গৌরনদী
গৌরনদীতে আসামির পলায়ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের নজরদাড়িতে থাকা গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন পর্নোগ্রাফী মামলার প্রধান আসামি বখাটে হান্নান সরদার (২২) সোমবার দুই কনস্টবলের চোখ ফাঁকি দিয়ে পালিয়ে গেছে। প্রায় ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও বখাটেকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
হাসপাতাল ও পুলিশ জানান, গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের পূর্ব সমরসিংহ গ্রামের মৃত হাকিম সরদারের পুত্র বখাটে হান্নান সরদার একই গ্রামের আব্দুর রব রাঢ়ীর কন্যা ও মেদাকুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী সোনিয়া আক্তার স্কুলে আসা যাওয়ার পথে কু-প্রস্তাবসহ বিভিন্ন ধরনের যৌণ হয়রানীর করে আসছিল। সম্প্রতি স্কুল ছাত্রী সোনিয়া স্কুল থেকে বাড়িতে আসার পথে বখাটে হান্নান ও তার এক সহযোগী তাকে পুনরায় উত্যক্ত করে। এ সময় স্কুল ছাত্রী বখাটের সহযোগীকে জুতাপেটা করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বখাটে হান্নান তার মুঠোফোনে গোপনে স্কুল ছাত্রী সোনিয়ার গোসলের আপত্তিকর ভিডিও ধারন করে স্কুল ছাত্রীকে জিম্মি করে। স্কুল ছাত্রীকে জানান, তার (বখাটের) প্রস্তাবে রাজি না হলে ওই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করা হবে। বিষয়টি সোনিয়া বখাটে হান্নানের অভিভাবকে জানালে বখাটে ক্ষিপ্ত হয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার দুপুরে বখাটে হান্নান ও তার ১০/১২জন সহযোগী দেশীয় অস্ত্রেসজ্জিত হয়ে সোনিয়ার বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও চারজনকে আহত করে।
স্কুল ছাত্রী সোনিয়ার ভাই খলিল রাঢ়ী জানান, তিনি বাদি হয়ে পর্নোগ্রাফী আইনে ও যৌণ হয়রানীর অভিযোগে বরিশালের নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে বখাটে হান্নান ও তার ৫ সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ট্রাইব্যুনালের বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার জন্য গৌরনদী মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। গত ২৬ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় মামলাটি এজাহারভূক্ত করে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশ। মামলা এজাহারভূক্ত করার পর গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন বখাটে হান্নানকে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়।
গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাসুম বিল্লাহ জানান, ৩১ নম্বর বেডে হান্নান সরদার চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং তার পাহারায় দুইজন পুলিশ কনস্টবলকে ছিলেন। সোমবার সকালে রোগী হান্নান হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালে ভর্তি রোগীরা জানান, হান্নানের শরীরে স্যালাইন পুশ করার পর দুই পুলিশ সদস্য তাকে (হান্নান) পাহাড়া দিয়ে রাখে। সোমবার ভোরে এক পুলিশ সদস্য নাস্তা খেতে যায় এসময় অপর পুলিশ সদস্য বাথরুমে গেলে হান্নান হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। অভিযোগ সম্পর্কে জানার জন্য হান্নান সরদারের মুঠোফোনে কল করে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এ প্রসঙ্গে গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন বলেন, পুলিশ পাহারায় থাকা আসামি পালিয়ে যাওয়ার কথা সত্য নয়। একটি মারামারির মামলার আসামি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে হাসপাতালে যান।