গৌরনদী
আগৈলঝাড়ায় জামাতার কাছে পাওনা টাকার জন্য বৃদ্ধ শ্বশুরকে নির্যাতন
নিজস্ব প্রতিবেদক, গৌরনদী২৪ ডটকম ঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের জবসান গ্রামে গত শুক্রবার রাতে মেয়ে জামাতার কাছে পাওনা টাকা আদায় করতে বৃদ্ধ শ্বশুরকে আম গাছে বেধে শারীরিক নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার রাতেই স্থানীয়রা আহত অবস্থায় বৃদ্ধ শ্বশুরকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
স্থানীয় লোকজন ও আহতর স্বজনরা জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের যবসান গ্রামের মো. হাবিব সিকদার তার কন্যা বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার আমতলী গ্রামের মো. অলতাফ হোসেনের পুত্র হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে ২০/২২ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর পরই হাবিব সিকদারের কন্যা ও হারুন অর রশিদের স্ত্রী সালমা বেগম (৩৮) জর্ডান চলে যান। স্ত্রী বিদেশে যাওয়ার পরে স্বামী হারুন অর রশিদ আগৈলঝাড়ার যবসান ও আমতলীতে অবস্থান করেন।
এলাকাবাসী জানান, স্ত্রী জর্ডানে থাকার সুবাদে হারুন অর রশিদ শ্বশুর বাড়ি যবসেন এলাকার ৭-৮জনের কাছ থেকে বিদেশে নেয়ার কথা বলে প্রায় দশ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। পরবর্তিতে পাওনাদাররা তাদের টাকা ফেরত পেতে শ্বশুর হাবিব সিকদারের উপর চাপ সৃষ্টি করে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় আগৈলঝাড়ার যবসেন যুব ক্লাবে গ্র্যাম্য মাতবর সুন্দর আলীর সভাপতিত্বে এক শালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। শালিস বৈঠকে সিদ্বান্তে পাওনাদাররা হাবিব সিকদারের কাছ থেকে জোর পূর্বক সাদা ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর আদায়ের চেষ্টা করে। সুন্দর আলী সাদা ষ্টাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন। হাবিব সিকদার জানান, তার জামাতা টাকা নিয়ে থাকলে সে দায়দায়িত্ব জামাতার সেজন্য তিনি সাদা ষ্টাম্পে স্বাক্ষর দিকে অস্বীকার করেন। পরে সালিসগন সিদ্বান্ত চাপিয়ে দিয়ে জামাতা হারুন-অর-রশিদের নেওয়া টাকা তিনদিনের মধ্যে পরিশোধ করে দেওয়ার সিদ্বান্ত দেন।
বৃদ্ধ হাবিব সিকদার (৬৫) অভিযোগ করেন, শুক্রবার রাত ৯টায় যবসান জামে মসজিদে নামাজ পরে বের হয়ে নিজ বাড়ি রওয়ানা হলে যবসান গ্রামের হালিম পাইক, পলাশ পাইক, লোকমান সিকদার ও মাসুম সিকদার তার পথরোধ করে তাকে গালিগালাজ করে সে প্রতিবাদ করলে তাকে নাজেহাল করেন। একপর্যায়ে তাকে টেনে হেচরে একটি আম গাছের সাথে রশি দিয়ে বেধে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। বাকাল ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. সরোয়ার হোসেন জানান, বৃদ্ধকে নির্যাতন করার খবর পেয়ে তিনি তার স্ত্রী মুকুল বেগম ছোট ভাই ফজলু সিকদার বৃদ্ধ হাবিবকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে হামলাকারীরা তাদের তিনজনকে মারধর করে। পরে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে আহত হাবিব সিকদারকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আহত হাবিব সিকদারের কন্যা হেলেনা বেগম(৩০) অভিযোগ করে বলেন, বাবার উপর হামলাকারী সন্ত্রাসীরা এই মর্মে হুমকি দিচ্ছে যে, টাকা না দিলে আমার ভাগ্নি (হারুনের কন্যা ) আগৈলঝাড়া গালর্স হাইস্কুলের দশম শ্রেনির ছাত্রী সুমিকে এসিডে ঝলসে দিবে। বৃদ্ধকে মারধর করা ও হুমকির অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে হালিম পাইক, পলাশ পাইক, লোকমান সিকদার ও মাসুম সিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা াভিযোগ করেছে, পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়েছে। টাকা না দিতেই মিথ্যাচার চালাচ্ছে। আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, এখনো অভিযোগ পাইনি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।