসআই) মো. মহিউদ্দিন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গৌরনদী উপজেলার ভূরঘাটা এলাকা থেকে মনির সরদারকে গ্রেপ্তার করেন।
মনির সরদারের চাচা বেসরকারী কলেজ শিক্ষক প্রভাষক এস,এম, রাসেল অভিযোগ করে বলেন, ভাতিজা মনিরকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ আমাদের কাছে তিন লক্ষ দাবি করেন। টাকা না দিলে মনিরের অবস্থা বেহাল করে এক শত পিস ইয়াবাসহ মামলা দিয়ে কোর্টে চালান দেওয়ার হুমকি দেন।
মোসলেম সরদার অভিযোগ করে বলেন, ছেরে খালি হাতে দেশে ফিরছে তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার মত অবস্থা নাই বিষয়টি দারোগা মহিউদ্দিনকে জানালে সে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আমারে বলেন, এতদিন বিদেশ থেকে এসেছে টাকা নাই, তয় মজা দেখাইতেছি বলেই মনিরকে মারধর শুরু করেন। বলেন, পুলিশ মোর বাবাকে পিটিয়ে সারা শরীর দিয়ে রক্ত বাইর করছে। প্লাস দিয়ে হাতের বুড়ো আঙ্গুল চেপে রক্ত বাইর করেছে। এক পর্যায়ে ডান হাতের গোড়া ও কব্জি ভেঙ্গে দিয়েছে।
মনিরের বোন শিল্পী বেগম(২৫) বলেন, আমার ভাইকে পুলিশ অমানবিক নির্যাতন করেছে। মুখ বেধে হ্যা-কাপ পড়াইয়া মাথা দুই ঠ্যাং এর নিচে ঢুকিয়ে পিটিয়ে পিঠ থেতলে দিছে। মনিরের অবস্থার অবনতি ঘটলে মঙ্গলবার রাত পোনে ১টায় মনিরকে বরিশাল পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত ৮ জুন গৌরনদী পৌর সদরের পালরদী এলাকার ইয়াবা বিক্রেতা মৃত ফজু সরদারের পুত্র ফয়সালকে স্থানীয় যুবক হাবিব হাওলাদার পিতা (সিদ্দিক হাওলাদার)আটক করে মারধর করেছে। বিষয়টি পুলিশ জানতে পেরে হাবিবকে আটক ইয়াবা মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। পরবর্তিতে প্রভাবশালী এক ছাত্রলীগ নেতার সুপারিশে ৪০ হাজার টাকায় দফারফা করে হাবিব পুলিশের হাত থেকে রেহাই পর। ওই ছাত্রলীগ নেতা এসআই সগির হোসেনকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে হাবিবকে মুক্ত করে আনার কথা স্বীকার করেন। ৩ মে উপজেলার আধুনা এলাকা থেকে ১০পিস ইয়াবাসহ সঞ্জয় দাস নামে এক মাদক বিক্রতাকে পুলিশ আটক করে পরে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টিখাসার এলাকা থেকে মাদক বিক্রেতা রুমন(২৩)কে আটক করে পুলিশ। তার দেহ তল্লাসী করে১৮পিস ইয়াবা ও নগত ৫ হাটজার টাকা পান। পরে পুলিশ ইয়াবা ও টাকা নিয়ে রুমনকে ছেড়ে দেন। ২৫ এপ্রিল ভূরঘাটা এলাকা থেকে ইয়াবাসহ সোবাহান মৃধাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন পরে ২০ হাজার টাকা নিয়ে ছেড়ে দেন।
গত ২ জুন দক্ষিন বিজয়পুর এলাকা থেকে এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ফেরদৌসকে আটক করে পুলিশ। পরে ৫০ হাজার যুক্তিতে তাকে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করেন। আদালত তাকে ৫ হাজার টাকা জড়িমানা করেন। ৮ জুন গৌরনদীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আনোয়ারা ক্লিনিকের এমডি মো. হেদায়েত উল্লাহকে ওসি ফিরোজ কবির থানায় ডেকে নেন। হেদায়েত জানান, ওসি ফিরোজ কবির তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরন করে এক পর্যায়ে চোখের সামনে হ্যা- ঝুলিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতে সাজা পাওয়া কয়েকজন জানান, তারা ওসিকে টাকার বিনিময়ে তাদের ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করেছে।
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরের মদিনা মার্কেটের মালিককে ভয়ভীতি দেখিয়ে এক লক্ষ চল্লিস হাজার টাকা হাতিয়ে নেন গৌরনদী মডেল থানার এএসআই মো. দেলোয়ার হোসেন। অভিযোগ পাওয়ার পরে গৌরনদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(এএসপি)র নির্দেশে ওই টাকা ফেরত দেন এএসআই মো. দেলোয়ার । পরবর্তিতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে ৮০ পিস ইয়াবা রেখে মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ব্যবসায়ীকে বরিশাল ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতে সোপর্দ করেন ।
গৌরনদী বন্দরের ইট বালু ব্যবসায়ী মো. ছবেদ আলীর লিখিত অভিযোগ জানা গেছে, গত ২১ মে রাত সাড়ে ৯টায় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে তার সহব্যবসায়ী আলমগীর সরদার, ইউসুফ সরদার, মোকলেস সরদারসহ ৪/৫ জন নিজেদের মধ্যে হিসাব নিকাস ও ব্যবসায়িক লেনদেন করছিলেন। এ সময় গৌরনদী মডেল থানার এএসআই মো. দেলোয়ার হোসেন মো. দেলোয়ার হোসেনকনষ্টবল মোহাম্মদ আলীসহ ৭/৮ জন ফোর্স একত্রে ঘটনাস্থলে সাদা পোষাকে উপস্থিত হন। ব্যবসায়ী ছবেদ আালী অভিযোগ করে বলেন, এএসআই দেলোয়ার কোন কথাবার্তা না বলেই অতর্কিতভাবে আমার দোকানের মালামাল তছনছ শুরু করে তল্লাসির নামে তা-ব চালিয়ে আতংক সৃষ্টি করে। কিছু না পাওয়ার পরে আমার ক্যাস বাক্সে থাকা ৩০ হাজার ৬শত ২০ টাকা ছিনিয়ে নেন এবং আমাদের সবাইকে থানায় নিয়ে চার ঘন্টা আটকে রাখেন। চার ঘন্টা পরে আমাদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কাউকে কিছু না বলার শর্তে হুমকি দিয়ে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে ছেড়ে দেন।
গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের পূর্ব সমরসিংহ গ্রামের আঃ রব রাঢ়ী অভিযোগ করেন, তার কন্যা অষ্ঠম শ্রেনির ছাত্রী(১৪)র গোসলের ছবি একই গ্রামের হান্নান সরদারভিডিও করে তাকে জিম্মি করে অসামাজিক কাজে বাধ্য করতে চেষ্টা করে। এ ঘটনায় বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন আদালতে পন্যগ্রাফি ও নির্যাতন আইনে মামলা রুজু করা হয়।
স্কুল ছাত্রীর বড় ভাই আ. জলিল রাঢ়ী জানান, আসামি হান্নানের বিরুদ্ধে মামলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে হান্নান ও তার সহযোগীরা গত ২০ এপ্রিল তার বোনকে অপহরন করেন। এ ঘটনায় বড় তিনি (বড় ভাই জলিল) বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। আ. জলিল অভিযোগ করেন, মামলা দায়েরের পর ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন এসআই সগির হোসেন। এসআই সগির তার কাছে আসামি ধরা ও অভিযোগপত্র দাখিলের জন্য ৪০ হাজার টাকা দাবি করেন। হাতে নগত টাকা না থাকায় জমি বিক্রি করে ৪০ হাজার টাকা যোগার করতে বিলম্ব হয়। টাকা যোগার করে নিয়ে গেলে এসআই জানান, এখন আর টাকা দিলেও কাজ হবে। পরে জানতে পারি আসামি হান্নানের কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহন করে আসামিদের পক্ষে মামলাটি ফাইনাল রিপোর্ট দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে এসআই সগির হোসেন। এ ঘটনায় অপহৃতা স্কুল ছাত্রীর ভাই খলিলুর রহমান ৬ এপ্রিল বরিশাল পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বরিশাল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানান, ভূক্তভোগীদের লিখিত ও মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে গৌরনদী মডেল থানার ওসি ফিরোজ কবিরকে গতকাল সোমবার বরিশাল পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ কবিরের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে অস্বীকার করে বলেন, আমাকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ বরিশাল পুলিশ অফিসে যুক্ত করেছে তবে কোন অভিযোগের ভিত্তিতে নয়। । বরিশাল পুলিশ অফিসে ক্লোজ করার কথা স্বীকার করে বরিশাল পুলিশ সুপার এস,এম, আকতারুজ্জামান বলেন, প্রশাসনিক কারনে তাকে ক্লোজ হয়েছে।