গৌরনদী
ূল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যু ৪ লাখ টাকায় দফারফা হলেও নিহত নবজাতকের বাবা পেয়েছে ৬০ হাজার টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদীতে রাজিয়া সুলতানা নামে এক চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় বাটাজোর এ্যাপোলে হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনাটি গত বুধবার রাতে স্থাণীয় প্রভাবশালীদের মধ্যস্থতায় ৬০ হাজার টাকায় দফারফা করা হয়েছে । সূত্র মতে প্রভাবশালীরা চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিলেও নিহত নবজাতকের বাবা পেয়েছে ৬০ হাজার টাকা। নবজাতকের এক স্বজন জানান, নিহতের বাবা সুজন মিমাংসায় রাজি ছিল না তার উপর চাপ সৃষ্টি করে মিমাংসায় বাধ্য করা হয়।
জানা গেছে, গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বাটাজোর গ্রামের সুজন হাওলাদার(৩২)র অন্তঃসত্বা স্ত্রী বিলকিস আক্তার(২৩) গৌরনদীর বাটাজোর বন্দরের এ্যাপোলে প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. সুলতানা রাজিয়া তত্ত্বাবধানে দীর্ঘ দিন চিকিৎসা নেন। গত ২৮ নভেম্বর এ্যাপোলে হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক রাজিয়া সুলতানা জানান, আজই হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওই দিনই বিলকিস আক্তারকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির পর রাত সোয়া ৭টায় বিলকিসকে অস্ত্রপাচারের জন্য অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়।
বিলকিস আক্তারের স্বামী সুজন হাওলাদার অভিযোগ করেন, ভূয়া চিকিৎসক রাজিয়া সুলতানা ভুল অপারেশন করে নবজাতকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারাল অস্ত্রের আঘাত করে। এতে রক্তক্ষরনে শিশুটি জন্মের পরপরই মারা যায়। প্রতারক চিকিৎসক রাজিয়া সুলতানা শিশুটি মারা যাওয়ার কথা গোপন রেখে তাকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ নেন। চিকিৎসকের পরামর্শে এ্যাম্বুলেন্সযোগে শিশুটিকে বরিশাল নেওয়া হলে জরুরী বিভাগের চিকিসক জানান, শিশুটি জন্মের সঙ্গে সঙ্গেই মারা গেছে। তিনি আরো বলেন, ভূয়া ডাক্তার আমার নবজাতক শিশু পুত্র সন্তানকেই হত্যা করেনি তার ভুল চিকিৎসায় আমার স্ত্রী মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আমি ভূয়া চিকিৎসকের বিচার চাই। নবজাতকের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রোগীর স্বজনারা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে এবং রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ্যাপোলো হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে চিকিৎসককে লাঞ্চিত করে। এক পর্যায়ে চিকৎসকে মারধর করতে গেলে চিকিৎসক রাজিয়া সুলতানা পালিয়ে রক্ষা পান।
প্রভাবশালীরা চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিলেও নিহত নবজাতকের বাবা পেয়েছে ৬০ হাজার টাকা। নবজাতকের এক স্বজন জানান, নিহতের বাবা সুজন মিমাংসায় রাজি ছিল না তার উপর চাপ সৃষ্টি করে মিমাংসায় বাধ্য করা হয়। একাধিক নবজাতক হত্যাকারী ডা. রাজিয়া সুলতানার প্যাডে নিজের পরিচয় লেখা রয়েছে। এম,বি,বি,এস, ঢাকা। পিজিটি অব গাইনী, ডিপ্লোমা ইন এ্যাডভান্স আল্ট্রাসনোগ্রাফি (পি,আই,টি,এন,আই,আর)(এন,এইচ অব আই,আর) শহীদ সহরোয়ার্দী মেডিকেল কলেজ, সাবেক মেডিকেল অফিসার বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। স্থানীয় অনেকেই অভিযোগ করেন, রাজিয়া সুলতানা এম,বি,বি,এস পাশ করেননি। এমন কি তার বি,এম,ডি,সির কোন সনদ নেই। রাজিয়া সুলতানা আল্ট্রাসনোগ্রাফির উপর ডিপ্লোমা করে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে এম,বি,বি,এস চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারনা করে আসছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, ডা. রাজিয়া সুলতানা নামে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন খ্যাতিমান সিনিয়র চিকিৎসক ছিলেন। তার নাম ব্যবহার করে রাজিয়া সুলতানা গ্রামের বিভিন্ন্ হাসপাতালে অপারেশন করে থাকেন। অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে চিকিৎসক রাজিয়া সুলতানা বলেন, অভিযোগ সত্য নয়। তার কাছে বি,এম,ডি,সির সনদ দেখতে চাইলে দেই দিছি বলে তালবাহানা করে।