গৌরনদী
গৌরনদীতে স্ত্রীকে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ দাম্পত্য কলহের জের ধরে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়ননের শরীফাবাদ গ্রামে স্ত্রীকে শিকল দিয়ে বেঁধে লোহার গরম রড ও খুনতি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে ছ্যাকা দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে পাষন্ড স্বামী। মুর্মুর্ষ অবস্থায় গৃহবধূ তাসলিমা বেগমকে (২৯) বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার মা জাহানারা বেগম বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
নির্যাতিতা, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নের যুগীহাটি গ্রামের আজিজ হাওলাদারের কন্যা তাসলিমা বেগমের ৮/১০ বছর পূর্বে গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া ইউনিয়নের শরিফাবাদ গ্রামের মৃত ওহাব আলী মৃধার পুত্র ও প্রটকল (ভাড়ায় মোটরসাইকেল) চালক বাদল মৃধার (৩৮)র সঙ্গে বিয়ে হয়।
আহত তাসলিমা বেগম অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতে বাদল মৃধা এবং তার পরিবারের লোকজন তাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে মারপিট শুরু করেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে বাকবিতা-ার এক পর্যায়ে আকস্মীকভাবে তাকে বিবস্ত্র করে লাঠি দিয়ে পোটাতে থাকে এবং বেঁধে ফেলে । তিনি বলেন, আমার স্বামী বাদল ও তার পরিবারের লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে শিকল দিয়ে বেঁধে নির্যাতন করে। এক পর্যায়ে অমানবিকভাবে লোহার গরম রড ও খুনতি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে ছ্যাকা দেয়ার পর ক্ষতস্থানে লবন এবং মরিচের গুড়া ছিটিয়ে নির্যাতন করে। তখন আমি পানি পানি করে চিৎকার করলে স্বামী বাদল তাকে বিষ মেশানো জুস পান করানোর চেষ্ঠা করে। আমি ওই জুস খেতে না চাইলে আমার উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
নির্যাতিতা মা জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাতভর নির্যাতন করে বিনা চিকিৎসায় আমার কন্যা তাসলিমাকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। বুধবার বিকেলে স্থানীয়দের কাছে থেকে খবর পেয়ে আমি ও আমার স্বামী কন্যা তাসলিমাকে উদ্ধারের জন্য শরিফাবাদ গ্রামে আসলে জামাতা বাদল মৃধা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আমরা ডাক চিৎকার দিয়ে এলাকাবাসীকে জড়ো করে তাদের সহায়তায় তাসলিমাকে মুর্মুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে বুধবার রাতে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের ভর্তি করি। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে স্বামী বাদল মৃধা বলেন, আমার স্ত্রী সঙ্গে প্রতিবেশী নুর মৃধার পুত্র আল আমিনের অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে যে কারনে তার সঙ্গে আমার প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হয়। ঘটনার দিন তাসলিমা আল আমিনের সঙ্গে পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক করে শিকল দিয়ে বেধে তার বাবা মার কাছে হস্তান্তর করা হযেছে। লোহার গরম রড ও খুনতি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে ছ্যাকা দেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।
এ প্রসঙ্গে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ কবির বলেন, এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।