গৌরনদী
গৌরনদীতে কাভার্ট ভ্যানে আগুন, বিএনপির ৭০ নেতাকর্মির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার-১
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ অবরোধের প্রথম দিনে বুধবার দিবাগত রাতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর কবি বাড়ির দক্ষিন পাশে একটি কাভার্ট ভ্যানে আগুন দিয়ে সম্পূর্ন ভস্মিভূত করা হয়। এতে চালকসহ দুইজন আহত হন। এ ঘটনায় গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয় যুবলীগের সাধারন সম্পাদক রেমন তালুকদার ওরফে কালু বাদি হয়ে ৩৫ জন শীর্ষ বিএনপি নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫ জন বিএনপি নেতাকর্মিকে আসামি করে শুক্রবার থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। শুক্রবার মামলার আসামি উপজেলার সরিকল এলাকা থেকে মিরাজ হোসেন নামে এক বিএনপি কর্মিকে গ্রেপ্তার করেছে।
মামলার আসামিরা হলেন, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সৈয়দ সরোয়ার আলম, সদস্যসচিব জহির সাজ্জাদ হান্নান, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদিউজ্জামান মিন্টু, যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বাদল, পৌর বিএনপির আহবায়ক মোঃ জাকির শরীফ, সদস্য ফরিদ মিয়া, বরিশাল উত্তর সদস্য সচিব মিজানুর রহমান, বরিশাল জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সাইদুল আলম সেন্টু, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মিনর হাওলাদার, সদস্য সচিব মনির আকন, ছাত্রদলের উপজেলা আহবায়ক রুবেল গোমস্তা, যুগ্ম আহবায়ক আল আমিন, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মাহতাফ সরদার, যুগ্ম আহবায়ক জুয়েল সরদার, বাটাজোর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আক্তার হোসেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য পান্না সরদার, আহসান হাবিব, সয়ন ফকির, রাজীব হাওলাদ্রা, জনি বেপারী, খলিল হাওলাদার, সাইফুল মীর, মোঃ বিপ্লব, মাকসুদ মৃধা, দেলোয়ার সরদার, মিরাজ খান, মোঃ আতিক, সুমন বেপারী ও হৃদয় বেপারীসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫ জন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মি ।
বরিশাল জেলা উত্তর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও গৌরনদী উপজেলা বিএনপির আহবায়ক সরোয়ার আলম বলেন, আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহনের পর থেকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা-মামলার কারনে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের একটি নেতাকর্মিও এলাকায় থাকতে পারে না। এমন কি আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিএনপি নেতাকর্মির বাড়িতে হামলা করে নেতাদের না পেয়ে পরিবার পরিজনকে পিটিয়ে আহত করে এলাকা ছাড়া করেছে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নিজেরা ঘটনা ঘটিয়ে এবং মিথ্যা সাজিয়ে মামলা দিয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ নির্বাচনে নৌকা বিজয়ী করেছে সেই ধারাবাহিকতায় আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্কালে বিএনপি নেতাকর্মিদের মিথ্যা মামলা দিয়ে দুরে সরিয়ে রেখে এক তরফা নির্বাচন করতেই এ মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে গৌরনদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এইচ. এম জয়নাল আবেদীন বলেন, বিএনপির অভিযোগের কোন সত্যতা নাই, বিএনপি আগুন সন্ত্রাসীর একটি দল, জনগনের পুড়িয়ে মারাই তাদের কাজ। বিএনপি সন্ত্রাসীরা অতীতেও এ ঘটনা ঘটিয়েছে এবারে সরকারকে বিব্রত করতে একই পথে হাটছে।
মামলার বাদি গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর ইউনিয় যুবলীগের সাধারন সম্পাদক রেমন তালুকদার ওরফে কালু এজাহারে উল্লেখ করেন, বরিশাল থেকে বেঙ্গল বিস্কুট ভর্তি করে সিলেটের উদ্দেশ্যে কাভার্ড (ঢাকা মেট্রো-ট ১৩-৩২৪৫) চালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বুধবার রাত সোয়া ১০টা রওয়ানা দিয়ে রাত ১১টায় মহাসড়কের গৌরনদীর বাটাজোর কবি বাড়ির দক্ষিন পাশে পৌছলে আকস্মীকভাবে মহাসড়কে বিশাল একটি গাছের গুড়ি ফেলে ৬/৭ ব্যক্তি গাড়ির গতি রোধ করে। এ সময় চালক গাড়ি ব্রেক করার সঙ্গে সঙ্গে দুইজন গাড়ি ভাংচুর করে এবং দুইজন গাড়িতে পেট্রোল দিয়ে আগুন দেয়। চালক প্রান রক্ষায় দরজা খুলে বের হতে চাইলে দুই জন এসে তাকে গাড়ি থেকে নামতে বাধা দিয়ে বলে তোরেসহ আগুনে পুড়িয়ে মারা হবে। যখন আগুন চালকের কাছাকাছি এসে তখন জীবনের ঝুকি নিয়ে সে ও সহকারী আহাদ হোসেন (২৩) জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে নিচে পড়ি আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে দুই দুবৃত্ত এসে চালকের শরীরে এক বোতল পেট্রোল ঢেলে দিয়ে আগুন দেয়ার চেষ্টা করে। চালক শরীরে আগুন দেয়ার আগেই দৌড়ে প্রান রক্ষা করেছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন বলেন, নাশকতা সৃষ্টি করে জনমনে ভীত সৃষ্টি ও ক্ষতিসাধন করা কাউকে ছাড় দেয়া হবে। এ ঘটনায় গৌরনদী রেমন তালুকদার ওরফে কালু বাদি হয়ে ৩০ জন শীর্ষ বিএনপি নেতার নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩৫ জন বিএনপি নেতাকর্মিকে আসামি করে শুক্রবার থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেছে। শুক্রবার মামলার আসামি উপজেলার সরিকল এলাকা থেকে মিরাজ হোসেন নামে এক বিএনপি কর্মিকে গ্রেপ্তার করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।