বরিশাল
আগৈলঝাড়ায় শ্বশুর শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে পূত্রবধূসহ তিনজনকে পিটিয়ে জখম করার অভিযোগে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিন চাঁদত্রিশিরা গ্রামে শ্বশুর শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে নববধূ, কলেজ ছাত্রী ও তার দুই আত্মীয়কে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত তিনজনকে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় নির্যাতিত নববধূ লিলি মন্ডল বাদি হয়ে স্বামী, শ্বশুর ও শ্বশুড়িকে আসামি করে আগৈলঝাড়া থানায় শুক্রবার একটি মামলা দায়ের করেছে।
স্থানীয় লোকজন ও নির্যাতিতার পরিবার ও পুলিশ জানান, ২০২২ সালের শেষের দিকে আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের দক্ষিন চাঁদত্রিশিরা গ্রামের সুবোধ মন্ডলের কন্যা ও শশীকর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী লিলি মন্ডলের (১৮) সাথে পরিচয় হয় একই উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামের তাপস হালদারের ছেলে সৌভিক হালদারের (২০)। মুঠোফোনে কথা বলার পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ২০২৩ সালের ১লা ফেব্রæয়ারী প্রেমিক যুগল পালিয়ে গিয়ে ঢাকা গেÐারিয়া শ্রীশ্রী শিব মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করে। পরবর্তিতে ৭ই এপ্রিল বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেড আদালতের মাধ্যমে আইনগতভাবে পুনরায় বিয়ে করে। বিয়ের পরে গত এক বছর তিন মাস প্রেমিক দম্পত্তি স্বামী স্ত্রী হিসেবে বসবাস করেন। লিলির স্বামী সৌভিক হালদারের (২৫) বাবা তাপস হালদার ও মা নিতু রানী হালদার বিষয়টি জানান পরে ক্ষুব্ধ হন এবং স্ত্রী লিলির সাথে ছেলে সৌভিক হালদারের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।
কলেজ ছাত্রী গৃহবধূ লিলি মন্ডল (১৮) অভিযোগ করে বলেন, গত দেড়মাস যাবত স্বামী সৌভিক হালদার আমার সম্পর্ন যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ২৭ জুন সকালে আমি, আমার মা ববিতা হালদার ও প্রতিবেশী সুর্বনা হালদারকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি পশ্চিম সুজনকাঠী গ্রামের বাড়িতে যাই। এ সময় ঘরে উঠার সঙ্গে স্বামী সৌভিক হালদার, শ্বশুর তাপস হালদার (৫০)ও শ্বশুড়ি নিতু রানী হালদার (৪৫) আমার উপর চড়াও হয়ে অকত্য ভাষায় গালিগালাজ করে এক পর্যায়ে তিনজনে আমাকে কিল ঘুষি, চড়-ধাপ্পর ও লাথি দিয়ে মাটিতে পেলে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এ সময় আমার মা ববিতা হালদার ও প্রতিবেশী সুর্বনা হালদার আমাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে তাদেরকে পিটিয়ে জখম করেছে। আমাদের কান্নাকাটি শুনে গ্রামের লোকজন এগিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
অভিযোগের ব্যাপারে স্বামী সৌভিক মন্ডলের কাছে জানতে চাইলে বলেন, লিলি মন্ডলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠলে আমরা পরিবারের অমতে বিয়ে করেছি। যা আমার মা বাবা মেনে নিয়েনি। বৃহস্পতিবার অঅমার স্ত্রী বাড়িতে আসলে বাবা মা তাকে টেনেহেচরে ঘর থেকে বের করে দিতে চেষ্টা করে না যাওয়ায় মারধরের ঘটনা ঘটেছে। তবে আমার বিরুদ্ধে মামধরের অভিযোগ সঠিক না। আগৈলঝাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কলেজ ছাত্রী লিলি মন্ডল বাদি হয়ে স্বামী সৌভিক হালদার, শ্বশুর তাপস হালদার ও শ্বশুড়ি নিতু রানী হালদারকে আসামি করে শুক্রবার আগৈলঝাড়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলার তদন্ত সাপেক্ষে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।