গৌরনদী
সরকারদলীয় প্রার্থীদের একছত্র আধিপত্য বিস্তার, ভোট কারচুপির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী , উজিরপুর ও আগৈলঝাড়ার ১৭টি ইউনিয়নের সকল ভোট কেন্দ্রই বাধাহীনভাবে দখল করে নেন সরকারদলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মিরা। বিদ্রোহী প্রার্থী ও বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ তাদের এজেণ্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে ভোটার, প্রার্থী ও সংশ্লিণ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভোট শুরুর সাথে সাথে সরকারদলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা কেন্দ্র দখল করে নেন। তারা বিরোধীদলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীর এজেণ্টদের মারধর করে বের করে। প্রতিবাদে গৌরনদী, অগৈলঝাড়া ও উজিরপুর উপজেলার ১৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করার ঘোষনা দেন।
গৌরনদী উপজেলার সমরসিংহ ভোট কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ৯টায় দেখা হয়, খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আকন সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, ভোট গ্রহন শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যে সকল কেন্দ্র থেকে তার এজেন্টদের মার ধর করে বের করে দেওয়া হয়। ঘাটাইল কেন্দ্রে এজেন্ট মো. নুর আলম, মো. মহসিনকে বেধড়ক ভাটে পিটিয়ে জখম করা হয়। তিনি সকাল ১০টায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন। নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে আকন সিদ্দিকুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমি অভিযোগ দেওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নেননি। গৌরনদী উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমি কোন অভিযোগ পাইনি।
চাদশী ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যা প্রার্থী তাইফুর রহমান অভিযোগ করেন,ইউনিয়নের সকল কেন্দ্র দখল করে নেন আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সমর্থক ও কর্মিরা। সকাল সাড়ে ১০টায় পশ্চিম শাওড়া সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ধানেরশীষের কোন এজেণ্ট নেই। মহিলা বুধে নৌকার এজেণ্টের দায়িত্ব পালন করছেন যুবলীগ কর্মি রাশেল (২৫) ও আনোয়ার হোসেন। মহিলা বুধে আপনারা কি দায়িত্ব পালন করছেন জানতে চাইলে তারা বলেন, মহিলা এজেণ্ট না থাকায় আমরা এজেন্টের দায়িত্ব পালন করছি। ভোটা আবুল কাসেম(৫৫), আছিরন (৬০) বলেন, মোর হাত থাইক্কা চেয়ারম্যান ব্যালট নিয়ে হেরা ইচ্ছামত সিল দিছে, মুই খালি মেমম্বর ভোট দিছি। দক্ষিন ণাঠে সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়, নরসিংহলপট্রি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটার ফিরোজা বেগম, মমতাজ বেগম জনালেন ভোট দিতে না পারার কথা। আ. লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী কৃঞ্চ কান্ত দে বলেন, অভিযোগ সঠিক নয়, আমার বন্ধু বিএনপির প্রার্থী এজেণ্টই দিতে পারেনি।
আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়ননের বাকাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলশ্রী সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী ও বিএনপির কোন এজেণ্ট পাওয়া যায়নি। বাকাল ইউনিয়নের আ.লীগ বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্তী লাবন্য আক্তার জানান, তার এজেন্টদের বের করে দিয়ে কেন্দ্র দখল করেছে সরকারি দলের প্রার্থীর সমর্থকরা। লাবন্য আক্তার সাড়ে ১০টায় নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন। বিপুল দাস বলেন, কে বর্জন করল না করল জানিনা সুষ্ঠ শান্তিপূর্ন ভোট হচ্ছে। উজিরপুর উপজেলা জল্লা ইউনিয়নের মজম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাহের ঘাট সরকারি প্রার্থমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে বিএনিপর কোন এজেন্ট পাওয়া যায়নি। প্রার্র্থী মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, কেন্দ্র দখল নিয়ে ভোটারদের হাত থেকে চেয়ারম্যান ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে নৌকায় সিল দিচ্ছেন নেতাকর্মিরা। আ. লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উর্মিলা বাড়ৈ বলেন, নির্বাচনের নামে কেন্দ্র দখল করে নেওয়ার ভোট। কেউই ভোট দিতে পারছেন। আ.লীগ প্রার্থী বিশ্বজিৎ হালদার বলেন, নিজেদের ভরাডুবির আশংকার অপ্রপ্রচার চালাচ্ছেন, অভিযোগ সত্য নয়।
বিভিন্ন কোট কেন্দ্রে ভোটাররা অভিযোগ করেন, তাদের হাত থেকে চেয়ারম্যান ব্যালট ছিনিয়ে নেন আ.লীগ নেতাকর্মি সমর্থকরা। তারা বলেন, মোগে চেয়ারম্যান ব্যালট নিয়ে ওপেনে ভোট দেয় আর মেম্মর ভোট নিয়ে গোপনে যাইতে কয়। বিকেল সাড়ে ৪টায় অগৈলঝাড়া উপজেলার ভাল্লাুকসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটাররা ব্যালট হাতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে একাধিক কর্মিরা বুথে ঢুকে ব্যালটে সিল মারছে। নলচিড়া ইউনিয়নের মির্জা সেকেন্দার আলম, সরিকল মঞ্জুর হোসেন, চাঁদশী তাইফুর রহমান, বাটাজোর আকতার হোসেন, খাঞ্জাপুর আকন সিদ্দিকুর রহমান, মাহিলাড়া মো. সবুজ সিকদারসহ ৭ জন উজিরপুর উপজেলার বাবরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আ. মতিন নান্টু, জল্লা মিজানুর রহমান, সাতলা মো. মেজবাউদ্দিন ওটরা মো. কামরুজ্জামানসহ ৫জন ও আগৈলঝাড়ার রাজিহার ইউনিয়ন চেয়ারম্যানপ্রার্থী শোভন রহমান, গৈলা আবুল হোসেন লাল্টুসহ ৫ জনসহ ১৭ বিএনপির চেয়ারম্যান ভোট কারচুপির অভিযোগ গতকাল সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা দেন। সংশ্লিস্ট ইউনিয়নের আ.লীগের প্রার্থীরা কারচুপির অভিযোগ অস্বীকার করেবলেন, ভোটার ইচ্ছামত ভোট দিয়েছে কিন্তু বিএনপির প্রার্থীরা মিথ্যাচার চালাচ্ছে।
বরিশাল জেলা নির্বাচন অফিসার আ. হালিম বলেন, কোথাও থেকে আমরা এখনো অভিযোগ পাইনি।