গৌরনদী
উজিরপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষন করে দৃশ্য ধারন, ইন্টানেটে প্রকাশ ৩ যুবলীগ নেতাকর্মি গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামের এক নবম শ্রেনির ছাত্রীকে ধর্ষন করেছে উজিরপুর পৌর এলাকার দক্ষিন মাদার্শী মহল্লার মো. মিজানুর রহমান(২০)।এ দৃশ্য মুঠোফোনে ধারন করেছে বরাকোঠা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি মো. ফয়েজ আহম্মেদ(৪৫) ও তার দুই সহযোগী । স্কুল ছাত্রীর পরিবারকে জিম্মি করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা। ২০ হাজার টাকা পরিশোধের পরে বাকি টাকা না দেয়ায় ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া হয়। এ ঘটনায় গত শুক্রবার উজিরপুর মডেল থানায় ধর্ষিতার বাবা বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছে। পুলিশ ধর্ষকসহ দুই যুবলীগ নেতাকর্মিকে গ্রেপ্তার করেছে।
স্থানীয় লোকজন, ধর্ষিতার পরিবার ও পুলিশ জানান, গত এক বছর পূর্বে উজিরপুর উপজেলার হস্তিশুন্ড গ্রামের এক দিন মজুরের কন্যা ও নবম শ্রেনির ছাত্রী (১৫)র সঙ্গে একই উপজেলার উজিরপুর পৌর এলাকার দক্ষিন মাদার্শী মহল্লার বাসিন্দা ও চতলবাড়ি নতুন বাজারের ব্যবসায়ী মো. মিজানুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় মিজান প্রেমিকা স্কুল ছাত্রীকে নিয়ে বরাকোঠা ইউনিয়নের চতলবাড়ি এলাকার সাকরাল চরে ঘুড়তে যান। দুপুর ১২টার দিকে প্রেমিক মিজান স্কুল ছাত্রীকে সন্ধ্যানদীর তীরে হোগলা ক্ষেতে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষন করে।
ধর্ষিতা জানান, ধর্ষনের দৃশ্য মুঠোফোনে ধারন করেন বরাকোঠা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ সভাপতি মো. ফয়েজ আহম্মেদ, তার সহযোগী যুবলীগ কর্মি মো. রুম্মন হোসেন হাওলাদার ও মো. আনিস। ওই ভিডিও দেখিয়ে জিম্মি করে তারাও স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষনের চেস্টা চালায়। এতে স্কুল ছাত্রী না হলে তাকে মারধর করার এক পর্যায়ে উলঙ্গ করে চিত্র ধারন করে ছেড়ে দেয়।
ধর্ষিতার বাবা দিনমজুর জানান, ঘটনার পরের দিন ২৭ (সেপ্টেম্বর) বরাকোঠা ইউনিয়ন যুবলীগের সহ সভাপতি মো. ফয়েজ আহম্মেদ তার সহযোগীরা তাকে বিষয়টি জানিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দেওয়া হলে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেন। মেয়ের মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে ধারদেনা করে ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ না করায় তারা বিভিন্ন সময় হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিল। টাকা না পেয়ে অবশেষে গত ২৫ অক্টোবর ভিডিওটি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয় যুবলীগ নেতাকর্মিরা। বাধ্য হয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানালে পুলিশ বৃহস্পতিবার গভীর রাতে পুলিশ যুবলীগ নেতা দক্ষিণ মাদার্শি গ্রামের সুলতান হাওলাদারের পূত্র ধর্ষক মো. মিজানুর রহমান, সহযোগী যুবলীগ কর্মি সাকরাল গ্রামের সামসুল হক হাওলাদারের পূত্র রুমান হোসেন হাওলাদার ও সামসুল ইসলামের পূত্র ফয়েজ আহাম্মেদকে গ্রেফতার করে। মো. আনিস সরদার পলাতক রয়েছে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, ধর্ষিতার বাবা বাদি হয়ে শুক্রবার ধর্ষকসসহ চার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ধর্ষকসহ ৩জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধর্ষিতাকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শেরই বাংলা মেডিকেল কলেজ ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।