গৌরনদী
ফেইসবুক প্রেম ॥ বিয়ের দাবিতে আগৈলঝাড়ায় অনশন, প্রতারক প্রেমিক বাড়ি ফিরলে আজ বিয়ে
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পরিচয়ে প্রেম করে প্রতারনার শিকার হন বরিশালের আগৈলঝাড়ার উপজেলার উপজেলার আস্কর গ্রামের দিনমজুরের কন্যা ও উপজেলার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজের ছাত্রী (১৯)। পরে বিয়ের দাবিতে অনশন করার পর আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে পিতার জিম্মায় দিয়েছেন। প্রতারক প্রেমিক বাড়ি ফিরলে আজ বুধবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
কলেজ ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের কান্দিরপাড় গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল বালার পুত্র ও রাংতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সঞ্জিত বালার সঙ্গে একই উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের আস্কর গ্রামের এক দিনমজুর কন্যা ও আগৈলঝাড়া শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে দুই বছর আগে পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে উভয়ের মধ্যে চেটিং এ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। স্কুল শিক্ষক সঞ্জিত বালা কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন।
কলেজ ছাত্রীর বাবা জানান, গত ২৮অক্টোবর (শুক্রবার) সকালে স্কুল শিক্ষক সঞ্জিত বালা তার কলেজ পড়–য়া কন্যাকে ঘুড়তে যাওয়ার কথা বলে বরিশাল নিয়ে যান। বরিশালে গিয়ে সারা দিন ঘোড়াঘুড়ি ও কেনাকাটা শেষে বাড়ি না ফিরে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলে মেয়েকে নিয়ে বলে বরিশালের একটি আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে রাত্রি যাপন করে । পরের দিন শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সঞ্জিত বালা মেয়েকে হোটেলের কক্ষের ভিতিরে রেখে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে পালিয়ে আসে। মেয়ে ঘুম থেকে উঠে সঞ্জিতকে না পেয়ে দরজা খুলে বাহিরে আসার চেষ্টা করেন। বাহির থেকে দরজা তালাবদ্ধ টের পেয়ে মেয়ে ডাকাডাকি শুরু করলে হোটেল কর্তৃপক্ষ তালা খুলে তাকে উদ্ধার করেন।
রাজিহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইলিয়াস তালুকদার গতকাল মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজ ছাত্রী বরিশাল থেকে বাড়ি ফিরে শনিবার বিকেল থেকে স্কুল শিক্ষক প্রতারক প্রেমিক সঞ্জিত বালার বাড়িতে গিয়ে বিযের দাবিতে অনশন শুরু করেন। খবর পাওয়ার পর আমার উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদে ছেলে -মেয়ের উভয়ের পরিবারের অভিভাবকদের নিয়ে দুই দফায় মিমাংসা বৈঠকের আয়োজন করি কিন্তু স্কুল শিক্ষক সঞ্জিত বালা ও তার পরিবার বিয়েতে রাজি হয়নি। ঘটনার পর থেকে সঞ্জিত আত্মগোপনে থাকায় সিদ্বান্ত নিতে না পারায় বিষয়টি আগৈলঝাড়া থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ গতকাল কলেজ ছাত্রীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে অনশন ভেঙ্গে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া থানায় নিয়ে আসেন এবং তার বাবার জিম্মায় দেন। সঞ্জিত বালার পরিবারেকে বুধবার পর্যন্ত সময় বেধে দিয়ে বিবাহের কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। প্রতারক প্রেমিক স্কুল শিক্ষক সঞ্জিত বালা বাড়িতে ফিরলে আজ বুধবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে।
অভিযোগ সম্পর্কে জানার জন্য স্কুল শিক্ষক সঞ্জিত বালার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। সঞ্জিতের বাবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবঃপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল বালা কলেজ ছাত্রীকে নিয়ে বরিশাল হোটেলে যাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, সঞ্জিত ওই মেয়েকে নিয়ে হোটেলে গেছে তবে এক সঙ্গে রাত কাটায়নি। তিনি আরো বলেন, ফেইসবুকে দুই বছর আগে মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়, ফেইসবুক ছেলে মেয়েদের নষ্ট করে দিচ্ছে। বিয়ে প্রসঙ্গে বলেন, সঞ্চিত ছুটিতে কোথায় আছে জানিনা। বিয়ের বিষয়টি তার ব্যক্তিগত ব্যপার, ফিরে না আসলে কিছুই বলা যাচ্ছে না।