গৌরনদী
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঢুকে অফিস কক্ষে চিকিৎসকের উপর সন্ত্রাসী হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ পরীক্ষা নিরীক্ষায় ভূয়া এক্সে রিপোর্ট সনাক্ত করে রোগীকে ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগে গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় বরিশালের গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শিমুল চন্দ্র দাসের উপর শাপলা প্যাথলজি মালিকের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে পিটিয়ে গুরুতরভাবে আহত করেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার চিকিৎসক বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
স্থানীয় লোকজন, হাসপাতালের কর্মচারি ও পুলিশ জানান, গত রবিবার রাতে জরুরী বিভাগে অফিস কক্ষে দায়িত্ব পালন করছিলেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শিমুল চন্দ্র দাস। রাত সোয়া ৯টার দিকে আগৈলঝাড়া উপজেলার দত্তেরাবাদ গ্রামের মৃত সোবাহান সরদারের পুত্র মো. মালেক সরদার(৫৫) তার হাত ভাঙ্গা নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক শিমুল তাকে কবজির জয়েন্টর এক্সে করতে বলেন। রোগী মালেক এক্সে করতে হাসপাতাল চত্বরে শাপলা প্যাথলজিতে যান। কিছুক্ষন পর শাপলা প্যাথলজি থেকে এক্সে করে রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে ফিরে আসেন।
চিকিৎসক শিমুল দাস জানান, রোগীকে হাতের কবজি ভাঙ্গায় জয়েন্টে এক্সে করতে বলা হয়েছে কিন্তু প্যাথলজি কর্তৃপক্ষ তা না করে হাতের আঙ্গুলের আংশিক এক্সে করে দেন। যাহা পরীক্ষা সঠিক ছিল না। তিনি রোগীকে বিষয়টি বললে রোগী পুনরায় শাপলা প্যাথলজির মালিক সোহেল সরদার(৩৫)কে গিয়ে বলেন। এসময় সোহেল রোগীকে এটাই সঠিক বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কর। রোগী এ রিপোর্ট মেনে নিতে না চাইলে সোহেল সরদার ও তার কর্মচারীরা রোগী মালেককে মারধর করে।
চিকিৎসক শিমুল অভিযোগ করে বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে শাপলা প্যাথলজির মালিক সোহেল সরদার আমার অফিস কক্ষে এসে তার প্যাথলজিতে করা এক্সে রিপোর্টকে কেন সঠিক নয় বলল জানতে চান এনিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সোহেল আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করেছে। এর জের ধরে কিছুক্ষন পর সোহেল সরদারের শ্যালক ও তার শাপলা প্যথলজির কর্মচারী শাহিন সিকদার(২৭) অফিস কক্ষে ঢুকেই আমাকে অতর্কিতভাবে থাপ্পর চোপর দিতে থাকে। এসময় আমি পড়ে গেলে হামলাকারীরা আমাকে বেদম মারধর করেছে। এক পর্যায়ে আমার চোখ থেকে চশমা খুলে নিয়ে মাটিতে ফেলে পা দিয়ে পিসে গুড়িয়ে দেয় এবং হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা, এস,এম, কবীর হাসান বলেন, সন্ত্রাসীদের কাছে এখানকার চিকিৎসকরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। এক সপ্তাহ আগে সোহেল সরদারের হাতে গাইনী কনসালটেন্ডে ডা. বিপুল বিশ্বাস লাঞ্চিত হন। সে প্রায়ই চিকিৎসকদের সঙ্গে দূর্ব্যবহার করে এবং নানানভাবে চিকিৎসকদের হয়রানী করে আসছে। আমরা বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। এর দৃষ্ঠান্তমূলক বিচার চাই। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ কবির বলেন, এ ঘটনায় চিকিৎসক শিমুল চন্দ্র দাস বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় গতকাল সোমবার একটি মামলা দায়ের করেছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।