গৌরনদী
উজিরপুরে আওয়ামীলীগ সভাপতি কর্তৃক ইউ,এন,ও ও শিক্ষা কর্মকর্তা লাঞ্চিত
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস,এম জামাল হোসেনের নিয়মবর্হিভূত নির্দেশ অমান্যকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগ নেতা কৃর্তক উজিরপুর ইউ,এন,ও ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার লাঞ্চিত হয়েছেন। এসময় তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করা হয়। এক পর্যায়ে ইউ,এন,ও পুলিশ ডাকার হুমকি দিলে আওয়ামীলীগ নেতা সটকে পড়েন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের বিদ্যালয়বিহীন গ্রামে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় উজিরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও নব-নির্বাচিত বরিশাল জেলা পরিষদ সদস্য এস,এম জামাল হোসেন বরাকোঠা গ্রামে ২০১৪ সালে তার দাদার নামে আলহাজ্ব বাবুজান সিকদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে ৪ জন শিক্ষক কর্মরত। উপজেলা অফিসের একটি সূত্র জানান, উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের মধ্য সাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত রয়েছেন রাজিয়া খাতুন ও পাখি আক্তার । গত ৬/৭ মাস ধরে আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. জামাল হোসেন ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে নিয়ম বহির্ভূত ভাবে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অনুমোদন ব্যতিরেকে মধ্য সাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রাজিয়া খাতুন ও পাখি আক্তারকে দিয়ে তার বিদ্যালয়ে পাঠদানে বাধ্য করছেন। স্থানীয়রা জানান, ওই দুই শিক্ষকের পূর্বের কর্মস্থল থেকে বর্তমান কর্মস্থলের দুরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটর। মধ্য সাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক আওয়ামীলীগ নেতার কথা মত বরাকোঠা আলহাজ্ব বাবুজান সিকদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসে অবৈধভাবে পাঠদান করায় পূর্বের বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা মারাত্মভাবে ব্যহত হচ্ছে।
উজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সহিদুল ইসলাম জানান, গত ডিসম্বের মাসে ওই দুই শিক্ষককে যথাস্থানে দায়িত্ব পালনের জন্য বলা হয়। নতুবা হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে নিষেধ করা হয়। তার পরেও নির্দেশ অমান্য করে ওই দুই শিক্ষক আওয়ামলীগ নেতা ভয়ে নেতার স্কুলেই পাঠদান করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। গত সোমবার ওই দুই শিক্ষককে পুনরায় তাদের কর্মস্থলে গিয়ে পাঠদান করানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। এতে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এস,এম জামাল হোসেন ক্ষিপ্ত হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা অফিসের একাধিক কর্মচারী জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আওয়ামীলীগ নেতা মো. জামাল হোসেন তাদের অফিসে এসে স্যারকে (শিক্ষা অফিসার) অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে অফিস ত্যাগ করেন। কিছুক্ষন পর বিকেল ৪টার দিকে জামাল হোসেন উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) ঝুমুর বালার কার্যালয়ে প্রবেশ করে বিষয়টি ইউ,এন,ওর কাছে নালিশ দেন। ওই মুহুর্তে শিক্ষা অফিসার মো. সহিদুল ইসলাম ইউ,এন,ওর অফিসে ঢুকে পড়লে জামাল হোসেন ইউ,এন,ওর কক্ষে তার সামনে পুনরায় লাঞ্চিত করেন। এসময় ইউ,এন,ও ঝুমুর বালা আওয়ামীলীগ নেতা জামাল হোসেনকে বিরত থাকতে বললে তাকেও গালাগাল ও লাঞ্চিত করেন। প্রত্যক্ষদর্শী কর্মচারীরা জানান, এক পর্যায়ে ইউ,এন,ও পুলিশ ডাকার হুমকি দিলে জামাল হোসেন তাদের দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে সটকে পড়েন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য এস.এম জামাল হোসেন গালাগাল ও লাঞ্চিত করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কোন বিষয় নিয়ে তর্তাতর্কি হতেই পারে সেটা লাঞ্চিত নয়। কথাকাটাকাটি হয়েছিল তা আমরা উভয়েই মিমাংসা করে এক সঙ্গে চা খেয়েছি। উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) ঝুমুর বালা এ প্রসঙ্গে বলেন, লাঞ্চিতকথাটি সঠিক নয়, উচ্চস্বরে বাকবিতা-ার ঘটনা ঘটেছে। তবে শিক্ষা অফিসারকে গালাগাল দিয়েছে।