গৌরনদী
উজিরপুরে শিশু কন্যাকে ধর্ষনের পর হত্যার ঘটনায় একই পরিবাররের ৫জনকে আসামি করে মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের উজিরপুর পৌর সদরের মাদার্শি মহল্লায় বেড়াতে এসে খালাতো ভাইর হাতে ধর্ষনের পর হত্যার শিকার হন পাশ্ববর্তি বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্রী তামান্না আক্তার (১০)। এ ঘটনায় নিহতের মা তানজিলা বেগম বাদি হয়ে ফুফাতো বোন, ভগ্নপতি, ভাগ্নে ও ভাগ্নিসহ ৫ জনকে আসামি করে সোমবার বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতে একটি ধর্ষন করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক মোঃ ইয়া রব হোসেন অভিযোগ আমলে নিয়ে উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ দেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর গ্রামের আমির ফকিরের মেয়ে ও আগরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্রী তামান্না আক্তার (১০) মঙ্গলবার (৩ মে) পাশ্ববর্তি বরিশালের উজিরপুর পৌর সদরের ৪নং ওয়ার্ডের মাদার্শি মহল্লার ফুফাতো খালু সুলতান ফকিরের বাড়িতে বেড়াতে যায়। পরের দিন ৪ মে শিশু কন্যা তামান্নাকে একা বাড়িতে রেখে খালু সুলতান ফকির, খালা তানজিলা বেগম স্থানীয় বাজারে যান।
এজাহারে বাদি বলেন, ওই দিন ৪ মে সকাল ১১টার দিকে আমার ভাগ্নে মোঃ তাওহীদ হাওলাদার (৩০) বাড়িতে এসে মেয়ে তামান্নাকে বাড়িতে একা পেয়ে বসত ঘরের মধ্যে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষন করে । মেয়ে কান্নাকাটি করলে বিষয়টি জানাজানি হওয়ার ভয়ে ভাগ্নে তাওহীত আনুমানিক দুপুর ১২টার দিকে এক পর্যায়ে মেয়ে তামান্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। আমার ভগ্নিপতি সুলতান ফকির (৫০), বোন তানজিলা বেগম (৪৪) বাড়িতে আসার পরে বিষয়টি জানতে পেরে তারা ছেলে তাওহীদ হাওলাদার (৩০) কন্যা সুমি আক্তার (৩৫) ও শিমু আক্তার (৩৩) পরামর্শ করে ধর্ষনের পর হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে গলায় ওড়না পেচিয়ে বাড়ির বিল্ডিং এর চিলা কোটার টিনের চালের আড়ার সঙ্গে লাশ ঝুলিয়ে রাখে এবং মেয়ে তামান্না আত্মহত্যা করেছে বলে আমাকে মুঠোফোনে জানান। কিন্তু ওই বাড়ির লোকজন আমাকে মুঠোফোনে তামান্নাকে ধর্ষনের পর হত্যার সত্যি ঘটনাটি জানান। খবর পেয়ে আমি উজিরপুর এসে পুলিশকে খবর দিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। উজিরপুর মডেল থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিলে আদালতে মামলা করি। আদালতে পেশকার মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্সনের পর হত্যা মামলাটি এফআইআর করার জন্য উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে প্রধান আসামি তাওহীদ হাওলাদারের মুঠোফোনে কল করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। সুলতান ফকিরের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। বাড়ির লোকজন জানান মামলা দায়েরের খবর পেয়ে পরিবারের সবাই গা ঢাকা দিয়েছে। উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ তৌহীদুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর লাশ উদ্ধার করে সুরাতহাল রিপোর্ট তৈরী করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তখনই পুলিশের সন্দেহ ছিল কন্যা শিশুটিকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। আদালতের নির্দেশ হাতে পেলে বিচারকের নির্দেশনা মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।