গৌরনদী
গৌরনদীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেওয়ায় সদস্যদের উপর হামলা, আহত-৪
নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের গৌরনদীর নলচিড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গৌরনদী উপজেলা আওয়ামীলগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক গোলাম হাফিজ মৃধার বিরুদ্ধে পরিষদের ১১ ইউপি সদস্য আত্মসাত, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম , সরকার নির্ধারিত বেতন ভাতা থেকে ইউপি সদস্যদের বঞ্চিত করা, দুর্নীতির মাধ্যমে বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও ৪০দিনের কর্মসূচীর টাকার আত্মসাতের অভিযোগ এনে গত ২৮ এপ্রিল অনাস্থা প্রস্তাব দেন। মঙ্গলবার ইউএনও অফিসে স্বাক্ষী দিতে আসায় চেয়ারম্যানের ভাড়াটে বিএনপি নেতাকর্মিরা হামলা চালিয়ে ৪ সদস্যকে জখম করেছে বলে ইউপি সদস্যরা অভিযোগ করেন। এ সময় ইউএনও কার্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রবের কক্ষ আসবাবপত্র ভাঙচুর ও তছনছ করেছে হামলাকারীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী, আহত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছ, ইউপি সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত করতে গৌরনদী উপজেলা ইউএনও মঙ্গলবার সকালে ১১ সদস্যদের সাক্ষাৎকার দেওয়ার জন্য তার কার্যালয়ে ডাকেন। এ সময় চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধার সমর্থকরা হামলা চালায়। ইউপি সদস্যরা জানান. পরিষদের জন্য সরকারি সকল বরাদ্দ ইউপি চেয়ারম্যান এককভাবে আত্মসাত, স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম , সরকার নির্ধারিত বেতন ভাতা থেকে ইউপি সদস্যদের বঞ্চিত করা, দুর্নীতির মাধ্যমে বরাদ্দকৃত টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও ৪০দিনের কর্মসূচীর টাকার আত্মসাত করে আসছিল। এসব অভিযোগে নলচিড়া ইউনয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হাফিজ মৃধার বিরুদ্ধে পরিষদের সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১১ জন ইউপি সদস্য স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৯ ধারার বিধান মতে অনান্থা দেন। মঙ্গলবার ইউএনও ডাকে তার কার্যালয়ে স্বাক্ষী দিতে আসলে চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা গোলাম হাফিজ মৃধার ভাড়াটে লোকজন হামলা চালান।
৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইসমাইল হোসেন হীরা অভিযোগ করে বলেন, আমরা স্বাক্ষী দিতে আসলে চেয়ারম্যানের ভাড়াটে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক গাজী আবু বকর ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফুয়াদ হোসেনের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী আমাদের উপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আমাকে ও ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য মামুন খলিফাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে এবং আপর দুই ইউপি সদস্যকে মারধর করে। আমরা আত্ম রক্ষায় ইউএনও অফিস সহকারী আব্দুর রবের কক্ষে আশ্রয় নিলে সেখানে পুনরায় হামলা করে অফিস কক্ষ ভাঙচুর ও তছনছ করে।
ইউপি সদস্যদের উপর বিএনপি নেতাদের দিয়ে হামলা করানোর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান গোলাম হাফিজ মৃধা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত না। হামলার ঘটনা আমি পরিষদে বসে শুনেছি। অভিয়োগ সম্পর্কে জানতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক গাজী আবু বকর অভিযোগ অস্বীকার করে আমি হামলার সঙ্গে জড়িত না। তবে হামলার সময় আমি মেম্বরদের রক্ষার চেষ্টা করেছি। উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব ফুয়াদ হোসেন বলেন, আমার উপর যেই মেম্বররা হামলা করেছি আমি তাদের উপর হামলা করেছি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিফাত আরা মৌরি বলেন, আমি দাপ্তরিক কাজে উপজেলা পরিষদের বাহিরে ছিলাম। হামলার ঘটনা শুনে তাৎক্ষণিক উপজেলা পরিষদে আসার পরে বিষয়টি শুনে পুলিশ খবর দিলে হামলাকারী দুর্বৃত্তরা উপজেলা পরিষদ ত্যাগ করে চলে যান। বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গৌরনদী মডেল থানার ওসি মোঃ ইউনুস মিয়া বলেন, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনা য়জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্ল্যে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা দেওয়া ইউপি সদস্যরা হলেন-১ নম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলিম হাওলাদার, ২ নম্বর ওয়ার্ডের আহাদুল ইসলাম, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ইসমাইল হোসেন হীরা, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের এফএম বাবুল হোসেন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মামুন খলিফা, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শহিদুল ইসলাম খান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মো. গিয়াস খান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলাউদ্দিন মীর, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মাসুদুল ইসলাম, সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের রেহানা বেগম ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আলেয়া বেগম।