গৌরনদী
গৌরনদীতে বাল্য বিয়ে ভেঙ্গে দিলে সহকারী কমিশনার (ভূমি)
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড় দুলালী গ্রামে বৃহস্পতিবার ধুমধাম করে অস্টম শ্রেনীর ছাত্রীর বিয়ের আয়োজন চলছিল। বরযাত্রীসহ প্রায় দুইশত ৫০জন অতিথি আপ্যায়ন শেষ করা হয়। সেই মুহুর্তে সেখানে হাজির হয়ে বাল্য বিয়ে ভেঙ্গে দিলে গৌরনদী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক মোঃ মেহেদী হাসান। এ সময় উভয় পক্ষ ৫০ হাজার টাকা জড়িমানা করা হয়।
গৌরনদী ভ্রাম্যমান আদালত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড় দুলালী গ্রামের মোস্তফা খন্দকারের ১৬ বছর বয়সের মেয়ে ও বাউরগাতি জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অস্টম শ্রেনীর ছাত্রীর সাথে সামাজিকভাবে বিয়ে ঠিক হয় একই উপজেলার নলচিড়া গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হারুন মৃধার ছেলে ঢাকার একটি কোম্পানীতে কর্মরত অহেদ হোসেন মৃধার বিয়ে ঠিক হয়। পূর্ব সিদ্বান্ত অনুযায়ি বরপক্ষ বুধবার দুপুরে বরযাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে আসে। এ সময় ধুমধাম করে বরযাত্রী ও গ্রামের দুইশত ৫০ জন অতিথি আপ্যায়ন করানো হয়। আপ্যায়ন শেষে নববধূকে নিয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহুর্তে গোপন সংবাদের বিত্তিতে সেখানে হাজির গৌরনদী ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মেহেদী হাসান।
গৌরনদী উপজেলা মহিলা বিষয়ক দপ্তরের সুপারভাইজার নারায়ন চন্দ্র দে জানান, বাল্যবিয়ের বিষয়টি স্থানীয়দের কাছে জানতে পেরে তাৎক্ষনিক উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান ঘটনাস্থলে ছুঁটে যান। এসময় কনের বাবা তার মেয়ের একটি জন্মসনদ প্রদর্শন করেন। যেটি পাশ্ববর্তী কালকিনি উপজেলার রমজানপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গত মাসের ২৭ আগস্ট উত্তোলন করা হয়েছে। ওই জন্মসনদে তার মেয়ের স্কুলে দেয়া নাম ও বয়স পরিবর্তন করে ১৯ বছর দেখানো হয়েছে। কিন্তু স্কুলের কাগজপত্র যাচাইকালে কনের বয়স ১৬ বছর প্রমানিত হয়। একপর্যায়ে প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে বাল্যবিয়ে আয়োজনের বিষয়টি কনের বাবা ও বর স্বীকার করায় ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের দুইজনকে ২৫ হাজার টাকা করে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসাথে মেয়ের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হবার আগে এ বিয়ে সম্পন্ন করা হবে না মর্মে উভয়ের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নেয়া হয়। পরবর্তীতে বরযাত্রীরা যে যার মতো করে তাদের বাড়িতে চলে গেছেন। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান বলেন, ভূয়া জন্ম নিবন্ধন করা ইউপি সচিব ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি জনস্বার্থে উপজেলা প্রশাসনের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।


