গৌরনদী
আগৈলঝাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা বাছাই কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করার ঘটনায় মামলা দায়ের
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ও বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র স্বাক্ষর জাল করে সনদ তৈরী ও সুপারিশ পত্র তৈরীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, গত ১৭ মে আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরে জেলা পরিষদ ডাকবাংলোয় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি, বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহসহ কমিটির সদস্যরা উপস্তিত ছিলেন। ওই সভায় উপজেলার সুজনকাঠী গ্রামের আ.খালেক তালুকদারের পুত্র ও হিজলা উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক আনিচুজ্জামান তালুকদার ওরফে লেলিন তার খালাতো ভাই চেঙ্গুটিয়া গ্রামের মৃত মোক্তার হোসেন তালুকদারের পুত্র শহিদ তালুকদার, পশ্চিম গোয়াইল গ্রামের মৃত.ইয়াসিন সিকদারের পুত্র সেকেন্দার আলী শিকদারকে ও খালা নাঠৈ গ্রামের মৃত ইসমাইল সরদারের কন্যা মমতাজ বেগমকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভূক্ত করতে সনদ ও সুপারিশপত্রসহ যাবতীয় কাগজপত্র জমা দেন। কাগজপত্র পরীক্ষা নিরীক্ষান্তে কাগজপত্র জাল হিসেবে সনাক্ত করে কমিটি।
কমিটির সদস্য আব্দুর রইস সেরনিয়াবাত, মো. লিয়াকত আলী হাওলাদার জানান, প্রতারক আনিসুজ্জামান তালুকদার আগৈলঝাড়া উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটির কাছে সভাপতি, বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ৭১‘র মুজিব বাহীনীর প্রধান আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষর জাল করে তৈরীকৃত সনদ ও সুপারিশ পত্র কমিটির কাছে জমা দেন। জমাকৃত সনদ ও সুপারিশপত্রসহ কাগজপত্র সবই জাল। সাংসদ আবুল হাসানাত নিজেই তার স্বাক্ষর জাল বলে সনাক্ত করেন।
স্বাক্ষর জাল করে তৈরী সনদপত্র ও সুপারিশ পত্র ধরা পরার বিষয়টি টের পেয়ে যাচাই বাছাই কমিটির সভা থেকে প্রতারক আনিচুজ্জামান ওরফে লেলিন তালুকদারসহ তালিকাভ’ক্ত হতে আসা তার খালাতো ভাই চেঙ্গুটিয়া গ্রামের মৃত মোক্তার হোসেন তালুকদারের পুত্র শহিদ তালুকদার, পশ্চিম গোয়াইল গ্রামের মৃত.ইয়াসিন সিকদারের পুত্র সেকেন্দার আলী শিকদার ও খালা নাঠৈ গ্রামের মৃত ইসমাইল সরদারের কন্যা মমতাজ বেগম পালিয়ে যান।
এসময় আগৈলঝাড়া উপজেলা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি, বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য ৭১‘র মুজিব বাহীনীর প্রধান আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য-সচিব গাজী তারিক সালমানকে জালিয়াতির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সদস্য-সচিব গাজী তারিক সালমান বাদী হয়ে শুক্রবার আগৈলঝাড়া থানায় উপজেলার সুজনকাঠী গ্রামের আ.খালেক তালুকদারের পুত্র ও হিজলা উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক প্রতারক আনিচুজ্জামান তালুকদার ওরফে লেলিন তার খালাতো ভাই চেঙ্গুটিয়া গ্রামের মৃত মোক্তার হোসেন তালুকদারের পুত্র শহিদ তালুকদার, পশ্চিম গোয়াইল গ্রামের মৃত.ইয়াসিন সিকদারের পুত্র সেকেন্দার আলী শিকদার ও খালা নাঠৈ গ্রামের মৃত ইসমাইল সরদারের কন্যা মমতাজ বেগমসহ চার জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে শহিদ তালুকদার, মমতাজ বেগম সেকেন্দার আলী বলেন, আমরা কিছুই জানিনা লেনিন আমাদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে দেওয়ার জন্য বললে আমরা এখানে হাজির হই। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে আনিসুজ্জামান ওরফে লেলিনের মুঠোফোনে কল করলে তিনি প্রতিনিধির পরিচয় পেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আগৈলঝাড়া থানা উপ-পরিদর্শক (এস,আই) আব্দুস সালাম বলেন, আনিসুজ্জামান লেনিন তালুকদার সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্বেও একটি জাল জালিয়াতি চক্র গড়ে তুলে বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে প্রতারনা করে আসছেন। আসামিদের গ্রেফতারের জন্য জোর প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছ্ ে।