গৌরনদী
আধিপত্য বিস্তারের জের ॥ গৌরনদীতে আ.লীগের নেতার উপর যুবলীগের নেতাকর্মির হামলা, আহত-৬
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামলীগের সাবেক সাধারন সস্পাদক ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডে সাবেক সদস্য মো. আরজ আলী সরদার(৫০)র উপর বৃহস্পতিবার সকালে ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক ও বর্মমান ইউপি সদস্য মো. গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে বোমা হামলা চালিয়েছে কতিপয় যুবলীগে নেতাকর্মিরা। হামলায় আ.লীগ নেতা, স্ত্রী, পুত্র সমর্থকসহ ৬ জন গুরুতরভাবে আহত হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আ.লীগ নেতা, তার স্ত্রী ও পুত্রকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠোনো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসের ইউপি নির্বাচন থেকে গৌরনদী উপজেলার খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন আওয়ামলীগের সাবেক সাধারন সস্পাদক ও খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডে সাবেক সদস্য মো. আরজ আলী সরদার(৫০) ও একই ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন (৩৫)র বিরোধ শুরু হয়। গত নির্বাচনে দুই জনে একই ওয়ার্ডে থেকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করেন এবং মো. গিয়াস উদ্দিন সদস্য নির্বাচিত হন। সেই থেকে দুই জনের মধ্যে আধপিত্য বিস্তারের দ্বন্ধ চলে আসছে।
স্থানীয়রা জানান, তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে গত মঙ্গলবার রাতে আরজ আলী সরদার(৫০) বর্তমান মেম্বর গিয়াস উদ্দিনের সমর্থক জলিল ফকির(৪৫)কে মারধর করে। এনিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ইল্লা গ্রামের নুর বেপারী (৪০) ও রেজাউল হাওলাদার জানান, আরজ আলী সরদার ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদীর ইল্লা বাসষ্টান্ডের দক্ষিন পাশে একটি ফিলিং ষ্টেশনে নির্মান কাজ শুরু করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় নির্মানাধীন ফিলিং ষ্টেশনের কাজ তদারকি করার জন্য আসেন। সকাল সোয়া সোয়া ৭টায় ১০/১২ জনের এক দল সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে বোমা হামলা চালায়। এতে আরজ আলী মাটিতে লুটে পড়ে গেলে সন্ত্রাসীরা রামদা, ও চাকু দিয়ে এলোপাতারিভাবে কুপিয়ে জখম করে। তাকে রক্ষায় তার স্ত্রী তাসলিমা বেগম (৩৫) এগিয়ে আসলে তাকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। স্থানীয়রা আহত ৬জনকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি ঘটলে আরজ আলী ও স্ত্রী তাসলিমা ও পুত্র বাবু সরদার(২২) বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক দেওয়ান আব্দুস সালাম বলেন, আরজ আলীর অবস্থা খুবই আশংঙ্কাজনক। তার শরীরের বিভিন্ন ্ স্থানে বোমার আঘাত ও মাথায় একাধিক , শরীরে কয়েকটি রক্তাক্ত জখম রয়েছে।
আহত আ. লীগ নেতার স্ত্রী তাসলিমা বেগম অভিযোগ বলেন, যুবলীগ নেতা ও মেম্বর গিয়াস উদ্দিন((৩৫)র নেতৃত্বে তার সহযোগী সহিদ হাওলাদার(৩৮), রুবেল হাওলাদার(৩০), করিম হাওলাদার(৪৫), নেছার উদ্দিন(৩৫) ও ইদ্রিস (৪০)সহ ১০/১২ জন শসস্ত্র সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ১০/১২টি বোমা হামলা চালায়। বোমার আঘাতে স্বামী মাটিতে লুটিয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, ও চাকু দিয়ে হত্যা উদ্দেশ্যে কুপিয়ে জখম করে। তাকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে আমাকে ও আমার পুত্র বাবু সরদার(২২)কে কুপিয়ে জখম । এসময় আমার গলা চেইন, দুল ও স্বামীর কাছ থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা নিয়ে যান। হামলায় ফিলিং ষ্টেশনের কর্মি নুর বেপারী (৪৫) রাজ মিস্ত্রী রেজাউল হাওলঅদার(৪০) তালেব আলী(২৫) আহত হন।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. গিয়াস উদ্দিন বলেন, হামলার সঙ্গে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। আরজ আলীর যাদের মারধর করেছে তাদের স্বজনরা হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। অরজ আলীর সমর্থকরা নিজেরাই বোমা হামলা চালায়। হামলার কথা স্বীকার করে গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এস,আই)মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বোমা হামলা কারা চালিয়েছে তা স্পষ্ট নয়। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন বলেন, আহতদের বরিশালে চিকিৎসা চলছে। এখনো কোন মামলা হয়নি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।