গৌরনদী
গৌরনদীতে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে প্রবাসীর অসহায় স্ত্রীকে পেটালেন যুবলীগ নেতা
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ উত্যাক্তের প্রতিবাদ ও কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বরিশালের গৌরনদীর টরকী বন্দরের মধ্যে প্রকাশ্য দিবালোকে এক প্রবাসীর স্ত্রীকে জুতাপেটা করেছে উপজেলা যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা মাহাবুব অলম কুট্রি (৪৫)। প্রবাসীর স্ত্রীকে পিটিয়ে ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইণ্টারনেট ও ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল বুধবার গৌরনদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী, স্থানীয় লোকজন, ব্যবসায়ী ও পুলিশ জানান, গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের সদস্য মাহাবুব আলম কুট্রি (৪৫) টরকী বন্দরের একটি মোবাইল রিচার্জের দোকান থেকে গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দর এলাকার বাসিন্দা সৌদি প্রবাসী আ. হালিম সরদারের স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩০)র ও তার ছোট বোন বোন পপি আকাতার (১৮)র মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে পপি আক্তারকে প্রেমর প্রস্তাব দেন। পপি তা প্রত্যাখান করলে মাহাবুব প্রায়ই ফোন দিয়ে তাকে উত্যাক্ত করে আসছিল। পপি আক্তার বিষয়টি তার বড় বোন মরিয়ম বেগমকে জানালে মরিয়ম যুবলীগ নেতা মাহাবুব আলম কুট্রিকে উত্যাক্তে করতে নিষেধ করে সাসিয়ে দেয়।
মরিয়ম বেগম অভিযোগ করেন, সাসিয়ে দেয়ায় মাহাবুব আলম ক্ষিপ্ত হয়ে ছোট বোন পপির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দিতে তার উপর চাপ সৃষ্টি করে। এতে সে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বিভিন্ন গালিগালাজ করে বোনকে অপহরনসহ শ্লীলতাহানি করে তা ইণ্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া হুমকি প্রদান করে।
গতকাল বুধবার গৌরনদী মডেল থানায় প্রবাসীর স্ত্রী মরিয়ম বেগমের দায়ের করা মামলায় বলা হয়, তিনি (মরিয়ম) গত ১৫ অক্টোবর বিকেলে টরকী বন্দরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে টরকী বন্দর ভিক্টোরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা যুবলীগ নেতা মাহাবুব আলম তার ২/৩জন সহযোগীকে নিয়ে পথরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শ্লীলতাহানী ঘটায়। এক পর্যায়ে মরিয়ম প্রতিবাদ করলে যুবলীগ নেতা ও তার সহযোগীরা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকাশ্যে জনসম্মুখে তাকে (মরিয়ম) জুতাপেটাসহ মারধর করে গুরুতরভাবে জখম করে তার ব্যবহৃত স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নেন। স্থানীয়রা মরিয়মকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এজাহারে আরো বলা হয়, গুরুতর অসুস্ত্য থাকা ও আত্মসম্মানের ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখা হয়। কিন্তু হামলাকারীরা মরিয়মের উপর হামলা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইণ্টারনেট ও ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়ায় তিনি এজাহার দেওয়ার সিদ্বান্ত নেন।
গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও প্রভাবশালী নেতা মাহাবুব আলমের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার চালানো হয়। আমি নই বরং মহিলাই আমার উপর চড়াও হয়। গৌরনদী উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ মাহাবুব আলমের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্যায়কারী দলের যেই হোক আইন তার বিরুদ্ধে যথা নিয়মে চলবে। দলের পরিচয়ে কেউ অপরাধ করে পার পাবেন না। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন মিলন মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।