গৌরনদী
ধর্ষক গ্রেপ্তার, কলেজ অফিস সহকারী বরখাস্ত ॥ উজিরপুরে কলেজ ছাত্রী ধর্ষন, গৌরনদীতে শ্লীলতাহানি
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের উজিরপুরে বিএন খান ডিগ্রী কলেজর স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রীকে ধর্ষন করেছে বরিশাল পলিটেকনিক্যাল কলেজের ৫ম বর্ষের ছাত্র ও প্রতারক অরিফুল। অপরদিকে গৌরনদীর মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের অফিস সহকারী কলেজে ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে নির্জন কক্ষে নিয়ে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষনে ব্যর্থ হয়ে শ্লীলতাহানি করেছে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উজিরপুরের ঘটনায় ধর্শককে গ্রেপ্তার করে বুধবার জেল হাজতে প্রেরন করেছে পুলিশ এবং গৌরনদীর ঘটনায় কলেজের অফিস সহকারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, উজিরপুর উপজেলার মূলপাইন গ্রামের মালেক সেরনিয়াবাদের পুত্র ও বরিশাল পলিটেকনিক্যাল কলেজের ৫ম বর্ষের এক ছাত্র প্রতারক আরিফুল ইসলাম সেরনিয়াবাদ(১৯) উজিরপুরের গারিয়াগাভা গ্রামের কন্যা ও উজিরপুর বি.এন.খান ডিগ্রী কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের মেধাবী ছাত্রী (১৭)কে উত্যক্ত করে আসছিল। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারক আরিফুল কলেজ ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। অবাধে মেলামেশা শুরু করেন।
প্রতারনার শিকার কলেজ ছাত্রী অভিযোগ করেন, গত ৩ জুলাই প্রতারক বরিশাল পলিটেকনিক্যাল কলেজের ছাত্র আরিফুল তাকে বিয়ের কথা বলে তার নানা উজিরপুর উপজেলার গাব বাড়ি মৃত কাদের ঢালীর বাড়ীতে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পরে বিয়ে না করে রাতভর আটকে রেখে পুনরায় তাকে ধর্ষনের চেষ্টা চালায়। এ সময় কলেজ ছাত্রী ডাক চিৎকার দিলে এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে কলেজ ছাত্রকে আটক করে মারপিট দিয়ে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। কলেজ ছাত্রী বলেন, প্রতারক আরিফুল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে আমাকে এক বছর যাবত ধর্ষন করেছে। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, ওই ঘটনায় কলেজ ছাত্রী বাদি হয়ে প্রতারক আরিফুলকে আসামি করে মডেল থানায় একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ অসামি আরিফুলকে গ্রেপ্তার করে বুধবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ধর্ষিতার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন ও আদালতে জবাববন্দি রেকর্ড করা হয়েছে।
অপরদিকে বরিশালের মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজের অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী মো. কামাল হোসেনের ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে কলেজে ভর্তিইচ্ছুক ছাত্রী যৌন হয়রানরী করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)র কাছে দেয়া লিখিত অভিযোগে বলা হয়, এ বছর এসএসসি পাশ করে মাহিলাড়া ডিগ্রী কলেজে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করেন এক ছাত্রী। অনলাইন আবেদনে একমাত্র মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ পছন্দের তালিকায় দেন। কিন্তু জিপিএ কম থাকায় প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয়বারের ভর্তি ফলাফলে তার নাম চুড়ান্ত ফলাফলে আসে নাই। পরবর্তিতে ওই কলেজে ভর্তির জন্য অফিস সহকারী কামাল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কামাল হোসেন ছাত্রীকে গত ২০ জুন কলেজে দুপুরে কলেজ আসতে বলেন। কামালের কথা অনুযায়ী ছাত্রী ওই দিন কলেজে পৌছলে কামাল হোসেন তাকে কলেজের দোতালায় পাঠকক্ষে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। ছাত্রী বিষয়টি কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফিরোজ ফোরকান আহম্মেদকে জানান।
অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে কলেজের অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী মো. কামাল হোসেন বলেন, কয়েকজন বহিরাগত অফিস কক্ষে ঢুকে আমাকে মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। হামলাকারীরাই ছাত্রীকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌণ হয়রানির অভিযোগকরিয়েছে।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফিরোজ ফোরকান আহম্মেদ জানান, এ নিয়ে গত বৃহস্পবিার এক জরুরী সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামি রবিবার থেকে পরবর্তি ৫ কর্ম দিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। মাহিলাড়া ডিগ্রি কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার, মো. শরিফ আহম্মেদ বলেন, অভিযুক্ত অফিস সহকারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্বান্ত গ্রহন করা হবে।