বরিশাল
জিডি করেও হামলা থেকে রক্ষা পাননি হত্যা মামলার বাদি, পিটিয়ে জখম
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের মধ্যবাকাল গ্রামে আলোচিত দেব প্রসাদ কর্মকার হত্যা মামলার বাদিকে মামলা তুলে নিতে অপহরনসহ প্রাননাশের হুমকি দিয়ে আসছিল আসামিরা। এ ঘটনায় সোমবার রাতে বাদি আগৈলঝাড়া থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারন ডায়রী করেন। মঙ্গলবার সকালে হত্যা মামলার আসামিরা বাদির বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাদি ও নিহতের কন্যা এলিজাবেথ কর্মকারকে ধরে নিয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহতকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী সাবানা মজুমদার (৪২) অভিযোগ করেন, বিরোধপূর্ন জমি সরকারিভাবে আমাদেরকে লিজ দেওয়া হয়। ওই লিজভূক্ত জমি আমাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য আগৈলঝাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে ইমামা বানিন গত ২০ নভেম্বর তার দপ্তরে হাজির হতে বললে ওই দিন সকালে আমি ও আমার মেয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে আসি এবং ভূমি অফিসে যাই। ভূমি অফিসের কর্মকর্তারা জমি পরিমাপ করার জন্য মাঠ পর্যায়ে গেলে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী, হত্যা মামলার আসামি ফিরোজ ভাট্রি (৩৫) তার দলবল নিয়ে হাজির হয়ে আমাকে ও মেয়েকে মারধর করে এবং মেয়েকে অপহরন করে তার বাবার মত হত্যার হুমকি দেন। হুমকির ঘটনায় ২০ নভেম্বর রাতে মেয়ে এলিজাবেথ জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আগৈলঝাড়া থানায় একটি সাধারন ডায়রী করেন।
নিহতের কন্যা ও হত্যা মামলার বাদি সাধারন ডায়রীতে বলেন, বাবাকে হত্যা মামলা তুলে নিতে আসামিরা বিভিন্ন সময় আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল তারই ধারাবাহিকতায় ২০ নভেম্বর বিকেলে আসামিরা আমার বসত বাড়িতে এসে বাবা দেব প্রসাদ কর্মকার হত্যা মামলা তুলে নিতে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায় এবং মামলা তুলে না নিলে অপহরন করে প্রাননাশের হুমকি দেন। বাদি এলিজাবেথ কর্মকার অভিযোগ করে বলেন, মঙ্গলবার সকালে আসামি ফিরোজের নেতৃত্বে রাজ্জাক খান, নাগর খানসহ ৬/৭ জন সন্ত্রাসী দেশীয় ধারাল অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা করে আমাকে অপহরন করে নিয়ে যায়। এ সময় মা সাবানা মজুমদার প্রতিবেশী লিমা আক্তার আমাকে রক্ষায় এগিয়ে আসলে তাদের মারধর করে । পরবর্তিতে গামছা দিয়ে আমার চোখ বেধে একটি বাড়িতে নিয়ে কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক শ্লীলতাহানি ও মারধর করে রক্তাক্ত জখম করেছে। নিহতের স্ত্রী সাবানা মজুমদার (৪২) অভিযোগ করে বলেন, মেয়েকে অপহরনের পর আমি ৯৯৯ ফোন দিলে আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু ইউসুফ একদল পুলিশ নিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
অভিযোগের ব্যপারে জানতে চাইলে ফিরোজ ভাট্রি অপহরনের কথা অস্বীকার করে বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে হামলা পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আমরাও আহত হয়েছি। বাদিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু ইউসুফ বলেন, অপহরনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম তবে এ ব্যাপারে আমি কোন বক্তব্য দিবো না। ওসি স্যার বক্তব্য দিবেন। আগৈলঝাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আলম চাদ বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এবং উভয় পক্ষ আহত রয়েছে। অপহরনের অভিযোগ সঠিক নয়।