গৌরনদী
গৌরনদীতে আলোচিত শিশু হাফিজা অপহরণ ও হত্যা ॥ দম্পত্তির ডবল যাবজ্জীবন
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ মুক্তিপন দাবিতে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার উত্তর বিজয়পুর গ্রামের ৪ বছর বয়সের শিশু হাফিজা আক্তারকে অপহরনের পর হত্যার অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় অপহরনকারী স্বামী ও স্ত্রীকে দন্ডবিধির পৃথক দুটি মামলার ৩টি ধারায় ডবল যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও উভয়কে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকায় যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা, মুক্তিপণ দাবিতে অভিযোগে যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা এবং আলামত গোপনের দায়ে আরো ৫ বছর কারাদন্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শেখ আবু তাহের গত সোমবার বিকেলে দুই আসামির অনুপস্থিতে শিশু হাফিজা হত্যা মামলার এই রায় ঘোষণা করেন।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, গৌরনদী পৌর সদরে উত্তর বিজয়পুর মহল্লায় মো. হারুনহাওলঅদারের বাড়ির নিচতলায় ভাড়া থাকতেন ব্যবসায়ী মো. হায়দার আলী ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ভাড়া থাকতে একই উপজেলার কালনা গ্রামের মৃত লালচান মিয়ার পুত্র সাইদুর রহমান সাঈদ ও তার স্ত্রী তানজিলা তানিয়া। সাঈদ ও তানিয়া ব্যবসায়ীর কাছে মুক্তিপন আদায়ের জন্য ২০০৮ সালের ১১ আগস্ট ব্যবসায়ী হায়দারের শিশু কন্যা হাফিজাকে অপহরন করে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে ওই দম্পতি ১২ আগস্ট শিশু হাফিজাকে নির্যাতন করে মাথা থেতলে দেয় এবং শ্বাসরোধ করে লাশ নিজ ঘরের ষ্টিল আলমারির মধ্যে লুকিয়ে রাখে। এক পর্যায়ে লাশ পচে দুর্গন্ধ হলে সুযোগ বুঝে বাড়ির ছাদে পানির ট্যাঙ্কিতে লাশ ফেলে রাখে।
এ ঘটনায় ব্যবসায়ী হায়দার আলী ৪ জনকে আসামিকরে গৌরনদী মডেল থানায় অপহরন ও হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ দম্পতিসহ চার জনকে কে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠালে দম্পত্তি অঅদালতে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় একই বছরের ২২ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গৌরনদী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুল ইসলাম অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় দুই আসামিকে অব্যহতি দিয়ে দম্পতি সাইদুর রহমার সাঈদ ও স্ত্রী তানজিলা তানিয়াকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালত ২১ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৮ জনের সাক্ষ্যে গ্রহন শেষে অভিযোগ প্রমানিত হলে আসামিদের অনুপস্থিতিতে সোমবার বিকেলে রায় ঘোষনা করেন। সাঈদ ও তার স্ত্রী তানিয়াকে দোষি সাভ্যস্থ করে শিশু কন্যাকে অপহরন করার দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অপহরনের পর হত্যা করার দায়ে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং হত্যার পর লাশ গুম করার দায়ে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। ব্যবসায়ী হায়দার আলী তার প্রতিক্রীয়া ব্যক্ত করে বলেন, আসামিদের ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল।