বরিশাল
আগৈলঝাড়ায় এনজিওর কিস্তির টাকা দিতে না পারায় শিশু-শ্বাশুরিসহ গৃহবধূ গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) আগৈলঝাড়া শাখা থেকে ঋৃন নিয়ে কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বরিশালের আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ শুক্রবার গভীর রাতে দুগ্ধপোষ্য শিশু-শ্বাশুড়িসহ এক গৃহবধূকে গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার বৃদ্ধ শ্বাশুড়িকে ছেড়ে দিলেও শিশুসহ গৃহবধূকে আদালতের সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্বজনসহ এলাকাবাসি।
ভূক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা ইউনিয়নের তালতারমাঠ গ্রামের শ্যামল হালদারের স্ত্রী নুপুর মধু (২৬) বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) আগৈলঝাড়া শাখা থেকে ( কালুরপাড়) এক বছর পূর্বে ৪০ হাজার টাকা ঋন উত্তোলন করেন। ইতোমধ্যে নুপুর মধু ২৩ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। আর্থিক অনাটনের কারনে কিছুদিন যাবত নিয়মিত এনজিওর ঋৃনের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে পারেন নাই।
নুপুর মধু অভিযোগ করে বলেন, ঋনের টাকার অর্ধেকের চেয়ে বেশী পরিশোধ করলেও ১৭ হাজার টাকার কিস্তির পাওনা ছিল। আর্থিক সংকটের কারনে কিছুদিন যাবত কিস্তির টাকা দিতে পারি নাই। এ ঘটনায় বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) আগৈলঝাড়া শাখার পক্ষ থেকে আমার বিরুদ্ধে সম্প্রতি মামলা করলে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলা করার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। শুক্রবার গভীর রাতে (আনুমানিক রাত পোনে ১টা) আগৈলঝাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ আমার বাড়িতে গিয়ে দুগ্ধপোষ্য শিশু কৌশিক হাওলদারসহ আমাকে ও আমার শ্বাশুড়ি বৃদ্ধা শ্রীমতি হালদারকে (৫৮) গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসেন। এই ত্রীব শীতে শিশুসহ আমাদের হাজতে থাকতে অনেক কষ্টে থাকতে হয়। এমনকি কোন মহিলা পুলিশ ছাড়াই আমাদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার পুলিশ দুগ্ধপোষ্য শিশু কৌশিক হাওলদারসহ নুপুর মধুকে বরিশাল আদালতে সোপর্দ করেছে। স্থানীয় লোকজন ও স্বজনরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নুপুর মধুর নামে ওয়ারেন্ট আছে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারে কিন্তু বৃদ্ধ শ্বাশুড়িকে কেন এই শীতের রাতে হয়রানী করতে থানায় নিয়ে এসে আটকে রাখা হল। দুগ্ধপোষ্য শিশু থাকায় মানবিক কারনে নুপুরকে গ্রেপ্তার না করেও পুলিশ তাকে আদালতে হাজির হতে বলতে পারত।
অভিযোগ সম্পর্কে বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট সোসাইটি (বিডিএস) আগৈলঝাড়া শাখার কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। তবে বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট সোসাইটির (বিডিএস) নির্বাহী পরিচালক এস. এইচ. কবির ওরফে বাদল বলেন, টাকা পরিশোধ না করলে মামলা হবে এটাই স্বাভাবিক। নুপুর মধুর ঘটনা সম্পর্কে আমি অবহিত নই বা কেউ অভিযোগ করে করেনি। আগৈলঝাড়া থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আমিরুল ইসলামের কাছে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি বলেন, আদালতের গ্রেপ্তারী পরোয়ানা থাকায় আমরা নুপুর মধুকে গ্রেপ্তার করেছি। আমরা সঙ্গে মহিলা পুলিশ নিয়ে না যাওয়ায় নুপুর মধুর সাথে তার শ্বাশুরী শ্রীমতি হালদারকে নিয়ে আসি। শনিবার সকালে শ্রীমতি হালদারকে ছেড়ে দিয়ে নুপুর মধুকে সন্তানসহ আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। আগৈলঝাড়া থানার র্ভারপাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলম চাঁদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ওয়ারেন্ট থাকার কারনেই নুপুর মধুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার ছোট শিশুকে রাখার জন্য শ্বাশুড়ি শ্রীমতি হালদারকে থানায় আনা হয়। যেহেতু নুপুর মধূ বাচ্চাকে ছাড়া বরিশাল আদালতে যেতে রাজি হননি সেহেতু বাচ্চাসহই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।