গৌরনদী
উজিরপুরে নৌকা মার্কার প্রার্থীর হামলা, গৌরনদীতে দুই সদস্য প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ, বাড়ি ভাঙচুর- আহত-২২
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ গতকাল বৃহস্পবিার সকালে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নে মেদাকুল বাজারে দুই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দুটি বাড়ি ভাংচুরসহ ৫ জন আহত হয়। আপরদিকে উজিরপুর উপজেলার হারতায় প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও পুলিশের হামলায় ৭ জন আহত হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে গৌরনদী মডেল থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গৌরনদী উপজেলাার খাঞ্জাপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদ প্রার্থী দুলাল বেপারী (ভ্যানগাড়ি) ও তার প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী দেলোয়ার চৌকিদার (আপেল) তারা দুজনেই বুধবার সমর্থকদের নিয়ে একই সময় মেদাকুল বাজারে প্রচারনা চালাতে যান। এসময় উভয় সমর্থকারা একে অপরকে লক্ষ্য করে মিছিল শুরু করেন। মিছিল দুটি মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
দুলাাল বেপারী (ভ্যানগাড়ি) অভিযোগ করেন, দেলোয়ার চৌকিদারের সমর্থক আল-আমিন সরদারের নেতৃত্বে ১০/১৫জন সন্ত্রাসীরা অর্তকিতভাবে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীরা দুটি বসত ঘর ভাংচুরের পর লুটপাট করে। সন্ত্রাসীদের হামলায় তিনিসহ (দুলাল বেপারী) তার স্ত্রী কহিনুর বেগম, ভাইয়ের স্ত্রী জিয়াসমিন বেগম, ফরিদা বেগম, ভাগ্নি তামান্না আক্তার আহত হন। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে দেলোয়ার চকিদার বলেন, হামলার ঘটনায় আমি ও আমার কোন সমর্থক জড়িত না। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে গৌরনদী মডেল থানায় পৃথকভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বুধবার রাতে এক সাধারন সদস্যর মিছিলে বেধরক লাঠি পেটা করেছে পুলিশ। পুলিশের লাঠি পেটায় ও আত্মরক্ষার জন্য তাড়াহুড়া করে পালাতে গিয়ে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ মিছিল থেকে ৩ জনকে আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের সুত্রে জানা গেছে, ওই ওয়ার্ডের মেম্বর পদপ্রার্থী জাবেদ সরদারের শতাধিক সমর্থক বুধবার রাত ৯ টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উপর গৌরনদীর সাউদের খালপাড় নামক স্থানে জাবেদের তালা মার্কার সমর্থনে মিছিল বের করেন। এসময় গৌরনদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলাউদ্দিন মিলনের নেতৃত্বে টহল পুলিশ ওই স্থান দিয়ে গৌরনদী ফিরছিলেন। নির্বাচন আচারন বিধি লংঘন করায় পুলিশ মিছিলের উপর চরাও হয়ে বেধরক লাঠি পেটা করে। এসময় আতঙ্কে সাধারন মানুষ দ্বিকবিদ্বিক ছুটা ছুটি করে। পুলিশের লাঠি পেটায় ও আত্মরক্ষার জন্য তাড়াহুড়া করে পালাতে গিয়ে জাবেদ সরদারের সমর্থক বারেক সরদার (৬৮), রাকিব সরদার (২২), সায়েদুল সরদার (৩২), কাজেম সরদার অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ ইতদাদুল সরদার, রাসেদ সরদার ও ইউসুব সরদারকে আটক করে থানায় নিযে যায়। আহতদের মধ্যে রাকিব সরদারকে বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
লাঠি পেটার কথা অস্বীকার করে বলেন, নির্বাচনী আচারবিধি লংঘনের কারণে মিছিল থেকে তিন জনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাদের মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
উজিরপুর উপজেলার হারতা ইউনিয়নের ওয়ার্কাস পার্টির মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী বিমল করাতি জানান, গত বুধবার তিনি ৭/৮ জন সমর্থককে নিয়ে কুচিয়ারপাড় এলাকায় গনসংযোগ করতে যান। খবর পেয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী হরেন রায় তার সহযোগী সিরাজ বেপারী, অভিলাস হালদারসহ ৫/৬ জন সমর্থককে নিয়ে একই জায়গায় প্রচারনা চালাতে যান। বিমল করাতি অভিযোগ করেন, এসময় হরেনের সমর্থক অভিলাস তাকে উদ্দেশ্যে করে কটুক্তি করলে তার বোন রাশমনি বালা প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নৌকার প্রার্থী হরেন নিজেই হামলা চালায়। হামলায় বোন রাশমনি বালা, সমর্থক সুভাষ রায়, অসীম হালদার, ভক্ত বিশ্বাস, লিটন হালদার আহত হন।
আওয়ামীলীগের প্রার্থী হরেন রায় অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না তবে আমার লোকজনের সঙ্গে হাতুড়ী মার্কার সমর্থকদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বিমলের সমর্থকরা হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করলে হারতা পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে। এতে দুই জন আহত হয়। উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুল ইসলাম জানান, ঘটনা শুনেছি কোন অভিযোগ পাইনি পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।