গৌরনদী
গৌরনদীতে ভূয়া চিকিৎসক গ্রেপ্তার, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
সোলায়মান তুহিন, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ”বরিশালের গৌরনদীতে অপারেশনের মতো অতি সংবেদনশীল চিকিৎসা পদ্ধতিকে হাতিয়ার বানিয়ে ভয়াবহ প্রতারণার করে আসছিল এক ভূয়া চিকিৎসক। অন্যের বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন নম্বর ব্যবহার করে নিজেকে ইউরোলজি ও জেনারেল সার্জন পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রোগীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছিল গৌরনদী উপজেলার আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ মুন্সী হাসপাতালের চিকিৎসক ফিরোজ আহমেদ। অবশেষে সোমবার (১ ডিসেম্বরগভীর রাতে গৌরনদী উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে গৌরনদী উপজেলার টরকি (সুন্দরদী) এলাকা থেকে প্রতারক চিকিৎসককে আটক করেছে। এ ঘটনায় রাতেই গৌরনদী মডের থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. প্লাবন হালদার ও গৌরনদী মডেল থানার পুলিশ । প্রতারক ভূয়া চিকিৎসক ফিরোজ আহমেদের বাড়ি পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি গ্রামে। তিনি (প্রতারক ফিরোজ) প্রকুত চিকিৎসক ইউরোলজি ও জেনারেল সার্জন ‘ডা. মো. আমিরুল ইসলাম’ নাম ও তার বিএমডিসি নম্বর ব্যবহার করে নিজেকে পরিচয় দিয়ে গৌরনদীতে চিকিৎসার নামে দীর্ঘদিন প্রতারনা করে আসছেন। এই ভুয়া চিকিৎসক বরিশালের বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ সার্জারি পর্যন্ত করে আসছিলেন। ভুয়া চিকিৎসক বিএমডিসির যে রেজিস্ট্রেশন নম্বর (২৮৭৩৫) নিজের পরিচয় দিতেন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইউরোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আমিরুল ইসলাম । অথচ এই নাম ব্যবহার করে ফিরোজ দীর্ঘদিন ধরে রোগীর জীবন বাজি রেখে অপারেশন চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফিরোজ অন্যের সনদ ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখা, অপারেশন করা এবং সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করার কথা স্বীকার করেছে।
প্রতারণার এই ঘটনায় এলাকাজুড়ে তীব্র ক্ষোভের পাশাপাশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয় রফিকুল ইসলাম (৩৪), তানভীর আহম্মেদ (২৬) ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মানুষের জীবন-মরণ নিয়ে এমন ছেলেখেলা করার সাহস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কীভাবে পেল? কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়াই কেবল অর্থের লোভে একজন ভুয়া সার্জনকে অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশাধিকার দেওয়ায় তাদের উদাসীনতা ও দায়িত্বজ্ঞানহীনতা চরম ক্ষমার অযোগ্য!। আমরা ভূয়া চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি চাই।


