গৌরনদী
ভিজিডি কর্মসূচী ॥ গৌরনদীর বার্থী ইউনিয়নে তিন কেজি কমিয়ে রিপ্যাক, ধামাচাপা দেওয়ার
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের অধীনে দুঃস্ত মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচী (ভিজিডি) প্যাক খুলে তিন কেজি কমিয়ে রি-প্যাক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সু-নিদৃষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) ও ভিজিডি উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ মাহবুব অলম কম প্যাকের চাল বিতরন স্থগিত করেছেন।
স্থানীয় লোকজন, সুবিধাভোগী ও সংশ্লিষ্টরা জানান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রানালয়ের অধীনে দুঃস্ত মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচী (ভিজিডি) অধীনে গৌরনদী উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ২ হাজার ১ শত ১১ জন সুবিধাভোগী রয়েছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন যাবত তাদের কাছে অভিযোগ ছিল উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানগন গৌরনদী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগ সাজসে ভিজিডির ৩০ কেজি চালের প্যাক খুলে ২৭ কেজির রি-প্যাক করে নিয়ে সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের একটি সূত্র জানান, দুঃস্ত মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচী (ভিজিডি) সেপ্টেম্বর মাসের চাল বিতরন কার্যক্রম চলছে। আজ শনিবার বার্থী ইউনিয়নের সুবিধাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরনের কথা ছিল। সেই অনুযায়ী বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান প্যাদা গত বৃহস্পতিবার গৌরনদী খাদ্য গুদাম থেকে ৩৫১ জনের প্যাক গ্রহন করে ইউনিয়ন পরিষদের গুদামে রাখেন। স্থানীয় লোকজন ও সুবিধাভোগীরা ভিজিডির প্যাকে তিন কেজি করে চাল কম থাকার বিষয়টি ইউ,এন,ও কে জানান। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি মো. মাহবুব অলম, সদস্য সচিব ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা খানম ও খাদ্য পরিদর্শক অশোক কুমার চেীধুরী বার্থী ইউনিয়ন পরিষদে খাদ্য গুদামে অভিযান পরিচালনা করেন। খাদ্য পরিদর্শক অশোক চৌধুরী বলেন, অভিযান পরিচালনাকালে ভিজিডির চালের প্যাক গুনে পরিমাপ করা হয়। প্যাক ঠিকমত পেলেও ৩৫১ প্যাকে ১ টন শত ৫৩ কেজি কম পাওয়া গেছে অর্থাৎ প্রতিপ্যাকে তিন কেজি চাল কম। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ভিজিডি কমিটির এক সদস্য জানান, গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) ও ভিজিডি উপজেলা কমিটির সভাপতি মোঃ মাহবুব আলম কম প্যাকের চাল জব্দ করে বিতরন স্থগিত করেছেন।
ভিজিডি কমিটির সদস্য সচিব খালেদা খানম বলেন, গুদাম থেকে চাল বুঝে নেওয়ার সময় আমাদের ও সংশ্লিষ্ট ট্যাক অফিসারদের জানানোর কথা থাকলেও চেয়ারম্যানগন আমাদেরকে অবহিত করেন না। তারা নিজেরাই খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার কাছ থেকে বুঝে নেন।
বার্থী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো. শাহজাহান প্যাদার কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে প্যাকে কম থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, গুদাম থেকে চাল গ্রহনের সময় আমার প্রতিনিধি থাকে তারা মূলত প্যাক গুনে গ্রহন করে সেখান মাপ বিবেচ্য বিষয় নয়। উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গুদামের মধ্যে রিপ্যাক করে আমাদেরকে সরবারহ করে থাকে। রি-প্যাক ও মাপে কম দেওয়ার সঙ্গে খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জড়িত।
এ ব্যাপারে গৌরনদী খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) মিনার কান্তি বৈদ্য অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান প্যাদা নিজে উপস্থিত থেকে চাল পরিমাপ করে স্বাক্ষর করে বুঝে নেন। গুদামের বাহিরে কি হয়েছে সে দায় আমার নয়। বার্থী ইউনিয়ন ট্যাক কর্মকর্তা ও গৌরনদী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, আমি ছুটিতে থাকায় বিষয় সম্পর্কে অবগত নই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউ,এন,ও) ও উপজেলা ভিজিডি কমিটির সভাপতি মো. মাহবুব আলম বলেন, মাপে কম থাকা বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, প্যাক সম্পর্কে গুদাম কর্মকর্তার অবহেলা প্রতিয়মান হচ্ছে। এ ব্যপারে তাদের আরো শতর্ক হতে হবে।