গৌরনদী
গৌরনদীতে পৃথক দুটি সংঘর্ষে আহত-৩৫, আটক-৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ জমাজমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের কালিরবাজার ও বার্থী ইউনিয়নের নন্দনপট্রি গ্রামে শুক্রবার রাতে পৃথক পৃথক সংঘর্ষে কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হন। গুরুতরভাবে আহত ১৫ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ৬ জনকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। গতকাল শনিবার গৌরনদী মডেল থানায় পৃথকভাবে মামলা দায়ের করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন, ও পুলিশ জানান, গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয়নের বাসুদেবপাড়া গ্রামের সোবাহান সরদারের পুত্র মো. খোকন সরদার(২৮)র সঙ্গে একই গ্রামের হাসেম প্যাদার পুত্র আকবর প্যাদা (৩০)র দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। প্রত্যক্ষদর্শী কালীবাড়ি বাজারের ব্যবসায়ী রেজাউল করিম(২২), স্বপন সরদার(২৫)সহ কয়েকজন জানান, শুক্রবার দুপুর ১২টায় বিরোধপূন জমিতে খোকন সরদার লোকজন নিয়ে মাছ ধরতে গেলে আকবর প্যাদার সমর্থক মফসের বেপারী (৩৫) বাধা দেয়। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতা-ার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কালিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. কালাম সরদার বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে মিমাংসা করে দেন। মিমাংসা অম্যান্য করে দুপুর ১টায় প্যদা বংশের লোকজন কালাম সরদারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানে হামলা করে তাকে মারধর করে।
কালাম সরদার অভিযোগ করেন, মিমাংসা করে দেয়ার পরে তা উপর হামলা চালায় প্যাদা বংশেল সন্ত্রাসীরা। শুধু তাই নয় তাদের বংশের সোবাহান সরদারের পুত্র এসএসসি পরীক্ষার্থী হৃদয় (১৭) ও আলমগীর সরদারের পুত্র সোহাগ সরদার(১৪) গৌরনদী যাওয়ার পথে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদ প্যদার বাড়ির সামনে পৌছলে প্যাদা বংশের ৮/১০ জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে হৃদয় ও সোহাগকে কুপিয়ে জখম করেছে।
স্থানীয়রা জানান, এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত ৯টায় সরদার বংশেল ২০/২৫ জন সমর্থক পাল্টা হামলা চালায়। এ নিয়ে দুই বংশের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে আকবর প্যাদা বলেন, সরদার বংশের ৪০/৫০ জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্যাদা বংশের উপর হামলা চালিয়ে তাদের ১২ জন সমর্থককে জখম করেছে।
সংঘর্ষে সরদার ও প্যাদা বংশের ২০ জন আহত হয়। গুরুতরভাবে আহত সরদার বংশের হৃদয়(১৭) সোহাগ(১৪), আরিফ(১৫) সাজিয়া আক্তার(১৬), প্যাদা বংশের আলমগীর প্যাদা(৪৫) আকবর প্যাদা(৪০), সাফিয়া বেগম(৩২) ও শানজিদা(১৫)কে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অবস্থার অবনতি ঘটলে হুদয়(১৭) সোহাগ(১৪)কে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
অপর দিকে গৌরনদী উপজেলা বার্থী ইউনিয়নের নন্দনপট্রি গ্রামের হাসমত আলী মুন্সীর সঙ্গে একই গ্রামে তোফাজ্জেল মুন্সীর বিরোধ চলে আসছিল। গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টায় হাসমত মুন্সীর পুত্র কামাল মুন্সী (৩৭) বিরোধপূর্ন জমিতে থাকা গাছের ডাল কাটতে গেলে প্রতিপক্ষ তোফাজ্জেল মুন্সীর পুত্র বাচ্চু মুসন্সী (৪০) বাধা দেয়। এর ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়। ৭ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভতি করা হলে গুরুতরভাবে আহত রুবেল মুন্সী, কামাল মুন্সী, তোফাজ্জেল মুন্সী, বাচ্চু মুন্সীকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন, পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রনে তিনকে আটক করা হয়েছে। পৃথক দুটি ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।